আব্দুল হামিদ
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৫, ১০:৫৬ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

নবীর যুগে মদিনার ঈদ

নবীর যুগে মদিনার ঈদ

আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর আগে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন। মদিনায় গিয়ে তিনি দেখেন, মদিনায় বসবাসকারী ইহুদিরা শরতের পূর্ণিমায় নওরোজ উৎসব এবং বসন্তের পূর্ণিমায় মেহেরজান উৎসব উদযাপন করছে। তারা এ উৎসবে নানা আয়োজন, আচার-অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন আনন্দ উৎসব করে থাকে। মহানবী (সা.) মুসলমানদের এ দুটি উৎসব পালন করতে নিষেধ করেন। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ তোমাদের ওই উৎসবের বিনিময়ে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতো পবিত্র দুটি দিন দান করেছেন। এতে তোমরা পবিত্রতার সঙ্গে উৎসব পালন করো।

ইসলামের প্রথম ঈদ

মুসলমানরা প্রথম ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়ে দ্বিতীয় হিজরি মোতাবেক ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ বা ৩১ মার্চ। তখনকার দিনে বর্তমান ঈদের মতো নতুন জামাকাপড় কেনাকাটার ধুমধাম ছিল না। তবে আনন্দ-খুশি কম ছিল না। মহানবী (সা.) ঈদের দিন ছোট-বড় সবার আনন্দের প্রতি খেয়াল করতেন। মদিনার ছোট ছোট শিশু-কিশোরের সঙ্গে তিনি আনন্দ করতেন। শরিয়তের অন্তর্ভুক্ত সব আনন্দ করার অনুমতি দিতেন।

মহানবী (সা.)-এর ঈদ

ঈদের দিনে মহানবী (সা.) গোসল করার পর সুগন্ধি ব্যবহার করতেন, সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে উত্তম পোশাক পরতেন। ঈদুল ফিতরে কিছু মিষ্টিদ্রব্য খেতেন। ঈদুল আজহায় কিছু খেতেন না। কোরবানির গোশত দিয়ে দিনের প্রথম আহার সারতেন। ঈদগাহে এক রাস্তা দিয়ে যেতেন, অন্য রাস্তা দিয়ে আসতেন। তিনি ঈদে পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানাতেন। গরিব-দুঃখীদের খোঁজখবর নিতেন। এরপর ঈদগাহে গিয়ে অতিরিক্ত ছয় তাকবিরের সঙ্গে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন। নামাজ শেষ করে খুতবা দিতেন। খুতবায় ঈদের করণীয় কাজ ও গুরুত্ব বিষয় বর্ণনা করতেন।

সাহাবায়ে কেরামের ঈদ

সাহাবায়ে কেরাম সর্বক্ষেত্রে মহানবী (সা.)-এর অনুসরণ করতেন। তারা এ বাক্যের মাধ্যমে ঈদের দিন শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা’ অর্থাৎ মহান আল্লাহ আমাদের ও আপনার ভালো কাজগুলো কবুল করুন। সাহাবায়ে কেরাম মাহে রমজানে গুনাহ মাফ হয়েছে কি না, এ ব্যাপারে বেশি চিন্তিত থাকতেন। তাই ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর ফারুক (রা.) ঈদুল ফিতরের নামাজে ইমামতি করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। তিনি ঘরের দরজা বন্ধ করে বলতে থাকেন, আমার গুনাহ মাফ না হলে আমি ঈদগাহে গিয়ে কীভাবে ইমামতি করতে পারি। ঈদের দিন অনেক দূর থেকে সাহাবায়ে কেরাম ছুটে যেতেন মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য এবং তার পেছনে দুই রাকাত নামাজ পড়ার জন্য।

মহানবী (সা.)-এর মহানুভবতা

পথের শিশুর প্রতি মহানবী (সা.) অত্যন্ত দয়াপরশ ছিলেন। এক ঈদের দিন তিনি রাস্তার পাশে একটি ছেলেকে কাঁদতে দেখে তার কাছে যান। ছেলেটি বলল, তার মা ও বাবা কেউই নেই। মহানবী (সা.) ছেলেটিকে বাড়িতে এনে বললেন, ‘আমি তোমার বাবা আর আয়েশা তোমার মা, ফাতেমা তোমার বোন আর হাসান-হোসাইন তোমার খেলার সঙ্গী।’ তিনি এতিম ছেলেটিকে সন্তানের মর্যাদা দেন। এভাবে মহানবী (সা.) ঈদের দিনটি উদযাপন করতেন।

লেখক: মাদ্রাসা শিক্ষক

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সড়ক দুর্ঘটনায় কাতারের ৩ কূটনীতিক নিহত

যেভাবে ধরা পড়লেন প্রেমিকাকে ‘ধর্ষণ’ করা সেই ২ যুবক

জামায়াতে নামাজ পড়ে বাইসাইকেল উপহার পেল ২৬ শিক্ষার্থী

সেনাবাহিনীকে নিয়ে যা বললেন জামায়াত আমির

যমুনা গ্রুপে বড় নিয়োগ

বিশ্বকাপের সময় পরিবর্তনের ইঙ্গিত

মসজিদে গিয়ে বিপাকে সোনাক্ষী 

মারা গেলেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী ডায়ান কিটন

বিয়ে কবে হতে পারে জানালেন ইশরাকের হবু স্ত্রী

পাকিস্তান-আফগানিস্তান কার সামরিক শক্তি কেমন

১০

চট্টগ্রাম-৭ আসনে জামায়াতের নতুন প্রার্থীর নাম ঘোষণা

১১

পাচারকালে ৩৮০ বস্তা সরকারি চাল জব্দ

১২

গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে এমবাপ্পেকে নিয়ে বড় দুঃসংবাদ

১৩

রোমের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা

১৪

জিসানের মাটিচাপা মরদেহ মিলল প্রতিবেশীর উঠানে

১৫

আশা’র আয়োজনে ‘সাহসী কন্যাদের গল্পকথা’ শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত

১৬

বিশ্বকাপের জন্য ২০ সদস্যের দল ঘোষণা বাংলাদেশের

১৭

ন্যায় ও আদর্শের ভিত্তিতে রাজনীতি করতে হবে : বাবর

১৮

ফিল্মফেয়ারে রেকর্ড গড়ল ‘লাপাতা লেডিস’

১৯

কলকাতায় অমিতাভের জন্মদিনে চল্লিশা পাঠ

২০
X