সংগীতশিল্পী নাদেদজা সুলতানা আর্নিক। গানের সঙ্গে দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময়ের সম্পর্ক তার। একক সংগীতের পাশাপাশি ডুয়েট অ্যালবামও প্রকাশ হয়েছে তার। ভালোবাসেন মেলোডি, রকের সঙ্গে পপ মিউজিক করতে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন আর্নিক। সেখানকার ব্যস্ততা ও গান নিয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা কালবেলাকে জানিয়েছেন তিনি। লিখেছেন মহিউদ্দীন মাহি
সংগীতশিল্পী নাদেদজা সুলতানা আর্নিক। ছবি: সংগৃহীত
আমেরিকায় কেমন ব্যস্ত সময় যাচ্ছে?
আমেরিকায় এবার ঘুরতে এসেছি। পরিবার, বন্ধু—সবার সঙ্গে খুব ভালো সময় কাটছে। বিভিন্ন লোকেশনে যাচ্ছি, তাদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছি। সব মিলিয়ে দারুণ সময় যাচ্ছে। মনেই হচ্ছে না, দেশ থেকে দূরে আছি। সেইসঙ্গে দুটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। যেখান থেকে দুটি সেরা গায়িকার সম্মান পেয়েছি। একটি হচ্ছে আনন্দ মেলা ২০২৫, অন্যটি লালন মেলা ২০২৫ থেকে আমাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ভালো সময় যাচ্ছে।
আপনি তো এর আগেও দেশের বাইরে গিয়েছেন, কোথায় থাকতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য লাগে?
দেশের বাইরে ঘুরতে সবসময়ই ভালো লাগে। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ। গানের সুবাদে গোটা বাংলাদেশ আমার ঘোরা হয়েছে। তবে দেশের সীমানা পেরিয়ে অন্য কোনো দেশে আসার আনন্দ আমার কাছে অন্যরকম। এর কারণ হচ্ছে, ভ্রমণ আমাদের অনেক কিছু শেখায়, জীবনে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়, বিভিন্ন ধরনের সংগীতের সঙ্গে নিজেকে পরিচিত করা যায়। তাই দেশ ও দেশের বাইরে নয়, সব জায়গাতেই আমি ঘুরে বেড়াতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কিন্তু স্থায়ীভাবে দেশে থাকতেই ভালো লাগে। তবে নেপাল আমার খুব পছন্দ। যেখানে সুযোগ পেলেই যেতে চাই আমি।
সংগীতশিল্পী নাদেদজা সুলতানা আর্নিক। ছবি: সংগৃহীত
আমেরিকায় গান নিয়ে কোনো ব্যস্ততা আছে?
না, এখানে গানের জন্য আসিনি। বেড়াতে এসেছি। আর দুটি পুরস্কারের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, সেগুলো গ্রহণ করেছি। গানের ব্যস্ততা এখানে নেই।
আপনি একজন গানের মানুষ, সংগীতের সঙ্গে সম্পর্ক এবং কত বছর ধরে গান করছেন?
গানের সঙ্গে আমার সম্পর্ক মায়ের কোল থেকেই। কারণ আম্মু সংগীত পছন্দ করেন। তার থেকেই আমার গানের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়। এরপর স্কুলে থাকতে সংগীতে শিক্ষা নেই। তারপর যখন মাইক্রোফোন হাতে নেওয়ার সাহস পাই, তখন থেকেই গান করছি। বলতে গেলে সেই ২০০৫ সাল থেকে গান নিয়ে গুটি গুটি পায়ে হাঁটছি। এর মধ্যে আমি ১৫টির মতো মিক্সড অ্যালবাম ও একটি সলো অ্যালবাম প্রকাশ করেছি, যা দর্শকের কাছে ভালো সাড়া ফেলেছে। যেহেতু দীর্ঘ সময় ধরে গান করছি, তাই বাকি জীবন সংগীত নিয়েই থাকতে চাই।
যে ধরনের গান করতে বেশি আগ্রহী?
আমার মেলোডি এবং পপ সংগীতের প্রতি ভালো লাগা আছে। এ ছাড়া বিভিন্ন জনরার মিউজিক করতে চাই। তবে পপ আমার পছন্দের জনরা। আমাদের দেশে পপ নিয়ে খুব বেশি শিল্পী কাজ করছেন না। তাই এটি নিয়েই আমার বেশি আগ্রহ।
সংগীতশিল্পী নাদেদজা সুলতানা আর্নিক। ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজের ইচ্ছা আছে?
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজের স্বপ্ন প্রত্যেক শিল্পীরই থাকে, আমারও আছে। এখন যেহেতু ডিজিটাল যুগ, এ সময়ে পৃথিবীর যে কোনো দেশে বসেই আপনি আপনার মেধা কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত এবং পরিচিত করতে পারেন। সে জায়গা থেকে আমি বলতে পারি, দেশের শিল্পীরা যদি ঠিকভাবে সুযোগ পান, তাহলে আমাদের বাংলা গানও একদিন বিলবোর্ড টপ চার্টে আসবে। কারণ আমাদের দেশে অনেক মেধাবী শিল্পী আছেন, যারা সুযোগ পেলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের ভালোভাবে মেলে ধরতে পারবেন। এটি আমি নিজের ক্ষেত্রেও বিশ্বাস করি। এ ছাড়া আমি সবসময় নিজের গানের মাধ্যমে দেশকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করি। কারণ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গানের মাধ্যমে ভালো কিছু করতে পারলে তখন গর্ব হয়।
মন্তব্য করুন