রাজধানীর শাহবাগের ত্রিকোণাকৃতি বিজ্ঞাপনী সংস্থার ইলেকট্রিক বিলবোর্ডের স্থাপনাটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। শনিবার (১২ জুলাই) রাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) স্থাপনাটি ভেঙে ফেলে। অনেকের কাছে এটি প্রজন্ম চত্বর নামেও পরিচিত ছিল। আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের বিজ্ঞাপনী সংস্থা এটি নির্মাণ করেছিল।
রোববার (১৩ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রজন্ম চত্বরের স্থাপনাটি একপাশ থেকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, ২০০৮ সালে ভোলা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও তৎকালীন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন তার বিজ্ঞাপনী সংস্থার মাধ্যমে এই ইলেকট্রিক বিলবোর্ডটি নির্মাণ করেন। এখান থেকে নিয়মিত সিটি করপোরেশনকে রাজস্ব দেওয়া হতো। তবে ডিএসসিসির সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন করপোরেশন এলাকা থেকে সকল বিলবোর্ড উচ্ছেদের সময় এটিও উচ্ছেদ করেন। সে সময় নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন তার বিলবোর্ডের ক্ষতিপূরণের দাবিতে আদালতে একটি মামলা করেন। সেটি এখনো চলমান আছে। তখন থেকেই এই বিলবোর্ডটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে।
তবে করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এখানে নতুন করে একটি স্থাপনা নির্মাণ করবে।
শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর বলেন, ‘স্থাপনাটি ভাঙার আগে আমাকে জানানো হয় যেন কেউ মব তৈরি করতে না পারে। কিন্তু কেউ বাধাও দেয়নি, কোনো মবও তৈরি হয়নি। যতদূর মন্ত্রণালয় আমাকে জানিয়েছে, এখানে নতুন করে জুলাইকেন্দ্রিক একটা স্থাপনা তৈরি হবে।’
শনিবার রাতে এই স্থাপনাটি ভেঙে ফেললে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।
২০১৩ সালের গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক জাহিদুল ইসলাম সজীব ফেসবুকে বলেন, ‘এই কাঠামোটা শাহবাগ আন্দোলনের কোনো প্রতীক না। বরং শাহবাগ আন্দোলনের বিরুদ্ধেই এটা বানানো হয়েছিল। শাহবাগ স্কয়ারের মধ্যে একটা ডিস্টারবেন্স ইনপুট করার জন্য ত্রিমুখী এই কাঠামোটা বানানো হয় যার উপর এলইডি স্ক্রিনে বিজ্ঞাপন দেখানো হইতো। সম্ভবত ২০১৪ সালের দিকে এটা স্থাপন করা হয়। এটা স্থাপন করার পর শাহবাগে নিয়মিত যাতায়াত করা সব লোকজনই বিক্ষুব্ধ হইতে দেখছিলাম। এমন কি টিএসসির ওপর দিয়া মেট্রোলাইন টানাটাও শাহবাগ টিএসসির উপর হাসিনার রাগের বহিঃপ্রকাশ।’
সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জয় কালবেলাকে বলেন, ‘স্থাপনাটির অফিসিয়াল কোন নাম ছিল না। এখানে ত্রিকোণাকৃতির বিজ্ঞাপনী সংস্থার ইলেকট্রিক বিলবোর্ড ছিল। দীর্ঘদিন সেটি পরিত্যক্ত থাকায় করপোরেশন সেটি ভেঙে ফেলেছে।’
ডিএসসিসির উপ-রাজস্ব কর্মকর্তা শাহজাহান আলী কালবেলাকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের অনেক জায়গায় বিজ্ঞাপনী সংস্থা অনুমতি নিয়ে বিলবোর্ডে স্থাপনা নির্মাণ করেছিল। ২০০৮ সালে সাবেক সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন শাহবাগের বিলবোর্ডটি নির্মাণ করে। মাঝখানে তারা একবার সংস্কারও করেছিল সেটি। তবে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের সময় ডিএসসিসি এলাকার সকল বিলবোর্ড উচ্ছেদের সময় সেটিও উচ্ছেদ করা হয়। তখন থেকেই এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে।’
মন্তব্য করুন