কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ৩১ মে ২০২৫, ০৮:০১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

তিন দিন ধরে বন্ধ চিকিৎসা, ভোগান্তিতে রোগীরা

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট
চিকিৎসা বন্ধে ভোগান্তিতে রোগীরা
চিকিৎসা বন্ধে ভোগান্তিতে রোগীরা

কর্মচারী ও চিকিৎসকদের সঙ্গে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের মারামারি-সংঘর্ষের জেরে গতকাল শুক্রবারও রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ ছিল। নিরাপত্তার অভাবে চিকিৎসকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে না ফেরায় এ নিয়ে টানা তিন দিন ধরে হাসপাতালটিতে অচলাবস্থা চলছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের চিকিৎসা না নিয়েই ফেরত যেতে হচ্ছে। আর আগে থেকে যেসব রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন, তারাও ফলোআপ চিকিৎসা পাচ্ছেন না।

এক চক্ষু চিকিৎসক বলেন, ‘আহতরা বলছে—আমরা তো পাগল। এখন আমরা যে কোনো কাজ করতে পারি। তারা চিকিৎসকদের বাসা-বাড়িতে হামলার পরিকল্পনাও করছে। তাদের ভয়ে সাধারণ রোগীরাও হাসপাতাল ছেড়েছে। তবে যাওয়ার জায়গা নেই যাদের—এমন কিছু রোগী এখনো অবস্থান করছেন।’

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম বলেন, হাসপাতাল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। আতঙ্কে চিকিৎসক, নার্স কিংবা কোনো স্বাস্থ্যকর্মী হাসপাতালে যেতে পারছেন না। রোগীরাও চলে গেছে। তবে জুলাইয়ের আহতদের একটি অংশ এখনো অবস্থান করছে। উদ্ধারের পর আটকে পড়া পরিবারগুলো কোয়ার্টার ছেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় হাসপাতালের পরিস্থিতি জানে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় হাসপাতাল বন্ধ রাখা হয়েছে। কবে নাগাদ সেবা চালু করা যাবে, নিশ্চিত নই।’

আগে যা ঘটেছিল: উন্নত চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগ তুলে গত রোববার চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চার জুলাই যোদ্ধা বিষপান করেন। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তারা সহযোদ্ধাদের নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালের পরিচালককে অবরুদ্ধ করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা বাদে সেনাবাহিনীর সহায়তায় অবরুদ্ধ দশা থেকে মুক্তি পান হাসপাতাল পরিচালক। এর মধ্যে আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ গায়ে কেরোসিন-পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলে পুলিশের ভাষ্য।

পরিচালককে অবরুদ্ধ করে রাখা এবং আহতদের আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় নিরাপত্তার দাবিতে বুধবার সকাল থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন হাসপাতালের কর্মচারীরা। এ অবস্থায় হাসপাতালের কর্মচারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন জুলাই যোদ্ধারা। পরে আহতদের সঙ্গে যোগ দেন বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীর স্বজনরাও।

হাসপাতালের এক চিকিৎসকের ভাষ্য, জুলাইয়ের আহতরা হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মচারীদের আবাসিক ভবনেও হামলা চালায় এবং কর্মচারীদের শাস্তির দাবিতে তারা সেখানে স্লোগানও দেন।

খবর পেয়ে প্রথমে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরে দুপুরে কোস্টগার্ড সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে কর্মচারীদের কর্মবিরতি এবং চিকিৎসকরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ায় হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবারও বন্ধ ছিল গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালের সব ধরনের সেবা কার্যক্রম।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় ক্রিকেটার নিহত

সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়ল স্বর্ণের দাম

অভিনয়ের বাইরে অন্য এক কৃতি

একেবারে শেষ মুহূর্তে গোল হজম, জিততে পারল না বাংলাদেশ

শিশুর কাশি হলে সঙ্গে সঙ্গে কফ সিরাপ নয়

অনড় এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা, আজ ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি

৬ দফায় যত বাড়ল স্বর্ণের দাম

ইলেকট্রনিকস ও কমার্শিয়াল বিভাগে চাকরি দিচ্ছে দারাজ

অ্যাটলির সিনেমায় যশ

বাংলাদেশের সরাসরি বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে যা জানাল বিসিবি

১০

নিরাপদ অভিবাসন নিয়ে আইওএম’র চলচ্চিত্র প্রদর্শনী

১১

আকিজ গ্রুপে চাকরির সুযোগ, আজই আবেদন করুন

১২

রাকসু নির্বাচন / শিবির প্যানেলের ৫ বস্তা খাবার ফেরত পাঠাল নির্বাচন কমিশন

১৩

ফ্রিজে রাখা খাবার থেকে কি ইউরিন ইনফেকশন হয়, যা জানালেন চিকিৎসক

১৪

দীপিকার পাশে কঙ্কনা

১৫

কতজন ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেলেন, জানাল ইসরায়েল

১৬

চাঁদা না দেওয়ায় ২৯ দিন ধরে মাদ্রাসা বন্ধ

১৭

আমার জীবনে সালমান একজন গার্ডিয়ান অ্যাঞ্জেল: এলি আভরাম

১৮

মধ্যরাতে হঠাৎ মার্কিন দূতাবাসে নিরাপত্তা জোরদার

১৯

ঘুম থেকে উঠে যে ৫ খাবার খেলেই বিপদ

২০
X