বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে জিয়াউর রহমান জিরুল নামে এক প্রবাসীকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় পানগুছি নদীতে ফেরি চলাচল বন্ধ করে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ ৪ জনকে আটক করেছে। পাশাপাশি অপহরণের কাজে ব্যবহৃত একটি হায়েস গাড়িও জব্দ করেছে পুলিশ।
রোববার (১৩ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে আমতলী সরকারি দীঘি সংলগ্ন চৌরাস্তার একটি চায়ের দোকান থেকে ওই প্রবাসীকে অপহরণ করা হয়। চা দোকানের মালিক বাচ্চু মিয়া অপহরণের তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
অপহরণের শিকার জিয়াউর রহমান আমতলী গ্রামের মজিদ হাওলাদারের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন যাবত ভারতের বেঙ্গালোরে বসবাস করতেন। সেখানে ভাঙারির ব্যবসা করতেন বলে জানা গেছে। সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরে আসেন।
আটককৃতরা হলেন- জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোরেলগঞ্জের হোগলাবুনিয়া গ্রামের এইচ.এম খলিলুর রহমান (৪২), গাড়ির চালক খুলনার নিরালা গ্রিনভিউ এলাকার এনামুল হকের ছেলে আমিরুজ্জামান খোকন (৫৫), বটিয়াঘাটা থানার দক্ষিণ মাথাভাঙ্গা গ্রামের আব্দুস সত্তার রাজ (৫৫) এবং তেতুলতলা গ্রামের মোয়াজ্জেম হাওলাদার (৪০)।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে কালো রঙের একটি মাইক্রোবাসে করে একজন নারীসহ ১৭/১৮ জন সন্ত্রাসী আমতলী চৌরাস্তায় এসে পৌঁছায়। সঙ্গে ৩/৪টি মোটরসাইকেলও ছিল। তাদের কাছে বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। এ সময় অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা তাকে মারধর করে চোখ বেঁধে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এরপর তারা পানগুছি নদীতে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দিয়ে পালিয়ে যায়৷
এদিকে অপহরণের খবর পেয়ে মোরেলগঞ্জ থানার ওসি মো. মতলুবর রহমান অভিযান শুরু করেন। পরে পুলিশ ফেরিঘাটে তল্লাশি চালিয়ে ওই মাইক্রোবাস থেকে অপহৃত জিয়াউর রহমানকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। অপহরণের কাজে ব্যবহৃত কালো রঙের একটি হায়েস গাড়ি জব্দ করে।
ভুক্তভোগী জিয়াউর রহমান জানান, রোববার সকালে তিনি তার বাড়ির কাছে আমতলী বাজারে একটি দোকানে চা খাচ্ছিলেন। এসময় একটি গাড়িতে ও ৪-৫টি মোটরসাইকেলে করে ১৫-২০ জন লোক তাকে ধরে মারধর করে চোখ বেঁধে অপহরণ করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
জিয়াউর রহমানের স্ত্রী ময়না বেগম জানান, তার স্বামীকে উদ্ধারের জন্য তারা ৯৯৯ নম্বরে জানালে মোরেলগঞ্জ থানা পুলিশ ফেরি আটকে দিয়ে তার স্বামীকে উদ্ধার ও অপহরণকারী চক্রের ৪ জনকে আটক করে।
ওসি মো. মতলুবর রহমান বলেন, ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমানকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এমন খবর শুনে পুলিশের পৃথক দুটি দল ফেরিঘাটসহ সড়কে তল্লাশি শুরু করে। একপর্যায়ে ফেরিঘাটে হালকা কালো রঙের একটি গাড়ির মধ্যে ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমানকে আহত ও মুখ বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়। এসময় গাড়িরচালক ও গাড়িতে থাকা অপহরণকারী চক্রের অপর ৩ জনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মন্তব্য করুন