মালদ্বীপকে ৩-১ গোলে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে টিকে রইল বাংলাদেশ। বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে প্রথমে গোল হজম করেও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় হাভিয়ের ক্যাবরেরার দল।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দুই দশক পর মালদ্বীপকে হারাল বাংলাদেশ। ২০০৩ সালে ঢাকা আসরের গ্রুপ পর্বে আলফাজ আহমেদের একমাত্র গোলে সর্বশেষ দ্বীপ দেশটিকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। পরে টাইব্রেকারে মালদ্বীপকে হারিয়েই আসরে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল স্বাগতিকরা।
‘বি’ গ্রুপে লেবাননের কাছে হেরে আসর শুরু বাংলাদেশের। গতকাল হারলে টানা ষষ্ঠ আসরে গ্রুপ পর্বেই দৌড় শেষ হতো। দারুণ জয়ে প্রায় ১৪ বছর পর সেমিফাইনালে নাম লেখানোর সম্ভাবনা উজ্জ্বল হলো। সর্বশেষ ২০০৯ সালে ঢাকা আসরের সেমিফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। শেষ গ্রুপ ম্যাচে ভুটানকে হারালেই শেষ চারে নাম লেখাবে লাল-সবুজরা। ড্র যথেষ্ট হতে পারে, সেক্ষেত্রে গ্রুপের অন্যান্য ম্যাচের ফলাফল অনুকূলে থাকতে হবে।
লেবাননের কাছে হারা ম্যাচের একাদশ থেকে মজিবুর রহমান জনি ও সুমন রেজাকে বেঞ্চে রেখে এদিন মোহাম্মদ হৃদয় ও রাকিব হোসেনকে খেলান বাংলাদেশ কোচ। আক্রমণাত্মক ৪-৪-২ ফরমেশনে ম্যাচ শুরু করে বাংলাদেশ। সেন্টারব্যাক হিসেবে তপু বর্মণের সঙ্গে ছিলেন তারিক কাজী। লেফটব্যাক ঈসা ফয়সাল ও রাইটব্যাক পজিশনে ছিলেন বিশ্বনাথ ঘোষ। মাঝমাঠে সোহেল রানা সিনিয়র, সোহেল রানা জুনিয়র, মোহাম্মদ হৃদয়ের সঙ্গে ছিলেন অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। আক্রমণভাগে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের সঙ্গী হয়েছিলেন রাকিব হোসেন।
সপ্তম মিনিটে মাঝমাঠে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে বল কেড়ে নেওয়া সোহেল রানা থ্রু-বাড়ালেও বল রাকিব হোসেনের পায়ে পৌঁছাতে পারেননি। দুই মিনিট পর জামাল ভূঁইয়ার থ্রু-পাস রাকিব ধরার আগেই মালদ্বীপ গোলরক্ষক হাসান শরিফ গ্রিপে নেন। ১১তম মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার কর্নার থেকে সোহেল রানার হেডও মালদ্বীপ গোলরক্ষক গ্রিপে নিয়েছেন। ১৮ মিনিটে বাংলাদেশের আধিপত্যের বিপরীতে প্রথম সুযোগেই গোল করে মালদ্বীপ। বক্সের বাইরে থেকে হামজা মোহাম্মেদের শট প্রতিহত করতে আনিসুর রহমান জিকো ঝাঁপালেও রুখতে পারেননি (১-০)।
৩৪ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার কর্নারে তপু বর্মণের হেড হাসান শরিফকে ফাঁকি দিতে পারেনি। ৪২ মিনিটে সোহেল রানা সিনিয়রের ক্রসে তপু বর্মণ সরাসরি গোলের প্রচেষ্টায় যাওয়ার ভুল করেননি; এ সেন্টারব্যাক হেডে বল বাড়ান সতীর্থ রাকিবকে। হেডে ফাঁকা পোস্টে বল পাঠিয়ে বাংলাদেশকে সমতায় ফেরান বসুন্ধরা কিংস ফরোয়ার্ড (১-১)। জাতীয় দলের জার্সিতে এটি রাকিবের দ্বিতীয় গোল। ২০২২ সালের মার্চে কম্বোডিয়ার বিপক্ষে প্রথম গোল করেছিলেন এ ফরোয়ার্ড।
সমতায় শেষ হওয়া প্রথমার্ধে সব পরিসংখ্যানে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। লাল-সবুজদের ১৩ শটের বিপরীতে মালদ্বীপের ছিল তিনটি। টার্গেটে বাংলাদেশের ৪ শটের বিপরীতে মালদ্বীপের ছিল একটি। ৫৬ শতাংশ বল দখলে রাখা বাংলাদেশ কর্নার পেয়েছিল আটটি! বিরতির পরও আধিপত্য ধরে রাখে বাংলাদেশ। লাল-সবুজদের একের পর এক আক্রমণ আস্থার সঙ্গে রুখে যাচ্ছিল মালদ্বীপ রক্ষণ। ৬৭ মিনিটে দ্বীপ দেশটির বক্সে সৃষ্ট জটলার মধ্যে থেকে তারিক কাজীর হেড বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত লিড এনে দেয় (২-১)। গোলের পর গুরুতর ইনজুরি নিয়ে স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়েন তারিক কাজী। ৯০ মিনিটে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করে দিয়েছেন তরুণ মিডফিল্ডার শেখ মোরসালিন (৩-১)। ১৫ জুন কম্বোডিয়ার বিপক্ষে অভিষিক্ত বসুন্ধরা কিংস মিডফিল্ডারের বাংলাদেশের জার্সিতে এটি ছিল তৃতীয় ম্যাচ।
মন্তব্য করুন