কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৭:৩৬ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মুরাদনগরে ধর্ষণকাণ্ড

ভিডিও ছড়ানোর নেপথ্যে ‘চড়-থাপ্পড়ের বদলা’

ভিডিও ছড়ানোর নেপথ্যে ‘চড়-থাপ্পড়ের বদলা’

কুমিল্লার মুরাদনগরে পাশবিকতার শিকার নারীকে বিবস্ত্র করে যারা ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দিয়েছিল যোগাযোগমাধ্যম ইমোতে, তাদের ডেকে এনেছিল শাহ পরাণ—যিনি এ ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত ফজর আলীর ছোট ভাই। মূলত বড় ভাইয়ের হাতে ‘চড়-থাপ্পড়’ খেয়ে এর বদলা নিতে ওই রাতে সে পরিকল্পিতভাবে মব সৃষ্টি করেছিল। এরপর ধর্ষক ফজর আলীসহ নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও করে তার লোকজন। শাহ পরাণকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য সামনে এসেছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। গত বৃহস্পতিবার র‌্যাব-১১-এর একটি দল কুমিল্লা জেলার বুড়িচংয়ের কাবিলা বাজার এলাকা থেকে শাহ পরাণকে (২৮) গ্রেপ্তার করে। এর পর গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানায় র‌্যাব।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ঘটনার মূল আসামি ফজর আলীকে শায়েস্তা করতে তার ছোটভাই শাহ পরাণই সেদিন মব তৈরির পরিকল্পনা সাজিয়েছিল। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী তার সঙ্গীরা ঘরে প্রবেশ করে ওই নারীকে শারীরিক নির্যাতন করে। সেই ঘটনার ভিডিও করে পরে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। গ্রেপ্তার শাহ পরাণই মব সৃষ্টির কারিগর, প্রধান উসকানিদাতা ও পরিকল্পনাকারী।

র‌্যাব অধিনায়ক বলেন, ‘শাহ পরাণ ও ফজর আলী—দুই ভাই ভিকটিমকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। পরে এ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে ‘দ্বন্দ্ব’ সৃষ্টি হয়। ওই দ্বন্দ্ব মেটাতে মাস দুয়েক আগে দুই ভাইকে নিয়ে গ্রামে একটি সালিশ হয়। সেখানে পরাণকে চড়-থাপ্পড় দেয় ফজর আলী। সে কারণে শাহ পরাণ তার বড় ভাইয়ের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার চিন্তাভাবনা করে। ঘটনার রাতে সুদে দেওয়া টাকা আদায়ের নামে ফজর আলী ভিকটিমের ঘরে যায়। বিষয়টি ছোট ভাই শাহ পরাণ জানতে পেরে তার লোকজনকে খবর দেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ফজর আলী ভিকটিমের ঘরে প্রবেশ করার কিছুক্ষণ পর শাহ পরাণের লোকজন সেখানে প্রবেশ করে ভিকটিমকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেয়।

র্যাব অধিনায়ক জানান, ফজর আলী ভিকটিমের ঘরে যাওয়ার তথ্য পেয়ে শাহ পরাণ ইমোর মাধ্যমে একটা মেসেজ দেয় নিজের লোকজনকে। সময় জানিয়ে বলা হয়, ফজর আলী যাবে, তোমরা যদি ধরতে চাও ধরতে পার।

র্যাবের ভাষ্য, মূলত দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্বের জেরে ঘটনাটা ঘটানো হয়েছে। দীর্ঘদিন তারা ভিকটিমকে উত্ত্যক্ত করছিল। দুই ভাই একজনের পেছনে ছুটছে, সেখান থেকে দ্বন্দ্ব। গ্রাম্য সালিশে ফজর আলী কর্তৃক হেনস্থার শিকার হয় শাহ পরাণ। সেটারই প্রতিফলন সেদিনের মবের ঘটনা।

সংবাদ সম্মেলনে শাহ পরাণের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইলে র্যাব কর্মকর্তা সাজ্জাদ বলেন, ‘অপরাধ অপরাধই, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচ্য বিষয় নয়। সে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক। তার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাইনি।’

অবশ্য মুরাদনগরের স্থানীয় লোকজন কালবেলাকে জানিয়েছেন, এ শাহ পরাণ এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত। সে বখাটে একটা গ্রুপ নিয়ে এলাকায় নানা ধরনের অপকর্ম করে আসছিল।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আফগানিস্তানের দল ঘোষণা, নেই রশিদ খান

এইচএসসির ফল সবাইকে বিস্মিত করেছে : শিক্ষা উপদেষ্টা

কুমিল্লা বোর্ডে এবারের এইচএসসির ফলে এগিয়ে যারা

স্মরণকালের সর্বনিম্ন ফলাফল যশোরে

রাজধানী থেকে ওবায়দুল কাদেরের ভাই গ্রেপ্তার

জামায়াত আমিরের সঙ্গে ঢাকার কানাডিয়ান হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

রাকসু নির্বাচন : তিন ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ৩১ শতাংশ

বরিশালে যে ১২ কলেজের সবাই অকৃতকার্য

৩১ দফা একটি গতিশীল রাষ্ট্র গড়ার জন্য যথার্থ : লায়ন ফারুক

এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল করলেন মারুফা

১০

ফের ধারাবাহিকে স্বস্তিকা

১১

এইচএসসি পরীক্ষা / ১১ বোর্ডে অনুপস্থিত ছিল ৩১ হাজার ৪৬৯ শিক্ষার্থী

১২

ময়মনসিংহে পাসের হারে এগিয়ে মেয়েরা

১৩

জানা গেল সেই আনিসার ফল

১৪

৫ বছরে সবচেয়ে কম পাস কুমিল্লা বোর্ডে

১৫

বগুড়ার ৫ আসনে বিএনপির যেসব প্রার্থী আলোচনায়

১৬

চতুর্থ বর্ষে কালবেলা, আলেমদের শুভেচ্ছা-দোয়া

১৭

বড় চমক রেখে সেরা ওয়ানডে একাদশ বাছাই করলেন ম্যাক্সওয়েল

১৮

দিনাজপুর বোর্ডে এইচএসসির ফলাফলে ধস

১৯

ইনজেকশন খুব ভয় লাগে: শ্রাবন্তী 

২০
X