সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুটি ছবি ভাসছে—একটি সামিত সোমের সঙ্গে গোল উদযাপনে হামজা চৌধুরীর বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের, আরেকটি ম্যাচ হারের পর এ মিডফিল্ডারের বিষণ্ন মুখ। উচ্ছ্বাসের পর বিষাদের ছায়া ফেলা ম্যাচে স্কোরশিটে নাম লেখান হামজা চৌধুরী ও সামিত সোম। লাল-সবুজ জার্সিতে এটি ছিল সামিতের প্রথম গোল। যা কানাডা প্রবাসী ফুটবলারকে অম্লমধুর অভিজ্ঞতা দিয়েছে। ম্যাচের পর কানাডা প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ক্যাভালরি এফসির মিডফিল্ডার বলেছেন, ‘ম্যাচের ওই মুহূর্তে গোল করতে পেরে খুব উচ্ছ্বসিত ছিলাম। গর্বিত যে বাংলাদেশের হয়ে গোল করতে পেরেছি। কিন্তু দিন শেষে আমি গোল না করে যদি ম্যাচটা জিততাম তবে ভালো হতো, গোল না পেয়ে যদি ম্যাচটা ড্রও করতে পারতাম, তবু ভালো হতো।’ বাংলাদেশের জার্সিতে এটি ছিল হামজা চৌধুরীর চতুর্থ ম্যাচ। অভিষেকে ভারতের সঙ্গে ড্র করার পর প্রীতি ম্যাচে ভুটানের বিপক্ষে জয়। পরের দুই ম্যাচে সিঙ্গাপুর ও হংকং চায়নার বিপক্ষে টানা হার। চার ম্যাচে এরই মধ্যে দুই গোল করেছেন হামজা, সামিতের প্রথম গোল ছিল হংকং চায়নার বিপক্ষে। ম্যাচে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি ছাপিয়ে হামজা চৌধুরী-সামিত সোমদের আবেগ-অনুভূতি সবার মন জয় করে নিয়েছে। এ প্রসঙ্গে সাবেক ফুটবলার ও প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ফরটিজ এফসির কোচ মাসুদ পারভেজ কায়সার বলছিলেন, ‘হামজা চৌধুরী-সামিত সোমরা দেখিয়েছেন, দলের প্রতি তাদের নিবেদন অনেক উঁচুতে। তাদের দেহের ভাষায় তা পরিষ্কার।’ ম্যাচের পর হামজা চৌধুরীর বিষণ্ন ছবি সবার হৃদয় কেড়ে নিয়েছে। বিষণ্নতা ছিল সামিত সোমের মাঝেও।
হতাশা ভুলে ইতিবাচক দিক নিয়েই ভাবতে চান সামিত সোম। কানাডা প্রবাসী এ মিডফিল্ডার বলছিলেন, ‘গোল করার অনুভূতিটা কখনো ভুলে যাব না; কিন্তু দিন শেষে আমি হতাশ। যদি জিততাম আরও ভালো লাগত। ইতিবাচক দিক হচ্ছে, হংকং চায়নার মতো দলের বিপক্ষে ৩-১-এ পিছিয়ে থাকা অবস্থা থেকে ৩-৩ করতে পারব—এটা একসময় চিন্তাও করা যেত না। কিন্তু এখন দলে অনেক ক্যারিশম্যাটিক চরিত্র আছে, পেশন আছে। আমরা হাল ছাড়ব না।’ সামিত সোম আরও বলেছেন, ‘৩-১ থেকে যেভাবে আমরা ফিরে এসেছি, এটা আমাদের ভিত্তি তৈরি করবে। এটা থেকে শিখব। আমাদের আরও শিখতে হবে যে, সহজে গোল করতে দেওয়া যাবে না। সহজে গোল করতে দিলে ম্যাচ জিততে পারবে না। এটা ফুটবল, এখানে উত্থান-পতন ছিল। তাদের ভুল ছিল, আমাদেরও ভুল ছিল।’
সিঙ্গাপুর ম্যাচের পর হংকং চায়নার বিপক্ষে ম্যাচেও বিপুল সমর্থক মাঠে এসেছিলেন; কিন্তু দিন শেষে তাদের ফিরতে হয়েছে হারের হতাশা নিয়ে। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-১ এবং হংকং চায়নার বিপক্ষে ৪-৩ গোলে হারতে হয়েছে। সামিত সমর্থকদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘আমরা সবাই হতাশ যে, দর্শকদের জন্য আমরা জয় উপহার দিতে পারিনি। এবার হয়নি, পরবর্তী সময়ে হবে। আশা করছি, হংকং চায়নায় বাংলাদেশ জিতবে।’
মন্তব্য করুন