‘চাচা ঝড় কি গেছেনি, কখন যাবে? ফেসবুক কী কয়? আর সহ্য হয় না। রোববার রাত ১২টা থেকে সোমবার বিকাল, এখনও বাতাস চলছে। আর কতক্ষণ?’—এভাবেই একের পর এক প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছিলেন ৮৫ বছরের সিডু ব্যাপারী। তিনি ১৯৭০ সালের ঝড়ে তার মা-বাবাসহ পরিবারের ১৭ সদস্যকে হারিয়েছেন। তার মতে, ১৯৭০ সালের ঝড়টিও এত দীর্ঘসময় ধরে হয়নি। গতকাল সোমবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতীরের নাসিরগঞ্জ বাজারে বসে এসব নিয়ে আলাপ করছিলেন বৃদ্ধ সিডু ব্যাপারী। একই এলাকার বাসিন্দা ৭৫ বছর বয়সী আলী আহম্মদও জানতে চান এই ঝড় আর কতক্ষণ চলবে।
সিডু ব্যাপারী ও আলী আহম্মদ দুজনই জীবনে অসংখ্য ঝড় দেখেছেন। কিন্তু এত দীর্ঘসময় পর্যন্ত কোনো ঝড় হতে দেখেননি তারা। তারা জানান, তারা একই এলাকায় বসে ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, মহাসেন, বুলবুল, আম্ফান, মোখার আঘাত দেখেছেন। প্রতিটি ঝড় গড়ে ৪-৫ ঘণ্টার মধ্যে থেমে গিয়েছিল; কিন্তু রিমাল থামছেই না।
দীর্ঘসময় ধরে চলা এই ঝড় উপকূলীয় এলাকাকে তছনছ করে দিয়েছে। সিডর, আইলার মতো অত শক্তিশালী না হলেও ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে রিমাল। দেশের বেশির ভাগ এলাকায় এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে। আজ মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় এই ঝড়ের প্রভাবে দমকা হাওয়া ও প্রবল বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রোববার রাত দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১১ কিলোমিটার গতিতে বাতাস বয়ে গেছে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায়। বেশি ক্ষয়ক্ষতির কারণ ঝড়টির স্থায়িত্ব। এই ঝড়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে উপকূলের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বাগেরহাট, পিরোজপুর, খুলনা, সাতক্ষীরাসহ উপকূলীয় এলাকার অসংখ্য মাছের ঘের, ফসলি জমি তলিয়ে গেছে পানির নিচে। অসংখ্য বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে, পানিতে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। উপকূলের মানুষের মধ্যে এখন হাহাকার চলছে। অনেক এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে। আড়াই কোটি গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। উপকূলীয় এলাকা এখনো মোবাইল যোগাযোগ নেটওয়ার্কের বাইরে। রোববার রাত থেকেই অনেকে ফোনে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। অন্যদিকে এবারও দেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন ঢাল হয়ে রক্ষা করেছে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকা।
খুলনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরিশালের বিস্তীর্ণ এলাকা এখন পানির নিচে। এসব এলাকার অনেক রাস্তাঘাট ডুবে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। অনেক সড়কে গাছপালা পড়ে চলাচল বন্ধ রয়েছে। মূল সড়কে যোগাযোগ দ্রুত সচল করার চেষ্টা থাকলেও ছোটখাটো সড়কে এখনো গাছপালা পড়ে আছে।
ভোলার জেলা প্রশাসক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, ভোলা থেকে চরফ্যাসনসহ দ্বীপ এলাকাগুলোতে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে। ঝড়ে গাছ পড়ে বিভিন্ন এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর সেগুলো স্বাভাবিক করার কাজ চলছে।
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক জাহেদুর রহমান বলেন, পিরোজপুরের রাস্তাঘাটগুলো বেশিরভাগই পানির নিচে রয়েছে। যে রাস্তাগুলো গাছ পড়ে বন্ধ গেছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিসের প্রচেষ্টায় সেগুলোকে রাস্তা থেকে অপসারণ করা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া। ভেঙে পড়েছে এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। পানির নিচে তলিয়ে গেছে হাতিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। নিঝুম দ্বীপে বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ার ও টানা বর্ষণের পানিতে প্লাবিত হয়ে গেছে দ্বীপের সব কটি গ্রাম। হাতিয়ায় ৫২ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। জেলা শহর হয়ে পড়েছে বিদ্যুৎহীন। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অনেক মানুষ। কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত রিমালের তাণ্ডবে একেবারে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকতটি বঙ্গোপসাগর থেকে ফুঁসে ওঠা জলোচ্ছ্বাসে ডুবে আছে। কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার জানান, কুয়াকাটা সৈকত এখন পর্যন্ত ৬-৭ ফুট পানির নিচে। বলা যায়, সৈকত এলাকা সাগরের সঙ্গে মিশে গেছে।
লন্ডভন্ড হয়েছে খুলনার উপকূলীয় এলাকা। জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, উপকূলীয় তিন উপজেলায় ৫২টি ওয়ার্ডেও প্রায় ৭৭ হাজার ঘড়বাড়ি আংশিক ও সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে চার লাখের বেশি মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গাছচাপায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিন উপজেলার অন্তত দশটি স্থানে বাঁধ ভেঙে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
দাকোপ উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। রোববার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার শিবসা ও ঢাকী নদীর বাঁধ ভেঙে তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের কামিনীবাসিয়া গ্রামের ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা তলিয়ে যায়। পাইকগাছায় ৬টি ইউনিয়নের অন্তত ২০টি স্থানে নদীর বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে প্লাবিত হয়েছে অর্ধশতাধিক গ্রাম, যাতে চিংড়ি ঘেরসহ ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন উপজেলার প্রায় এক লাখ মানুষ। কয়রা উপজেলার তিনটি জায়গার বাঁধ ভেঙে অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ভেসে গেছে শতাধিক চিংড়ির ঘের, ভেঙে গেছে কয়েকশ কাঁচা ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপের চারপাশসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শাহপরীর দ্বীপে পশ্চিম বাঁধের দেড় কিলোমিটার এলাকা। ঝোড়ো বাতাসে উড়ে গেছে দ্বীপ দুটির ৫০০ বাড়িঘর, ভেঙে গেছে অসংখ্য গাছপালা। কুতুবদিয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ প্রায় অর্ধশত কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে।
সীতাকুণ্ডে বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে মহাসড়কে গাছ উপড়ে পড়েছে। এতে মহাসড়কে চট্টগ্রামমুখী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সাতক্ষীরার ৭৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪৩টি ইউনিয়ন কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ১ হাজার ১৯২টি ও সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ২৭৬টি ঘরবাড়ি।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে তাণ্ডব চালাতে চালাতে স্থলভাগে উঠে আসার পর বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে রিমাল, পরিণত হয়েছে গভীর স্থল নিম্নচাপে। রোববার মধ্যরাতে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করে দক্ষিণ থেকে উত্তরের দিকে অগ্রসর হলেও পরদিনও ঝড়ের প্রভাব কমেনি খুলনা ও বরিশালের উপকূলীয় জেলাগুলোতে। ঝড়ের বিপদ কেটে যাওয়ায় বন্দরের জন্য সংকেতও কমিয়ে আনা হয়েছে। পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত নামিয়ে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আর কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
১৪ জনের প্রাণহানি
রোববার দুপুর থেকে গতকাল দুপুরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে জলোচ্ছ্বাসে, ঘর ভেঙে এবং দেয়াল ধসে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঝড় শুরুর আগে রোববার দুপুরে জলোচ্ছ্বাসের সময় পটুয়াখালীতে বোন ও ফুফুকে উদ্ধার করতে গিয়ে পানির তোড়ে ভেসে মারা যান এক যুবক। মো. শরীফ হাওলাদার নামে ২৮ বছর বয়সী ওই যুবক কলাপাড়া উপজেলার ধূলাসর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের অনন্তপাড়া এলাকার আবদুর রহিম হাওলাদারের ছেলে।
ঝড়োবাতাসে গাছ উপড়ে পড়ে পটুয়াখালীর দুমকি ও বাউফলে দুই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। বাউফলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বশির গাজী জানান, উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন স্থানে একটি পরিত্যক্ত ঘরে চাপা পড়ে আবদুল করিম নামে ৬৫ বছর বয়সী একজন মারা যান গতকাল সকালে। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় থেকে বাঁচতে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শওকাত মোড়লের পুত্রবধূ আছমা খাতুন বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে আমার শ্বশুর-শাশুড়ি দুজন মিলেই নাপিতখালী আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন। ঝোড়ো বাতাসে রাস্তায় পড়ে গিয়ে আমার শ্বশুর মারা গেছেন।
ঝড়ের মধ্যে বসতঘরের ওপর গাছ পড়ে খুলনার বটিয়াঘাটায় লাল চাঁদ মোড়ল নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ৩৬ বছর বয়সী লাল চাঁদ বটিয়াঘাটার সুরখালী ইউনিয়নের গাওহড়া গ্রামের মৃত গহর আলী মোড়লের ছেলে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. নাজমুল হুসাইন খান জানিয়েছেন, রোববার রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন লাল চাঁদ। গতকাল সকালে বাড়ি ফিরে যান তিনি। সেখানে গাছচাপা পড়ে মারা যান তিনি।
ভোলার লালমোহন উপজেলায় ঘরের নিচে চাপা পড়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল ভোররাত ৪টার দিকে চর উমেদ ইউনিয়ন পরিষদের চর উমেদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ৫৫ বছর বয়সী মনেজা খাতুন ওই এলাকার আব্দুল কাদেরের স্ত্রী। এ ছাড়া দৌলতখান উপজেলায় গাছচাপা পড়ে মাইশা নামে ৪ বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আর বোরহান উদ্দিন উপজেলায় গাছচাপা পড়ে মারা গেছেন জাহাঙ্গীর নামে ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি।
বরিশালে একটি ভবনের দেয়াল ধসে খাবারের হোটেলে পড়ার পর ওই হোটেলের মালিক ও কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আরিচুল হক জানান, গতকাল ভোর ৪টার দিকে নগরীর রূপাতলী এলাকায় লিলি পেট্রোল পাম্পের পাশে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন লোকমান হোটেলের মালিক লোকমান হোসেন (৫৮) এবং কর্মী মোকলেসুর রহমান (২৮)। চর দাড়িয়াল গ্রামে ঝড়ের মধ্যে বাজারে যাওয়ার পথে গাছের ডাল পড়ে জালাল সিকদার নামে ৫৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
চট্টগ্রাম নগরীতে একটি নির্মাণাধীন ভবনের দেয়াল ধসে পড়ে এক পথচারীর প্রাণ গেছে। গতকাল সকালে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামীর চন্দ্রনগর তালতলার জেডএ আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাইফুল ইসলাম হৃদয় (২৬) থাকতেন খুলশী থানার চৌধুরী নগর শতাব্দী হাউজিং এলাকায়।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রাজধানীতে দিনভর ঝড় ও বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎস্পর্শে গতকাল রাতে খিলগাঁও ও রামপুর থানা এলাকায় দুজনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। তারা হলেন মরিয়ম বেগম (৪৫) ও রাকিব (২৫)। তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
রামপুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়ালিউল্যাহ বলেন, রাত ১১টার দিকে তালতলা এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে রাকিব নামের ওই যুবক মারা যান। তার লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে।
খিলগাঁও থানার ডিউটি অফিসার জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে মেরাদিয়া জামতলা এলাকায় বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তায় এলে মরিয়ম নামের এক নারী বিদ্যুৎস্পর্শে মারা যান।
ক্ষয়ক্ষতির সরকারি হিসাব
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ১৯ জেলার ১০৭টি উপজেলার বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এসব এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৩৭ লাখ ৫৮ হাজারের বেশি। সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে ৩৫ হাজার ৪৮৩টি ঘরবাড়ি। এ ছাড়া আংশিকভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৯২টি ঘরবাড়ি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য ৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি জেলায় নগদ সহায়তার ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, ৫ হাজার ৫০০ টন চাল, ৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, শিশুখাদ্য কেনার জন্য ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং গো-খাদ্য কেনার জন্য ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় সতর্কতার পরিপ্রেক্ষিতে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ৯ হাজার ৪২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্র ও স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৮ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়াসহ আশ্রিত পশুর সংখ্যা ৫২ হাজার ১৪৬টি। এ ছাড়া দুর্গত মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিতে ১ হাজার ৪৭১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।