কিশোর কুমারের একটা বিখ্যাত গানের কলি আছে, এই সেই কৃষ্ণচূড়া। গুলশান ১০৮ নাম্বার রোড দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় চাইলে কেউ এখন গানের কলি একটু বদলে দিতে পারেন। নতুন করে গাইতে পারেন, এই সেই গ্যারেজ...। গত কিছু দিন বিশ্বের যেকোনো গ্যারেজের চাইতে এটি বেশি আলোচিত গ্যারেজ। শুধু গত কিছু দিন কেন, কয়েক বছর ধরেই তো আলোচনায় এটি। টিভির পর্দাতেও আর কোনো গ্যারেজ সম্ভবত এত বেশিবার দেখা যায় নি। সে দিক থেকে এটিকে একটি রেকর্ডের মালিকও বলা যেতে পারে।
একটি টেস্ট খেলুড়ে দেশের একাধিক অধিনায়ক এখানে পদত্যাগ করেছেন, সম্ভবত একাধিক ক্যাপ্টেন নিয়োগও পেয়েছেন। গতকাল যেমন এখানে ঘোষণা হয়েছে দেশের বিশ্বকাপ ক্যাপ্টেন। এমন দেশটি, সরি গ্যারেজটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, চাইলে কেউ এভাবেও গাইতে পারেন। ক'দিন আগে তো একজন এই গ্যারেজের একটা ছবি জাদুঘরে রাখারও দাবি করেছেন। খুব যে একটা অন্যায্য দাবি তা-ও নয়। এখান থেকে যে ঘোষণা গুলি আসছে তার প্রায় সবই ঐতিহাসিক। কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে অন্যত্র।
এখানে যেসব ছবি তোলা হচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে কেউ কেউ লুঙ্গি পরে মোবাইল হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের চেয়ে তাদের আলাদা করা যাচ্ছেনা। এমনিতেই এই গ্যারেজ নিয়ে ক্রীড়া সাংবাদিকরা বিপাকে আছেন। টিপ্পনী কেটে তাদের কেউ কেউ গ্যারেজ সাংবাদিকও বলছেন। এর সাথে যদি লুঙ্গি সাংবাদিক তকমা যোগ হয় তবে বেচারারা সত্যিই বিব্রতকর অবস্থায় পড়বেন। এই সাংবাদিকদের কাউকে কাউকে আবার বাংলা সিনেমার একটা গানের কলিও প্রায়ই নাকি গাইতে হচ্ছে- 'তুমি ডাকলেও আসি, না ডাকলেও আসি।'
এই পর্যন্ত পড়লে মনে হতে পারে বিষয়টা নিয়ে ঠাট্টা করছি। কিন্তু আদতে তা নয়। এতক্ষণ যেটা বললাম,বাংলাদেশের ক্রিকেটে এটাই এখন বাস্তবতা। খেলোয়াড়, কর্মকর্তা সবাই মিলে দেশের ক্রিকেটটাকেই এখন ঠাট্টার পর্যায়ে নামিয়ে এনেছেন। সাংবাদিকদেরও এতে দায় আছে খানিকটা। সব মিলিয়ে এখন যা হচ্ছে তাকে সংক্ষেপে কেবল একভাবে অভিধা করা যায়- চলিতেছে সার্কাস। তা সার্কাসই যখন চলবে, সেটা গ্যারেজে হলেই কি আর গাড়িতে হলেই কি।
লেখক : যুগ্ম বার্তা সম্পাদক, নিউ এইজ
মন্তব্য করুন