মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
শফিকুল ইসলাম
প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৬ এএম
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বহিষ্কারের পথেই বিএনপি প্রার্থীদের অব্যাহতি কৌশল

উপজেলা নির্বাচন
বহিষ্কারের পথেই বিএনপি প্রার্থীদের অব্যাহতি কৌশল

দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন বিএনপির উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নেতাকর্মী। শুধু প্রথম ধাপেই দলটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অর্ধশতাধিক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। পরের ধাপগুলোর জন্যও আরও অনেকে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এদের অনেকেই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পদধারী। যদিও বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে এখনো অনড় কেন্দ্রীয় বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কেউ নির্বাচনে গেলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। এ অবস্থায় নির্বাচনে যাওয়ার কৌশল হিসেবে অনেক প্রার্থী আগেভাগেই দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার চিন্তা করছেন বলে জানা গেছে।

গতকাল সোমবার ছিল প্রথম ধাপের ১৫২টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন। নির্বাচন কমিশনের তপশিল অনুযায়ী আজ ও আগামীকাল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। ২২ এপ্রিল প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে। ২৩ এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। এই পর্বের ভোট গ্রহণ হবে ৮ মে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির স্থানীয় নেতারা অংশগ্রহণ করেছিলেন। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে প্রথম দিকে অংশ নিলেও ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সব স্থানীয় নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় কুমিল্লার মনিরুল হক সাক্কু, নারায়ণগঞ্জের তৈমুর আলম খন্দকারসহ অনেককে দলীয় পদপদবি থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। সেই থেকে পরবর্তী সময়ে উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বর্জন করে আসছে দলটি।

সরকারবিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি ও মিত্ররা। উপজেলাসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও একই অবস্থান বজায় রেখেছে দলটি।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কালবেলাকে বলেন, ‘আমাদের আগের সিদ্ধান্তই বহাল আছে। এখন পর্যন্ত আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে আমরা যাব না। কারণ তার অধীনে কোনো নির্বাচন কখনো অবাধ সুষ্ঠু হয় না।’

বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, সর্বাত্মক আন্দোলনের কারণে ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে। আর সে পরিস্থিতি বিবেচনা করে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক দিচ্ছে না উপজেলা নির্বাচনে। আন্দোলনে ব্যর্থতার অভিযোগের মধ্যেও উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক না দেওয়ার বিষয়কে বিএনপির ওই নেতারা তাদের সাফল্য হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, সংসদ নির্বাচনে জনগণ ভোট বর্জনের পর উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দেওয়াটা ক্ষমতাসীনদের বড় ধরনের পরাজয়। আওয়ামী লীগও দলীয় প্রতীক না দেওয়ার কারণ হিসেবে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর কথা বলছে।

জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করা নিয়ে বিএনপিতে একাধিক মত রয়েছে। রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মত থাকলেও নির্বাচনে গিয়ে কোনো অর্জন হবে না এমন মতামতও এসেছে। আবার ‘নৌকা’ প্রতীক না থাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দেওয়ার পক্ষে মত দিচ্ছেন দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা। এক্ষেত্রে দলের হাইকমান্ডকে একটি ‘সহনীয় কৌশল’ নির্ধারণ করার আহ্বান জানিয়েছেন তৃণমূলের অনেক নেতা। স্থানীয় পর্যায়ের কোনো নির্বাচনে গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে নীরব থাকার পরামর্শ দিয়েছেন কেউ কেউ। কারণ বহিষ্কার করা হলে অনেকে আওয়ামী লীগে ভিড়ে যেতে পারেন। এতে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে এমনটিও হতে পারে যে, নির্বাচনে গেলে ‘বহিষ্কার’ হবেন এমন আশঙ্কায় সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজে থেকেই ‘অব্যাহতি’ নিয়ে প্রার্থী হবেন, যাতে সংশ্লিষ্ট নেতা দলীয় শাস্তি থেকে বাঁচতে পারেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শেষ পর্যন্ত মাঠের বাস্তবতা বিবেচনায় উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে সিদ্ধান্ত না জানানোর বিষয়কে কৌশল মনে করছেন অনেকে। সেক্ষেত্রে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারেন।

জানতে চাইলে বিএনপির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ কালবেলাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না। কারণ আওয়ামী লীগের আমলে নির্বাচন কেমন হয় তা শুধু দেশবাসী নয়, গোটা বিশ্ববাসী জানে। তার পরও বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব উপজেলা নির্বাচনের বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তা জানানো হবে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঝালকাঠিতে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

মেয়ের শ্বশুর বাড়ি থেকে ফেরার পথে প্রাণ গেল বৃদ্ধার

স্কুল থেকে ফেরার পথে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা

হাসপাতালে অজ্ঞাত নারীর লাশ, বিপাকে কর্তৃপক্ষ

ইসলামপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কৃষকের মৃত্যু

তীব্র তাপদাহে বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনা

ভয়াল ২৯ এপ্রিলের স্মরণে ঢাকাস্থ কক্সবাজার সমিতি

মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় ইঞ্জিনিয়ারের মৃত্যু

মঙ্গলবার কেমন থাকবে আবহাওয়া?

সন্তান প্রসব করাতে গিয়ে নারীর জরায়ু কাটার অভিযোগ

১০

রাজবাড়ীতে বিদ্যুৎস্পর্শে একজনের মৃত্যু

১১

বঙ্গবন্ধু মে দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন

১২

পাবিপ্রবিতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন

১৩

বাজারে গিগাবাইটের এআই পরিচালিত ইন্টেল ১৪ জেনারেশন ল্যাপটপ

১৪

চিকিৎসা শেষে পথেই প্রাণ গেল ৪ জনের

১৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রাকচাপায় কলেজছাত্র নিহত

১৬

উপজেলা নির্বাচনে আ.লীগ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

১৭

এআইইউবিতে সিএস ফেস্ট

১৮

৩ সাংবাদিকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সাইবার মামলা

১৯

উচ্চ শিক্ষায় ফিলিস্তিনের নারী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিচ্ছে আইইউবিএটি

২০
*/ ?>
X