কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৩, ০১:৪০ এএম
আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০২৩, ১০:১১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

শোক থেকে শক্তি

শোক থেকে শক্তি

শোকাবহ ১৫ আগস্ট আজ। আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের নীলনকশা অনুযায়ী, এ দেশের বিপথগামী কিছু সেনাসদস্য পঁচাত্তরের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে। সেদিন দেশে না থাকায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। শোকসন্তপ্ত জাতি আজ নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধুকে বিশেষভাবে স্মরণ করছে। যার গৌরবময় নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই মহান নেতাকে সপরিবারে হত্যা শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক ঘটনা। ঘাতক দল ভেবেছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে তার নাম ইতিহাস থেকে চিরতরে মুছে ফেলবে। কিন্তু তাদের সে স্বপ্ন সফল হয়নি। যে বাড়িতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে শহীদ হয়েছেন, ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের সেই বাড়িটি এখন জাতির অন্যতম আবেগময় স্মৃতিচিহ্নে পরিণত হয়েছে। আর তিনি এখন দেশের মুক্তিকামী মানুষের অনিঃশেষ প্রেরণার উৎস।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পশ্চিমা গণমাধ্যম অত্যন্ত কৌশলে এ হত্যাকাণ্ডকে কতিপয় সেনা অফিসারের কারসাজি হিসেবে প্রমাণ করার অপপ্রয়াস চালায়। পরবর্তী সময়ে স্বীকৃত খুনিচক্র বঙ্গবন্ধু হত্যা সম্পর্কে সব গালগল্প ও ব্যক্তি আক্রোশের কথা দ্ব্যর্থহীনভাবে অস্বীকার করে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড বিষয়ে ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘রাজনৈতিক এবং মতাদর্শিক কারণে তরুণ অফিসাররা শেখ মুজিবকে হত্যা করেছে।’ এই আদর্শিক ও রাজনৈতিক পার্থক্যগুলো আসলে কী? ১৯৭৯ সালের ৪ আগস্ট ‘এইট ডেইস’ পত্রিকায় ‘দ্য ম্যান হু কিল্ড মুজিব’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মেজর রশিদ বলেন, তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করা। অন্য এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, তাদের হত্যা পরিকল্পনা ছিল রাজনৈতিক।

এ কথা আজ সবার কাছেই স্পষ্ট, এই হত্যাকাণ্ডের রাজনৈতিক লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিবর্তে পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালিত করা। অর্থাৎ অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক ধারার বিপরীতে সম্পূর্ণ প্রতিক্রিয়াশীল ও পুঁজিবাদী ধারায় ধাবিত করা। এ ক্ষেত্রে তারা অনেকটা সফল হয়েছিল! কেননা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশ দীর্ঘদিন এই পথে হেঁটেছে!

সুতরাং বঙ্গবন্ধু হত্যায় প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত মেজর ফারুক ও রশিদ যতই বলুক না কেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে তাদের নিজেদের, এ কথা মোটেই ঠিক নয়। খুব বেশি হলে তাদের মূল চক্রান্তকারীদের অন্ধভৃত্য বলে উল্লেখ করা যায়, এর বেশি কিছু নয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার সিদ্ধান্ত ও এর নীলনকশা তৈরি হয়েছে অন্যত্র। মেজর ফারুক ও রশিদের ওপর দায়িত্ব পড়ে সেই নীলনকশার ‘অ্যাকশন’-এর দিকটা কার্যকর করা। এ বিষয়টি বাংলাদেশে এবং আন্তর্জাতিকভাবে নানা গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রায় ২৫ বছর পর ২০০১ সালে প্রকাশিত হয় ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত মার্কিন সাংবাদিক ক্রিস্টোফার এরিক হিচেন্সের ‘দ্য ট্রায়াল অব হেনরি কিসিঞ্জার’ শিরোনামের বই। এতে তিনি কিসিঞ্জারকে অসাধারণ স্মৃতিশক্তিসম্পন্ন এক বিচিত্র মিথ্যাবাদী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। উল্লেখ করেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে সিআইএর সংশ্লিষ্টতার বিষয়টিও। বইটিতে তিনি কিসিঞ্জারকে একজন যুদ্ধাপরাধী হিসেবেও চিহ্নিত করেছেন।

বঙ্গবন্ধু শারীরিকভাবে আজ না থাকলেও মানুষের হৃদয়জুড়ে তার স্থান। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন সোনার বাংলা গড়ার। সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার মাধ্যমেই তার প্রতি সর্বোৎকৃষ্ট শ্রদ্ধা জানানো সম্ভব। সে কাজটাই এখন করতে হবে সবাই মিলে। দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সেই কাজটি এগিয়ে নিচ্ছেন তারই সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও পদ্মার চরে জমজমাট ইলিশের বাজার

রাজশাহী ও বগুড়ায় বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ওয়ানডে সিরিজ

যেসব সাধারণ কারণে পুরুষদের পেলভিক ব্যথা হয়

হাসিনাকে ফেরাতে রেড নোটিশ জারির পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে : দুদক চেয়ারম্যান

জামায়াত কর্মী মহিবুর হত্যা মামলায় ১৫ জনের যাবজ্জীবন

অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের সেনা আইনে বিচার দাবি

চুরির অভিযোগে আটকদের আনতে গিয়ে পুলিশের গাড়ির চাবি চুরি

১৮ অক্টোবরের মধ্যে এনসিপি প্রতীক বাছাই না করলে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি

আইনের বেড়াজাল পেরিয়ে কারাগারে বিয়ে

স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার সময় দুর্বৃত্তের হামলা, যুবদল নেতা নিহত

১০

মোবাইলে ব্রাজিল-জাপান ম্যাচ দেখবেন যেভাবে

১১

চাকসুর ভোট গণনা হবে যেভাবে

১২

সড়কে বেপরোয়া অটোরিকশা, অসহায় প্রশাসন

১৩

পুলিশের ধাওয়ায় নদীতে ঝাঁপ, ৩ দিন পর লাশ উদ্ধার

১৪

আগামী নির্বাচনে দুর্নীতিবাজদের মনোনয়ন না দেওয়ার অনুরোধ দুদক চেয়ারম্যানের

১৫

মিরপুরে গার্মেন্টস-কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট

১৬

টিভিতে দেখাবে না বাংলাদেশ-হংকং চায়না ম্যাচ, মোবাইলে দেখবেন যেভাবে

১৭

১৭ অক্টোবর থেকে দেশের ২৯ জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস 

১৮

পাসওয়ার্ড মনে রাখতে পারছেন না? সহজ সমাধান এনেছে গুগল

১৯

জামায়াত আমিরের সঙ্গে ডেনিশ রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

২০
X