মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার সিরাজদীখান ও কেরানীগঞ্জের মোল্লাবাজার এলাকায় ধলেশ্বরীর শাখা নদীর সেতুর কাজ আট বছরেও শেষ হয়নি। সেতুর অভাবে মুন্সীগঞ্জের চার উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তাদের দাবি সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করা হোক।
স্থনীয়রা জানান, সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলে মুন্সীগঞ্জ সদর, সিরাজদীখান, টঙ্গীবাড়ি ও লৌহজং উপজেলার ছয় লাখ মানুষ যানজটহীনভাবে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবে। বর্তমানে এসব এলাকার মানুষ সেতুর স্থল দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ট্রলার ও দেশীয় ফেরিতে নদী পার হচ্ছে। স্থানীয়রা বলেন, সিরাজদীখানের বেতকা চৌরাস্তা থেকে মোল্লাবাজার হয়ে ব্রিজের গোড়া পর্যন্ত রাস্তার দৈর্ঘ্য ১৬ কিলোমিটার। সেখান থেকে ঢাকার পোস্তগোলা ব্রিজ পর্যন্ত আরও ৬ কিলোমিটার। পুরো পথে যানজট না থাকলে মাত্র ৩০ মিনিটে ঢাকা পৌঁছানো সম্ভব। বিপরীতে, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে বা চাষাঢ়া-পাগলা রুট দিয়ে যেতে সময় লাগে দুই থেকে তিন ঘণ্টা। অথচ ধলেশ্বরীর শাখা নদীর ওপর নির্মিতব্য ২৫২ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুর কাজ আট বছরেও শেষ হয়নি। উত্তর পাড়ের পাঁচটি পিলারের কাজ কচ্ছপগতিতে চলছে। ফলে রাজধানীর সঙ্গে মুন্সীগঞ্জের চার উপজেলার দ্রুত ও যানজটমুক্ত যাতায়াতের স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যানজটবিহীনভাবে ঢাকায় পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি করতে এই সেতুর কাজ হাতে নেওয়া হয়। ২০১৮ সালে ৩৩ কোটি ২৭ লাখ টাকায় ‘সুরমা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্পটির কাজ দেওয়া হয়। পরিকল্পনা ছিল ২০২০ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করার। পরবর্তী সময়ে সময় বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ২০২৫ সালেও কাজ শেষ হয়নি। বরং পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে মূল সেতুর নির্মাণকাজ। আর যতটুকু কাজ দৃশ্যমান, তা শুধু লোক দেখানো বলে জানান স্থানীয়রা।
কেরানীগঞ্জ এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ১৩টি পিলারের ওপর ১২টি স্প্যান বসিয়ে সেতুটি নির্মাণের কথা ছিল। এখন পর্যন্ত ৮টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটিতে দুটি করে স্প্যান বসানো হয়েছে। তবে নদীর মাঝখানের পিলারগুলো মোটামুটি শেষ হয়েছে। এখন স্প্যান বসানোর কাজ বাকি। সব মিলিয়ে সেতুর ২০ শতাংশ কাজ বাকি আছে।
কেরানীগঞ্জ এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, সেতুর প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। এজন্য সুরমা এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে ১৬ কোটি টাকা নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে সেতু নির্মাণকাজ শেষ হবে।
মন্তব্য করুন