শাহনেওয়াজ খান সুমন
প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৪, ০২:২৯ এএম
আপডেট : ২৬ মে ২০২৪, ১২:৩০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দুই সিটিতে দেড় শতাধিক রাস্তায় চলছে খোঁড়াখুঁড়ি

খুঁড়তে খুঁড়তে ঢাকা অচল

খুঁড়তে খুঁড়তে ঢাকা অচল

ঢাকার কল্যাণপুরের ১৩ নম্বর রাস্তাটি প্রশস্ত করছে উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সেইসঙ্গে চলছে স্যুয়ারেজ লাইনের সংস্কার। দুটি কাজই জনস্বার্থের হলেও উল্টো জনগণের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ রাস্তাটি খোঁড়ার পর এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে প্রায় সাত মাস। এলাকার মানুষের চলাচলে তাই দুর্ভোগের শেষ নেই। কোনো যানবাহন নিয়ে ঢোকার উপায় নেই, হাঁটতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, উন্নয়ন কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ধীরগতির কারণে পুরো কল্যাণপুরে এমন অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে জনভোগান্তি কমানো বা দ্রুত কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের কোনো তৎপরতা চোখে পড়ে না। স্থানীয় কাউন্সিলরের ভাষ্য, আর্থিক দৈন্যের কারণে কাজ শেষ করতে পারেননি ঠিকাদার। আগামী জুনের মধ্যে এটি সম্পন্ন করা হবে।

শুধু কল্যাণপুর নয়, রাজধানীর বেশিরভাগ সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি যেন নগরবাসীর কাছে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষা মৌসুমের শুরুতে দুই সিটির দেড় শতাধিক সড়কে চলছে বিভিন্ন সেবা সংস্থার সমন্বয়হীন খোঁড়াখুঁড়ি। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যানজট ও ভোগান্তি। এপ্রিলের মধ্যে এসব সড়কের কাজ শেষ করার সময় বেঁধে দেওয়া হলেও জরিমানা দিয়েই পার পেয়ে যাচ্ছেন ঠিকাদাররা। দেখা যায়, একটি কাজ শেষ হওয়ার পর যে সড়কটি সুন্দরভাবে পিচ ঢালাই করা হয়েছে, তো পরের মাসেই সেখানে আবার খোঁড়াখুঁড়ি করছে অন্য কোনো সংস্থা। অনেক সড়কের চিত্র দেখে বুঝে ওঠা কঠিন—তা সড়ক, নাকি ভরাট হয়ে যাওয়া খাল।

প্রতি বছর বর্ষা এলেই যেন খোঁড়াখুঁড়ির তোড়জোড় আরও বেড়ে যায়। প্রধান সড়ক থেকে অলিগলিতে শুরু হয় সড়ক ও ড্রেন উন্নয়নের কার্যক্রম। ধুলায় ধূসরিত হয়ে আর কাদাপানি ও জলাবদ্ধতায় যার মূল্য নগরবাসীকে দিতে হয়। সড়ক খনন নীতিমালা হলেও বর্ষায় সড়ক উন্নয়নের নামে খোঁড়াখুঁড়ি থামেনি। নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, ভরা বর্ষায় সড়কগুলো হয়ে উঠবে গলার কাঁটা। যার দায় ঢাকার দুই নগর কর্তৃপক্ষের।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, রাজধানীতে সড়ক খনন ও পুনর্নির্মাণ সমন্বয় করতে রয়েছে দুই সিটির দুটি ওয়ানস্টপ সমন্বয় সেল। সেবা সংস্থাগুলো উন্নয়ন কাজের আগে ওয়ানস্টপ সমন্বয় সেলের কাছে অনুমতি নেয়। শুষ্ক মৌসুম ধরে অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দেওয়া হয় অনুমতি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সর্বশেষ ওয়ানস্টপ সমন্বয় সেলের সভায় তাদের নিজস্ব ৩৪টি সড়কসহ ৮০টি সড়ক খনন ও সংস্কারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ওয়ানস্টপ সমন্বয় সেলের মার্চ মাসের সভায় ৮টি সংস্থাকে ৪৩টি সড়ক খনন ও সংস্কারের অনুমতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ডিএসসিসি তাদের নিজস্ব সড়কের উন্নয়ন ও সংস্কারের কাজও করছে। সবমিলিয়ে দক্ষিণ সিটিতে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে এমন সড়কের সংখ্যা অন্তত ৬০টি। এর মধ্যে ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক কেবল স্থাপনের কাজে খোঁড়াখুঁড়িতে নাভিশ্বাস উঠেছে নগরবাসীর। এ কাজটি গত ৩০ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চীনা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজই শুরু করেছে সে মাসের শেষ দিকে। ওয়ানস্টপ সেল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার তাগিদ দিলেও তাতে ভ্রুক্ষেপ নেই।

‘ঢাকা মহানগরীর সড়ক খনন নীতিমালা-২০১৯’-এ উল্লেখ রয়েছে, ১ মে থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কোনো সড়ক মেরামত, কাটাকাটি বা খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে না; কিন্তু বাস্তবে এ নীতিমালা মানছে না কেউ। এটি কার্যকর করতে সিটি করপোরেশনের ওয়ানস্টপ সেলের ভূমিকাও চোখে পড়ে না। সিটি করপোরেশনের দাবি, সংস্থাগুলো শেষ সময়ে এসে উন্নয়ন কাজের অনুমতি চায়। তাদের ২৩টি শর্তে অনুমতি দেওয়া হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা মানা হয় না। এ কারণে নগরজুড়ে দেখা দেয় দুর্ভোগ ও যানজট।

দুই সিটিতে সময়মতো কাজ শেষ না করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেও কোনো ফল মিলছে না। ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ‘এ বছরে ৩০ এপ্রিলের পর সড়ক খোঁড়াখুঁড়িতে কোনো অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। যতই চাপ আসুক না কেন, এ বিষয়ে আমরা কঠোর থাকব।’

গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা যায়, ড্রেন ও রাস্তা সংস্কারের জন্য ডিএনসিসির দক্ষিণখান ও উত্তরখানের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক কেটে ফেলায় বড় বড় গর্ত হয়েছে। অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়িতে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন কসাইবাড়ি রেলগেট থেকে দক্ষিণখান হয়ে কাঁচকুড়া পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সড়কে যানবাহন চলছে না। হেঁটে চলতেও এলাকাবাসী বিড়ম্বনায় পড়ছেন জলাবদ্ধতায়। সামান্য বৃষ্টিতে সড়কে হাঁটুপানি জমে। পানি আটকে থাকে সপ্তাহ ধরে।

স্থানীয়রা জানান, এপ্রিল থেকে উত্তরা আজমপুর কাঁচাবাজার সড়কে গর্ত করে খুঁড়ে রাখা হয়েছে। সেখানকার সড়কের কাজ শেষ না করেই আবার নতুন করে উত্তরখান মাজার চৌরাস্তায় ৫০ থেকে ৬০ মিটার পাকা রাস্তা কাটা হয়েছে। মাজার চৌরাস্তা থেকে বালুমাঠ সড়কের একাংশ কেটে ফেলায় সেখানে হেঁটে চলাচলের অবস্থাও নেই। গর্তে পড়ে আহত হচ্ছেন অনেকে। গ্রামের রাস্তাও এর চেয়ে বহুগুণ ভালো।

ঢাকায় আসতে-যেতে পোস্তগোলা ও বাবুবাজার সেতু ব্যবহার করেন দক্ষিণবঙ্গের মানুষ। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এ পথে গাড়ির চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। দুই সেতুর মুখ বাবুবাজার এবং টিকাটুলী সড়কে কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন সংস্থার খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। এতে যানজটে নাজেহাল হচ্ছেন যাত্রীরা।

মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে টিকাটুলী মোড় পর্যন্ত ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) ভূগর্ভস্থ কেবল স্থাপনের কাজ চলছে। শাপলা চত্বরের অংশে কাজ শেষে বালুচাপা দিলেও ইত্তেফাক মোড় থেকে টিকাটুলী পর্যন্ত দিনের বেলায় নিয়ম না মেনেই চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। টিকাটুলীর ফুট ওভারব্রিজের পাশের সড়ক এমনিতেই ভাঙাচোরা। তার ওপর সড়কের একদিকে ইট, বালু, সুরকি রেখে ভবন নির্মাণের কাজ চলায় পানি জমে কর্দমাক্ত হয়ে আছে। সড়কের অন্য পাশে ডিপিডিসির খোঁড়া গর্ত। তিন লেনের সড়কের মাঝ দিয়ে একটির বেশি গাড়ি চলার উপায় নেই। আশপাশের গলিপথগুলোতেও সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থা উন্নয়ন কাজ করছে। ফলে খুবই ধীর গতিতে গাড়ি চলায় এ অংশের যানজট গিয়ে ঠেকছে পুরানা পল্টন মোড় পর্যন্ত। সকাল ও সন্ধ্যায় এ জট কাকরাইল মোড় পর্যন্ত চলে যায়।

টিকাটুলী মোড়ের ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান বলেন, ‘তিন মাস ধরে সড়কটি খুঁড়ে রাখা হয়েছে। প্রথমে ওয়াসা কাজ করেছে, এখন করছে ডিপিডিসি। খোঁড়াখুঁড়ি লেগে থাকায় যানজটও লেগে আছে।’

রাজধানীজুড়ে ডিপিডিসির ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক কেবল স্থাপনের কাজ করছে চীনা প্রতিষ্ঠান টিভিইএ। তাদের হয়ে সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করছে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মুন পাওয়ার লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করা হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে রোজার পর কাজ করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়। ঈদের পরে পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে। এ জন্যই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করা যায়নি।’

ডিপিডিসির নির্বাহী প্রকৌশলী তারিকুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘কাজ শুরু করার আগে ওয়ানস্টপ সমন্বয় সেল ছাড়াও ডিএমপি ও অন্যান্য সংস্থার অনুমতি পেতে সময়ক্ষেপণ হয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো ১৩২ কেভির তার মাটির নিচে স্থাপন খুবই চ্যালেঞ্জিং। অনেক সময় ত্রুটির কারণে তার ছিঁড়ে গেলে নতুন করে খুঁড়তে হচ্ছে। আবার সড়ক খোঁড়ার পর দেখা যাচ্ছে, সেখানে ওয়াসা, তিতাসসহ অন্যান্য সংস্থার সার্ভিস লাইন। আবার দিনের বেলা কাজও করা যায় না। মূলত এসব কারণেই দেরি হয়েছে।’

এদিকে বাবুবাজার সেতু থেকে বংশাল আলুবাজার পর্যন্ত প্রধান সড়কের প্রায় দেড় কিলোমিটারজুড়ে ড্রেনেজ নির্মাণকাজ করছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া নির্মাণকাজ আগামী ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। তবে এই ড্রেনেজ নির্মাণকাজটি ঠিকাদার মাত্র ছয় মাস আগে শুরু করেছেন। তিন লেন সড়কটির এক লেনজুড়ে ড্রেন নির্মাণে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। তবে বাকি দুই লেনের মধ্যে শুধু একটি লেনে গাড়ি চলাচল করতে পারছে। দক্ষিণবঙ্গ থেকে ঢাকার প্রবেশমুখে যানজট লেগেই আছে।

ওই এলাকার ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন বলেন, ‘তাঁতীবাজার থেকে বংশাল সড়কে যাতায়াত করার কথা ভাবলেই আঁতকে ওঠেন মানুষ। খোঁড়াখুঁড়ি করে ঢিমেতালে কাজ করছেন ঠিকাদার। দোকানের সামনের সড়কটি খোঁড়া থাকায় লোহার জিনিসপত্র লোড-আনলোডে অনেক সমস্যা হচ্ছে।’

তাঁতীবাজার ট্রাফিক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ছয় মাস ধরে সড়কের একপাশে কাজ চলছে। তিন লেনের মধ্যে মাত্র এক লেন ব্যবহার করা যাচ্ছে। আর এক পাশের গাড়ির চাপ সামলাতে আরেক পাশেও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।’

এ ছাড়া দক্ষিণ সিটির আওতাভুক্ত যাত্রাবাড়ী, রাজারবাগ, শেওড়াপাড়া, মিরপুর-২, মিরপুর-১০, উত্তরখান, দক্ষিণখান, বাড্ডা, গুলশান-তেজগাঁও লিঙ্ক রোড, বাসাবো, খিলগাঁও, ওয়াইজঘাট, সিদ্ধেশ্বরী, জুরাইন, শ্যামপুর, ধানমন্ডি এলাকার সড়কে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলছে।

ডিএসসিসির পরিবেশ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খাইরুল বাকের বলেন, ‘বংশাল এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে বাবুবাজার থেকে বংশাল পর্যন্ত ড্রেনেজ নির্মাণের কাজ চলছে। এ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্মাণকাজের সময় থাকলেও জুলাইয়ের মধ্যে কাজটি শেষ হবে।’

অন্যদিকে মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোড, নূরজাহান রোড, বিজলী মহল্লা, আজিজ মহল্লা, টিক্কাপাড়া, নবোদয় হাউজিং, মোহাম্মদী হাউজিং সোসাইটি, কাটাসুর থেকে জাফরাবাদ হয়ে রায়েরবাজারের গদিগর পর্যন্ত বেশিরভাগ সড়কই খোঁড়াখুঁড়ির কারণে পড়ে আছে বেহাল অবস্থায়।

সরেজমিন দেখা গেছে, রিং রোডের টিক্কাপাড়া ও কাদেরাবাদ এলাকার বেশ কয়েকটি সড়কে নতুন করে শুরু হয়েছে কাটাকাটির কাজ। কিছু সড়কে ফেলা হচ্ছে ইট, বালু, সুরকি। মোহাম্মদপুরের প্রায় প্রতিটি এলাকায় রাস্তাগুলো মাঝ বরাবর সরু করে কাটা। সড়কে একটু পরপর তৈরি হয়েছে গর্ত। পুরো রাস্তা বন্ধ করে বড় বড় পানির পাইপ, রাস্তার এক পাশ কেটে বৈদ্যুতিক লাইন ও ফুটপাতের নিচের নালায় চলছে সংস্কারের কাজ। নূরজাহান রোডে পয়ঃনালা নির্মাণের কাজ শুরু প্রায় চার মাস আগে। এ সড়কের সব কাজ শেষ হয়নি। তাজমহল রোডের এক পাশের ফুটপাতের কাজ শেষে শুরু করা হয়েছে অন্য পাশের নালা সংস্কার।

ডিএনসিসি অঞ্চল-৫-এর নির্বাহী প্রকৌশলী নূরুল আলম বলেন, ‘আমাদের কাজের সেশন মূলত জুলাই থেকে জুন। এই এক বছরের মধ্যেই আমরা সড়ক মেরামত ও অন্যান্য কাজ শেষ করি। বৃষ্টি-বাদলের সমস্যা ও ঠিকাদাররা দেরি করলে অনেক সময় কাজ শেষ হয় না। তবে আমাদের মোটামুটি সব ধরনের কাজই শেষ। জুনের মধ্যে প্রথম লেয়ারের কাজ শেষ হবে।’

বিভিন্ন সড়কে নতুন করে খোঁড়াখুঁড়ির বিষয়ে এ প্রকৌশলী বলেন, টিক্কাপাড়াসহ যেসব এলাকায় নতুন করে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে তার বেশিরভাগই ওয়াসা ও ডিপিডিসির কাজ।

ওয়াসার ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের পরিচালক ওয়াজ উদ্দিন ওয়াজেদ বলেন, ‘ওয়ানস্টপ সমন্বয় সেল আমাদের সর্বশেষ কাজের অনুমতি দিয়েছে ১৫ মার্চের পর। তারা আমাদের একেকটি অংশের কাজ শেষ করতে এক মাস সময় দিয়েছে। কিন্তু আমাদের কাজ শেষ করতে সময় লাগে কমপক্ষে তিন মাস।’

সড়ক খনন নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে খোঁড়াখুঁড়িতে জনগণের যে ভোগান্তি, তা কমত বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘নীতিমালাটি কাগজে-কলমে থাকলেও এর বাস্তবায়ন নেই। আজ পর্যন্ত শুনিনি যে, সড়ক খননে নৈরাজ্য বন্ধে কোনো প্রকল্প পরিচালক বা ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঠিকাদাররা রাজনৈতিক মদদপুষ্ট হওয়ায় তাদের প্রশ্ন করতেও ভয় পায় কর্তৃপক্ষ। এক বর্ষায় খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ রাখা হলে এই বার্তা স্পষ্ট হতো—কেউ চাইলে ফি আর জরিমানা দিয়ে রাস্তা কাটাকাটির যে বিলাসিতা তা সম্ভব নয়। দু-চারজনের শাস্তি হলেই নিয়ম লঙ্ঘন বন্ধ হতে পারে।’

এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খাইরুল আলম বলেন, ‘জনবহুল রাজধানীতে অনেক সংস্থার উন্নয়ন কাজ চলমান। তাদের কাজের পরিধি ও সময়সীমাও ভিন্ন। এসব কাজ সমন্বয় করতে অনেক সময় ওভারল্যাপিং হয়ে থাকে। তার পরও আমাদের জোনের নির্বাহী প্রকৌশলীরা সমন্বয় করে উন্নয়ন কাজ পরিচালনা করছেন।’

ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওয়ানস্টপ সমন্বয় সেলের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন কাজের জন্য সড়ক খননের অনুমতি দেওয়া হয়। সংস্থাগুলো বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে একদম শেষমুহূর্তে এসে সড়ক খোঁড়ার অনুমতি চায়। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে এসে অনেক সংস্থা টাকা জমা দিয়ে কাজ শুরু করতে চাইলেও আমরা অনুমতি দিইনি। এসব কাজ দ্রুত শেষ করতে তাদের নিয়ে সভা করার পাশাপাশি লিখিতভাবে সতর্কও করা হচ্ছে। অনেককে জরিমানাও করা হবে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জানা গেল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে চুলের মুঠি ধরে চড় মারার কারণ

ঘরের ভেতর জামাকাপড় শুকাচ্ছেন? হতে পারে যেসব বিপদ

ডিএমপির সাবেক এডিসি নাজমুল বরখাস্ত

বৈদেশিক কর্মসংস্থানের নতুন প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন

পাথরকাণ্ডে দুদকের তালিকায় সেই মোকাররিম

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ, দেখবেন যেভাবে

‘সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলে সেই মাহিন সরকারসহ প্রার্থী হলেন যারা

জানা গেল আইসিসি র‍্যাঙ্কিং থেকে রোহিত-কোহলির নাম মুছে যাওয়ার কারণ

অনুমতি ছাড়া ছবি-ভিডিও ব্যবহার নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রভা

অভিজ্ঞতা ছাড়াই অর্ধলাখের বেশি বেতনে চাকরির সুযোগ

১০

ডিএমপির বোম ডিসপোজাল ইউনিটের উচ্চতর প্রশিক্ষণ সম্পন্ন

১১

হাসপাতাল পরিচ্ছন্নতা অভিযানে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা

১২

চ্যাটজিপিটির ভুল তথ্যে বিপাকে পড়লেন তরুণী

১৩

ইসলামী আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

১৪

ইউরোপ জাপান কোরিয়ায় শ্রমিক পাঠানো নিয়ে ‘সুখবর’ দিলেন আসিফ নজরুল

১৫

জুলাই সনদের মতামত জমাদানের সময় বাড়ল

১৬

অসুস্থ মেয়ের জন্য ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ হারালেন গাজার সাবেক খেলোয়াড়

১৭

দিল্লিতে মাথায় চুল গজানোর চেষ্টায় ঢাকার সাবেক পলাতক এমপি

১৮

কালিগঞ্জে হিন্দু পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ, পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

১৯

রাকসুর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, মনোনয়ন বিতরণ ২৪ আগস্ট

২০
X