সুকুমার সেন বাঙালি ভাষাতাত্ত্বিক ও সাহিত্য বিশারদ। বৈদিক ও ধ্রুপদি সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত বাংলা, প্রাচীন পারসিক ভাষায় তার বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল। তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব ও পুরাণতত্ত্ব আলোচনায়ও বৈদগ্ধ্যের পরিচয় রেখেছিলেন। ১৯০১ সালের ১৬ জানুয়ারি কলকাতার গোয়াবাগানের মাতুলালয়ে সুকুমার সেনের জন্ম হয়। পিতা হরেন্দ্রনাথ মিত্র ছিলেন বর্ধমান কোর্টের আইনজীবী। বর্ধমান জেলার গোতান গ্রামে ছিল পৈতৃক নিবাস। এখানেই সুকুমার সেনের পড়াশোনার শুরু। ১৯১৭ সালে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষা এবং ১৯১৯ সালে বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে বাংলা, সংস্কৃত, লজিক, অঙ্কে লেটারসহ প্রথম বিভাগে আইএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯২১ সালে কলকাতার সংস্কৃত কলেজ থেকে সংস্কৃতে সাম্মানিকসহ প্রথম বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯২৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এমএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯২৫ সালে ‘সিনট্যাক্স অব বৈদিক প্রোজ’ নামে একটি থিসিস লিখে প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ বৃত্তি লাভ করেন। ১৯২৬ সালে তার প্রথম গবেষণা প্রবন্ধ ‘নোটস অব দ্য ইউজ অব কেসেস ইন দ্য কথক সংহিতা’ প্রকাশিত হয় এশিয়াটিক সোসাইটি জার্নালে। এরপর মধ্য ও আধুনিক (বাংলা) আর্য ভাষার ঐতিহাসিক পদ বিচারের ওপর গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ: ভাষার ইতিবৃত্ত, রামকথার প্রাক-ইতিহাস। তিনি আনন্দ পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯২ সালের ৩ মার্চ তিনি মারা যান।