আরিফিন তুষার, বরিশাল
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৪, ০৩:০৮ এএম
আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৪, ০৭:৩৮ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
স্বজনের কান্না

রনি ছিল বিধবা মায়ের একমাত্র অবলম্বন

রনি ছিল বিধবা মায়ের একমাত্র অবলম্বন

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর পূর্ব বেতাল গ্রামের আল আমিন রনি (২৪)। মা মেরিনা বেগম এবং ছোট ভাইকে নিয়ে রাজধানীর মহাখালীর একটি বস্তিতে থাকতেন। গ্রামের বাড়িতে রনির স্ত্রী ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। দিনের বেলায় একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন রনি। কিছু বাড়তি আয়ের আশায় রাতে ফুডপান্ডার ডেলিভারি বয়ের কাজ করতেন। মা করতেন অন্যের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ।

ঘটনার দিন দুপুরে মায়ের কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়ে বাসা থেকে বের হন রনি। বিকেলে মা শুনতে পান কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় মহাখালী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছে তার আদরের সন্তান। খবর পেয়ে ছুটে যান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টায় মারা যান রনি।

বানারীপাড়ার চাখার শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন রনি। মহামারি করোনার সময় মারা যান তার বাবা। বাবার মৃত্যুর পর পড়াশোনা বাদ দিয়ে সংসারের হাল ধরতে হয় রনিকে। এ কারণে মা এবং একমাত্র ছোট ভাইকে নিয়ে চলে আসেন ঢাকায়।

বাবার মৃত্যুর পর রনির মা এবং ছোট ভাইয়ের আশ্রয় হয় বৃদ্ধ নানা-নানির ঘরে। সেখানে একটি টিনশেড বিল্ডিংও বানিয়েছেন তিনি। তবে ঘরের কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি। আশা ছিল এ বছরই ঘরের সব কাজ শেষ করবেন। সেই আশা আর পূরণ হলো না। তার আগেই কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে ঝরে গেল তার প্রাণ।

সংসারে আয়ের একমাত্র উৎসই ছিল আল আমিন রনি। তাকে হারানোর পর চারদিকে অন্ধকার নেমে এসেছে পরিবারে। কীভাবে চলবে সংসার এ নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই বিধবা মায়ের। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন তিনি।

মেরিনা বেগম বলেন, ‘ওরা আমার ছেলেকে শুধু শুধু গুলি করেছে। ও কোনো আন্দোলনে জড়িত ছিল না। ওর মৃত্যুতে ছোট সন্তান নিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেলাম। পরিবারে উপার্জনের মানুষ না থাকায় আমাদের দেখাশোনার কেউ রইল না। সংসার চালানোর মতো কেউ রইল না।’

তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের মৃত্যুর দায় কে নেবে? এই ছেলেকে ঘিরেই সব স্বপ্ন ছিল আমার। ওর বাবার মৃত্যুর পরে আমার ছেলে রনি সংসারের হাল ধরল। এখন কী হবে আমাদের? ছোট ছেলে পড়ালেখা করে। সামনের দিনগুলো কীভাবে কাটাব, তা বুঝতে পারছি না। একদিকে নেই কোনো সম্পত্তি, অন্যদিকে আমি তো ছেলেকে হারিয়ে অসহায় হয়ে গেলাম। এখন সরকার কোনো সহযোগিতা করলে আমরা চলতে পারব।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাবেক রাষ্ট্রপতির বাড়ি এখন কিন্ডারগার্টেন স্কুল

রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় ক্রিকেটার নিহত

সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়ল স্বর্ণের দাম

অভিনয়ের বাইরে অন্য এক কৃতি

একেবারে শেষ মুহূর্তে গোল হজম, জিততে পারল না বাংলাদেশ

শিশুর কাশি হলে সঙ্গে সঙ্গে কফ সিরাপ নয়

অনড় এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা, আজ ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি

৬ দফায় যত বাড়ল স্বর্ণের দাম

ইলেকট্রনিকস ও কমার্শিয়াল বিভাগে চাকরি দিচ্ছে দারাজ

অ্যাটলির সিনেমায় যশ

১০

বাংলাদেশের সরাসরি বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে যা জানাল বিসিবি

১১

নিরাপদ অভিবাসন নিয়ে আইওএম’র চলচ্চিত্র প্রদর্শনী

১২

আকিজ গ্রুপে চাকরির সুযোগ, আজই আবেদন করুন

১৩

রাকসু নির্বাচন / শিবির প্যানেলের ৫ বস্তা খাবার ফেরত পাঠাল নির্বাচন কমিশন

১৪

ফ্রিজে রাখা খাবার থেকে কি ইউরিন ইনফেকশন হয়, যা জানালেন চিকিৎসক

১৫

দীপিকার পাশে কঙ্কনা

১৬

কতজন ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেলেন, জানাল ইসরায়েল

১৭

চাঁদা না দেওয়ায় ২৯ দিন ধরে মাদ্রাসা বন্ধ

১৮

আমার জীবনে সালমান একজন গার্ডিয়ান অ্যাঞ্জেল: এলি আভরাম

১৯

মধ্যরাতে হঠাৎ মার্কিন দূতাবাসে নিরাপত্তা জোরদার

২০
X