ঢাকার দোহার উপজেলার নারিশা বেলতলা এলাকার আরিফা আক্তার। ছাদবাগান করে সফলতার মুখ দেখেছেন। লিখেছেন শওকত আলী রতন-
ছাদবাগানের ফুল, সবজি টবে পানি দিচ্ছিলেন আরিফা। স্বামী রজ্জব আলী বেপারি ২০১৫ সালে চাকরির সুবাদে তুরস্কে যান। আরিফার দুই সন্তান স্কুলে চলে গেলে একরকম অলস সময় কাটত তার। সময়টা কাজে লাগাতে বাড়ির ছাদে টবের মধ্যে দেশি বিদেশি ফুলগাছ রোপণ করেন। অল্পদিনেই ফুলে ফুলে ভরে পুরো ছাদ। পাশাপাশি কবুতর পালনও শুরু করেন। কবুতরের বিষ্ঠা জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করে ফুল গাছের পাশাপাশি সবজি চাষ শুরু করেন। প্রথমে অল্প কিছু গাছ দিয়ে শুরু করলেও ভালো ফলন হওয়ায় সব ধরনের সবজি ও ফলের গাছ লাগানোর প্রতি আগ্রহ বাড়ে। অল্পদিনের মধ্যেই নানা ধরনের সবজি, ফুল ও ফলগাছে ভরে উঠেছে ছাদের আঙিনা। ছাদে স্থান পেয়েছে মরিচ, বেগুন, বরবটি, ঝিঙা, ধুন্দল, পেঁপে, লাউ, কলা, আখ, কমলা, মাল্টা, লেবু, জামরুল, কতবেল, বড়ই, আপেল, বিলম্ব, আম, পেয়ারা, আলুবোখারা, পেস্তাবাদাম, ড্রাগন, জামরুল, ঘৃত কুমারী, নাশপাতি, মালভেরি ইত্যাদি।
পরিত্যক্ত ছাদ এখন গাছে গাছে সবুজে ভরে গেছে। ছাদে গাছ লাগানোর জন্য আগের তুলনায় ছাদ গরমও কম হয়। অন্যদিকে অক্সিজেন মিলছে ছাদে। প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় সবজি এখন নিজেদের বাগান থেকেই সংগ্রহ করতে পারছেন। সবজির জন্য এখন আর বাজারে যাওয়া লাগে না বলে জানান আরিফা আক্তার। পাশাপাশি আত্মীয়স্বজনদের দিয়ে থাকেন। গত বছর ছাদে রোপণকৃত ড্রাগনের ১৬টি গাছ থেকে প্রায় ৪ মণ ফল সংগ্রহ করতে পেরেছেন, যা নিজের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর পর আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের মধ্যে বিতরণ করেন।
বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে জৈবসার ও জৈব বালাইনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে ফলন ফলিয়ে থাকেন। গাছ লাগানোর জন্য টব হিসেবে ব্যবহার করেছেন বালতি, ড্রাম অব্যবহৃত তেলের বোতল। প্রতিদিন দুইবেলা গাছগুলোর যত্ন নিয়ে থাকেন আরিফা।
কৃষিবিষয়ক পরামর্শের কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, কৃষি অফিসের কর্মকর্তা এসে বিভিন্ন সময় পরামর্শ দেন। শতভাগ রাসায়নিক বিষমুক্ত সবজি ফলানোর চেষ্টা করছি।
ছাদ কৃষি সম্পর্কে আরিফা আক্তার বলেন, আমাদের দেশে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি রয়েছে। পুষ্টির অভাবে অনেকে নানা
অসুখ বিসুখে ভুগে থাকেন। বাড়ির ছাদে ড্রাগন চাষ করা গেলে পরিবারের পুষ্টি চাহিদা জোগানো সম্ভব।
মন্তব্য করুন