এস কে সাহেদ, লালমনিরহাট
প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৬ এএম
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ইতিহাস

প্রাচীন নিদর্শন সাহাবা আমলের মসজিদ

প্রাচীন নিদর্শন সাহাবা আমলের মসজিদ

বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারের প্রাচীনতম নিদর্শন ৬৯ হিজরিতে সাহাবা আমলে তৈরি ‘হারানো মসজিদ’। রংপুর-কুড়িগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের প্রায় ১ কিলোমিটার দক্ষিণে লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নে মসজিদটি অবস্থিত। পরে এটি ‘সাহাবায়ে কেরাম মসজিদ’ নামে নামকরণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের রামদাস মৌজার ওই স্থানটি বহুদিন ধরে ছিল পতিত জঙ্গল। হিংস্র জীবজন্তু, সাপ-বিচ্ছুর ভয়ে কেউ ওই স্থানে যেতে সাহস পেত না। পরে জঙ্গল পরিষ্কার করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে প্রাচীনকালের তৈরি ইট। যার মধ্যে ছিল ফুল অঙ্কিত। মাটি ও ইট সরাতে গিয়ে একটি পূর্ণ মসজিদের ভিত বেরিয়ে আসে। এ সময় একটি শিলালিপি পাওয়া যায়। যার মধ্যে স্পষ্ট অক্ষরে আরবিতে লেখা ছিল ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ হিজরি সন ৬৯। তখনই স্থানীয়রা বুঝতে পারেন, এটি একটি প্রাচীন মসজিদের ধ্বংসাবশেষ। পরে সেখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়, যার নামকরণ করা হয় ‘সাহাবায়ে কেরাম মসজিদ’।

সদর থেকে মাইক্রোবাস, বাস কিংবা রিকশা নিয়ে হারানো মসজিদে যাতায়াত করা যায়। বর্তমানে ঐতিহাসিক এ মসজিদটি পুনরায় সংস্কারের মাধ্যমে সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়েছে।

প্রাচীন এই মসজিদটি দেখার জন্য প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা। তারা মসজিদে এসে নামাজ আদায় করেন। আবার অনেকে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে মানত করেন। মসজিদ ঘিরে তৈরি হয়েছে

হাফেজিয়া মাদ্রাসা। সেখানে রয়েছে দোকানপাট।

হারানো মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. জাকারিয়া বলেন, প্রাচীন এই মসজিদের নিদর্শন হিসেবে এখনো বেশ কিছু ইট রয়েছে। রয়েছে প্রাচীন কারুকাজে তৈরি ইমাম সাহেবের খুতবা পড়ার মেহরাব। মসজিদের ভেতরে এখনো রয়েছে প্রাচীনকালে এই মসজিদে প্রবেশের গলি, যা কাচ দিয়ে ঢেকে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে।

প্রত্নতাত্ত্বিকদের দাবি, প্রাচীন মেসোপটেমীয় সভ্যতার দজলা ও ফোরাতের মতো ব্রহ্মপুত্র-তিস্তা অববাহিকাকে পৃথিবীর প্রাচীনতম অববাহিকাগুলোর একটি গণ্য করা হয়। রোমান ও জার্মান ইতিহাসবিদদের লেখায় আরব ও রোমান বণিকদের ব্রহ্মপুত্র অববাহিকাকে বাণিজ্যিক পথ হিসেবে ব্যবহারের কথা লিপিবদ্ধ আছে। ব্রহ্মপুত্র-তিস্তা অববাহিকাকে পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নৌপথ হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

ধারণা করা হয়, খ্রিষ্টপূর্ব থেকে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার পাড় ধরে সিকিম হয়ে চীনের মধ্য দিয়ে আরব ও রোমান বণিকদের যাতায়াত ছিল। হারানো মসজিদটি সাহাবি আবু ওয়াক্কাস (রা.) নির্মাণ করেছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

একটি কমপ্লেক্সসহ ঐতিহাসিক প্রাচীন এই মসজিদটি আরও সুন্দর করে তৈরির পরিকল্পনা করছে একটি দাতা সংস্থা। এটি নির্মাণ হলে হলে প্রাচীন হারানো মসজিদ হবে মুসলমানদের জন্য একটি দর্শনীয় স্থান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাবা হারালেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা প্রিন্স

সেই মেজর জেনারেল কবিরের বিষয়ে যে তথ্য দিল সেনাসদর

আবাসিক হোটেলে প্রেমিকাকে ধর্ষণে মৃত্যু, গ্রেপ্তার ২

মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বিচার দাবি জাকসুর

আবুধাবিতে বাংলাদেশের বোলিং তোপে চাপে আফগানিস্তান

বিএনপি সরকারে এলে জিডিপির ৫ শতাংশ শিক্ষায় ব্যয় করবে : শামা ওবায়েদ

সবচেয়ে শক্তিশালী পারমাণবিক মিসাইল উন্মোচন করল উত্তর কোরিয়া

বাগদান সারলেন তানজীব সারোয়ার

ইলিশ শিকারে গিয়ে জেলেদের সংঘর্ষ, জেলের মরদেহ উদ্ধার

নির্বাচনে কত সেনা মোতায়েন থাকবে, জানালেন মেজর হাকিমুজ্জামান

১০

শিক্ষক-কর্মচারীদের উৎসব ভাতার দাবিতে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ

১১

বিতর্কে জড়ালেন অনীত পাড্ডা

১২

জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান পেছাল 

১৩

জাতপাত বিলোপ জোটের আত্মপ্রকাশ

১৪

সমাবেশের অনুমতি ছিল না, জানালেন জাপা মহাসচিব

১৫

চাকসুতে শিবির সমর্থিত প্যানেলের বিরুদ্ধে ফের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

১৬

যে শহরে ২ ঘণ্টার বেশি ফোন ব্যবহার মানা

১৭

বিপিএলে দেখা যেতে পারে নোয়াখালী দল

১৮

‘শিশুদের নোবেল’ পুরস্কারে জন্য মনোনীত রাজশাহীর মুনাজিয়া

১৯

তরুণ প্রজন্মই আগামীর বাংলাদেশ : শরীফ উদ্দিন জুয়েল

২০
X