

ভারত পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিলেও দেশের বাজারে খুব বেশি প্রভাব পড়েনি। আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, প্রক্রিয়া শেষে আগামী সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজ আসা শুরু হবে। তখন কেজিতে ১৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম কমতে পারে।
গতকাল মঙ্গলবার খুচরা পর্যায়ে মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়, যা এক দিন আগে ১২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। তবে গতকাল পাইকারি বাজারে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কমে মানভেদে ৯৫ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মোকামের ব্যাপারীদের নির্দেশে তারা নির্ধারিত দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। যেজন্য ইচ্ছা থাকলেও তারা দাম কমাতে পারছেন না।
বছরে কমবেশি পেঁয়াজের চাহিদা ২৭ থেকে ২৮ লাখ টন। সরকারি হিসাবে উৎপাদন এর থেকে বেশি হলেও সংরক্ষণ সময়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ ক্ষতি ২৫ শতাংশ। ফলে মৌসুম শেষে চাহিদার তুলনায় ঘাটতি দেখা দেয়। এ জন্য আমদানি করে ঘাটতি মেটানো হয়।
এ বছর ভরা মৌসুমে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকায় নতুন সরকারের বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেন। রমজান উপলক্ষে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ ও ১ লাখ টন চিনি আমদানির প্রস্তাব দেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ভারতের দিক থেকে এ-সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। গতকাল সচিবালয়ে এক সভা শেষে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, নীতিগতভাবে ভারত সরকার পেঁয়াজ দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। এখন অফিসিয়ালি কাগজ পেলে দ্রুত ভারত থেকে পেঁয়াজ আনা হবে।
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি এম হারুন উর রশিদ কালবেলাকে বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মন্ত্রী পর্যায়ে দীর্ঘ আলাপ আলোচনার পর পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ভারত সরকার। তবে সেদেশের কোনো রপ্তানিকারক এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে সে বিষয়ে দেশের ব্যবসায়ীরা সঠিক তথ্য এখনো জানেন না। তবে যোগাযোগ শুরু হয়েছে। প্রক্রিয়া শেষে পেঁয়াজ আসতে আগামী সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
শ্যামবাজার কৃষিপণ্য আড়ত বণিক সমিতির সভাপতি হাজি মো. সাইদ কালবেলাকে বলেন, পাইকারি বাজারে সব সময় ৫-১০ টাকা ওঠানামা করে। আজও (গতকাল) একই চিত্র। আমদানি মাল (পেঁয়াজ) না আসা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভবনা নেই। সীমান্তে এলেই মোকাম ও পাইকারিতে দাম কমে যাবে।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মুড়িকাটা ও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের পর কৃষকরা এখন মূল মৌসুমের পেঁয়াজ আবাদে মনোযোগী। মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, প্রতি বছরের মতো এবারও ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেয়াঁজ আবাদ হয়েছে এবং উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৮ লাখ টন। এ ছাড়া গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে, উৎপাদন হবে প্রায় ৫০ হাজার টন। এ পেঁয়াজ দিয়ে মার্চ পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানো সম্ভব। এরপরে মূল মৌসুমের পেয়াঁজ আসা শুরু হবে। এ বছর উৎপাদন হতে পারে ২৬ থেকে ২৮ লাখ টন।