কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
আপডেট : ১৯ জুন ২০২৩, ০৯:০৪ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

সায়াটিকা : একটি স্নায়ুজনিত সমস্যা

মো. হুমায়ুন কবীর
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বয়সের কারণে পা কিংবা কোমরের ব্যথা নিয়ে যাদের বসবাস, তাদের কাছে সায়াটিকা পরিচিত শব্দ। রোগটি বাতজনিত না স্নায়ুজনিত তা নিয়ে অনেকে দ্বিধায় থাকেন। আমাদের শরীরে সায়াটিক নার্ভ নামে একটি দীর্ঘ স্নায়ু আছে। এটি স্পাইনাল কর্ড থেকে মেরুদণ্ডের শেষ প্রান্তে ঊরুর পেছনের দিক দিয়ে পায়ের আঙুল পর্যন্ত বিস্তৃত। কোনো কারণে এ স্নায়ুতে চাপ পড়লে কোমর থেকে পায়ের নিচ পর্যন্ত তীব্র ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে। তখন একে সায়াটিকা বলে।

পরিসংখ্যানে বলা হচ্ছে, প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ সায়াটিকা ব্যথায় ভুগে থাকেন। পুরুষ বা নারীর যে কেউ সাধারণত ৩০-৬০ বছরের মধ্যে এ রোগে ভোগেন।

কারণ

মেরুদণ্ডের কোমরের অংশের ডিস্ক বা নরম হাড় স্থানচ্যুত হয়ে স্নায়ুতে চাপ পড়া।

কশেরুকার স্থানচ্যুতি।

স্নায়ু চলাচলের পথ সরু হলে।

বয়সজনিত ক্ষয়রোগ।

দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কোনো কাজ করলে।

হঠাৎ ভারী বস্তু ওঠানো।

সামনে ঝুঁকে বা বসে কাজ করা।

দীর্ঘক্ষণ মোটরসাইকেল, সাইকেল চালানো।

স্নায়ুরোগ, স্পন্ডিলাইটিস, স্লিপড ডিস্ক এবং পেশির খিঁচুনি ইত্যাদি।

লক্ষণ

পিঠের নিচের অংশে, ঊরুর, পায়ের পেছনে ব্যথা হবে।

কোমরের নিচের দিকে এবং এক পাশে ব্যথা হবে।

ব্যথা কোমর থেকে পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়বে। ঊরুর দিকে বেশি অনুভূত হবে।

পায়ে জ্বালাপোড়ার অনুভূতি হবে। একটা পা অথবা পায়ের পাতায় ঘন ঘন অসাড়তা এবং এক পায়ে দুর্বলতা অনুভূত হবে।

সুচ ফোটানোর মতো তীব্র ব্যথা হবে।

পা বা পায়ের পাতা নড়াচড়ায়, দাঁড়িয়ে থাকতে ও হাঁটাচলায় অসুবিধা হয়।

শুলে ব্যথা বাড়বে। কিছুক্ষণ হাঁটলে ব্যথা কমবে। বসে থাকলে বা দাঁড়িয়ে থাকলে ব্যথা বাড়বে।

পরীক্ষা

ইমেজিং পরীক্ষা, এক্স-রে, এমআরআই, সিটি স্ক্যান ইলেকট্রোমোগ্রাফি করে সায়াটিকা শনাক্ত করা যায়।

চিকিৎসা

যদি চার-ছয় সপ্তাহের মধ্যে সায়াটিকা নিজে থেকে ঠিক না হয়, তখন দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। উপসর্গ অনুসারে ওষুধ, ইনজেকশন, ফিজিওথেরাপি, অস্ত্রোপচার, ব্যায়াম ও জীবনযাপনে পরিবর্তনের ফলে সায়াটিকা হতে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এ ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাও রয়েছে।

করণীয় ও বর্জনীয়

বেশি নরম বিছানায় ঘুম, কোমর বাঁকা করে কোনো কাজ না করা।

সামনে ঝুঁকে কাজ করা বা নিচ থেকে কিছু না তোলা।

যতটা সম্ভব হালকা ব্যায়াম করতে হবে।

চেয়ারে বসে নামাজ পড়তে হবে। হাইকমোড ব্যবহার করতে হবে।

বিছানা থেকে ওঠার সময় একপাশে কাত হয়ে হাতে ভর দিয়ে উঠতে হবে।

বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে কোনো কাজ করা যাবে না। সোজা হয়ে বসে কাজ করতে হবে।

প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

ডাক্তারের পরামর্শমতো গরম সেঁক দেওয়া যাবে।

টানা অনেকক্ষণ বসে থাকা যাবে না।

উঁচু-নিচু স্থানে ভ্রমণে কোমরে বিশেষ বেল্ট ব্যবহার করতে হবে।

লেখক : হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক, রেনেসাঁ হোমিও মেডিকেয়ার, ঢাকা

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভোলায় নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল / এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা

যৌথবাহিনীর অভিযানে অনলাইন জুয়া চক্রের ২ সদস্য আটক

জেলেরা হেলমেট পরে মাছ ধরেন যেখানে

বিমানবাহিনীর আন্তঃঘাঁটি স্কোয়াশ প্রতিযোগিতা সমাপ্ত

স্পেনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

কারাগারে সন্তান জন্ম দিলেন হত্যা মামলার আসামি

সিলেটের সাদাপাথর লুটের ঘটনায় সিআইডির অনুসন্ধান শুরু

হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন ৬ সেপ্টেম্বর

ডাকসুর ভিপি প্রার্থী জালালের বিরুদ্ধে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ

ডাকসু নির্বাচন / ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার দায়ে বাদ জুলিয়াস সিজার

১০

ধর্ষণসহ হত্যায় ফুফাতো ভাইয়ের যাবজ্জীবন

১১

কাজী নজরুলের কবিতা দেশের মুক্তিকামী মানুষকে সাহস যুগিয়েছে : তারেক রহমান

১২

‘রোহিতকে সরানোর জন্যই ব্রঙ্কো টেস্ট এনেছে বিসিসিআই’

১৩

অভিনেত্রী হিমুর আত্মহত্যা, প্রেমিক রাফির বিচার শুরু

১৪

ভারতে প্রয়াত ক্রিকেটারদের স্ত্রীরা পাবে অনুদান

১৫

রাজধানীতে একক ব্যবস্থায় বাস চলবে : প্রেস উইং

১৬

ভিনিকে বিক্রি করে দিতে বললেন রিয়াল কিংবদন্তি

১৭

নতুন বিচারপতিদের মধ্যে সংখ্যালঘু নেই, ঐক্য পরিষদের ক্ষোভ

১৮

বিসিবির হাতে বিপিএলের স্পট ফিক্সিং তদন্ত প্রতিবেদন

১৯

ফেসবুকের বিরুদ্ধে জিডি করেছেন মাওলানা মামুনুল হক

২০
X