কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:২৫ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আমরা হারাই গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে

আমরা হারাই গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে

গাজী মাজহারুল আনোয়ার বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব, প্রযোজক-পরিচালক-পরিবেশক এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত গীতিকার। তিনি ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগহণ করেন। পাঁচ দশকের বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে গাজী মাজহারুল আনোয়ার ২০ হাজারেরও বেশি গান রচনা করেন। তিনি ১৯৬৪ সাল থেকে রেডিও পাকিস্তানে গান লেখা শুরু করেন। ১৯৬৫ সাল থেকে যুক্ত হন চলচ্চিত্রে। গানের পাশাপাশি তিনি লিখতে শুরু করেন বাংলা সিনেমার কাহিনি, চিত্রনাট্য, সংলাপ। পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই নিয়মিত গান ও নাটক রচনা করেন। তিনি বেশ কয়েকটি টিভি-নাটকও পরিচালনা করেন। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র নান্টু ঘটক ১৯৮২ সালে মুক্তি পায়। তার পরিচালিত চলচ্চিত্রের সংখ্যা ৪১টি। তার গানে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম, প্রকৃতি, জীবনবোধ, প্রেম, বিরহ, স্নেহ ও অনুভূতির কথা।

১৯৬২-৬৩ সালে মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় গাজী মাজহারুল আনোয়ার লিখেছিলেন প্রথম গান ‘বুঝেছি মনের বনে রং লেগেছে’। গানটির সুর করেছিলেন নাজমূল হুদা বাচ্চু, গেয়েছিলেন শিল্পী ফরিদা ইয়াসমিন। ১৯৬৪ সালে রেডিও পাকিস্তানে গান লিখে ৫০ টাকা আয়ের মাধ্যমে পেশাদার গীতিকার হিসেবে জীবন শুরু করেন তিনি। সিনেমায় গাজী মাজহারুল আনোয়ারের প্রথম লেখা গান ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’। এটি ১৯৬৭ সালের ‘আয়না ও অবশিষ্ট’ সিনেমায় ব্যবহৃত হয় এবং গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে।

সুভাষ দত্তের ‘আয়না ও অবশিষ্ট’ চলচ্চিত্রে ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’ গানটি দিয়ে চলচ্চিত্রের গান লেখা শুরু করেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান দেশ চিত্রকথা থেকে বেরিয়েছে—‘শাস্তি’, ‘স্বাধীন’, ‘শর্ত’, ‘সমর’, ‘শ্রদ্ধা’, ‘ক্ষুধা’, ‘স্নেহ’, ‘তপস্যা’, ‘উল্কা’, ‘আম্মা’, ‘পরাধীন’, ‘আর্তনাদ’, ‘পাষাণের প্রেম’ ও ‘এই যে দুনিয়া’ নামের চলচ্চিত্র।

বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০ বাংলা গানের মধ্যে তিনটি গানের রচয়িতা গাজী মাজহারুল আনোয়ার। গানগুলো হচ্ছে—‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘একতারা তুই দেশের কথা’ ও ‘একবার যেতে দে না’। এ ছাড়া তার লেখা কালজয়ী গানের মধ্যে রয়েছে— ‘গানের খাতায় স্বরলিপি লিখে’, ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘ও পাখি তোর যন্ত্রণা’, ‘ইশারায় শীষ দিয়ে’, ‘চোখের নজর এমনি কইরা’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’ প্রভৃতি।

গীতিকবি হিসেবে গাজী মাজহারুল আনোয়ার পাঁচবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সিনেমার পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার ২০০২ সালে একুশে পদক লাভ করেন। এ ছাড়া স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য স্বাধীন দেশের সর্বপ্রথম পুরস্কার ‘বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড’ও লাভ করেন তিনি। কয়েকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, একাধিকবার বাচসাস পুরস্কারসহ তার অর্জিত পুরস্কারের সংখ্যা শতাধিক। গাজী মাজহারুল আনোয়ার ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মারা যান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএনপি আইনের শাসনে বিশ্বাসী : ব্যারিস্টার অসীম

প্রত্যেক উপদেষ্টা বিদেশি নাগরিক : রুমিন ফারহানা

বিশ্বকাপ দলে ডাক পেলেন ঢাবি ছাত্রদল নেতা

ইতিহাসের সেরা নির্বাচন হতে যাচ্ছে : প্রেস সচিব

ছুটির দিনেও জমজমাট চাকসুর নির্বাচনী প্রচার

কুমিল্লা নামেই বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে উত্তাল রাজপথ

হৃতিক রোশনের প্রথম ওয়েব সিরিজ ‘স্টর্ম’

ধর্ম যার যার নিরাপত্তা সবার : আমীর খসরু

স্বাস্থ্যকর ঘুমের ১২ অভ্যাস

বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল ইতালি সরকার

১০

পিআরসহ ৫ দফা মেনে নেওয়ার আহ্বান ইসলামী আন্দোলনের

১১

অবতরণের সময় মিগ-৩১ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত

১২

জানা গেল কবে দেশে ফিরবেন শহিদুল আলম

১৩

পচা চাল কিনে বাধ্যতামূলক অবসরে খাদ্য কর্মকর্তা

১৪

ভুল সময়ে ওজন মাপলে জানবেন ভুল তথ্য

১৫

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবি সাইকেলিস্টদের

১৬

কোটি টাকার বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১

১৭

ভোট নিয়ে জামায়াত আমিরের হুঁশিয়ারি

১৮

ফুটবল খেলা নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩০

১৯

প্রাথমিকে নাচ-গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের দাবিতে খতমে নবুওয়তের বিক্ষোভ

২০
X