চলতি অর্থবছর বাংলাদেশে বাজারমূল্যের দিক দিয়ে মোট দেশজ উৎপাদনে ৫ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। মঙ্গলবার সাম্প্রতিক গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১-২২ অর্থবছর বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয় ৭ দশমিক ১ শতাংশ। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, নীতিগত অনিশ্চয়তা এবং দুর্বল চাহিদা বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি মন্থর করবে। তবে আগামী দুই অর্থবছর নিয়ে আশাবাদী প্রতিষ্ঠানটি। মূল্যস্ফীতির চাপ হ্রাস, সংস্কারকাজ বাস্তবায়নের পাশাপাশি পরিবহন ও জ্বালানি অবকাঠামোবিষয়ক মেগা প্রকল্পগুলো শেষ হওয়ায় ২০২৩-২৪ অর্থবছর ৬ দশমিক ২ ও ২০২৪-২৫ অর্থবছর ৬ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বর্তমানে ডলার সংকট নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ক্রমাগত আমদানি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিচ্ছে। সেইসঙ্গে দেশটিতে শিল্প উৎপাদন এবং সেবা খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে জ্বালানি ঘাটতি। কর্মসংস্থানে উন্নতি হওয়া সত্ত্বেও উপার্জন এখনো সেই অনুপাতে বাড়েনি। এসব কারণে চলতি অর্থবছর বাংলাদেশে বাজারমূল্যের দিক দিয়ে মোট দেশজ উৎপাদনে ৫ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় উৎপাদনের তিন-চতুর্থাংশ উৎপাদন করে ভারত। চলতি বছরের শুরুতে দেশটিতে উৎপাদন কমেছে।
২০২১-২২ অর্থবছর দেশটিতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ১ শতাংশ হলেও ২০২২-২৩ অর্থবছর ৭ দশমিক ২ শতাংশের পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। চলতি অর্থবছর (এপ্রিল ২৩-মার্চ ২৪) দেশটিতে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পূর্বাভাসে বলা হয়, ভুটান, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় প্রবৃদ্ধি হবে যথাক্রমে ৪ দশমিক ৫, ৪ দশমিক ১, দশমিক ৪ ও ঋণাত্মক ৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
দক্ষিণ এশিয়ায় চলতি বছর ৫ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করছে বিশ্বব্যাংক। তবে আগামী বছর প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য হারে কমে ৫ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে। এ অঞ্চলের বেশ কিছু দেশে সরকারি ও বিদেশি ঋণ বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এ ছাড়া কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। সেইসঙ্গে আছে আর্থ-সামাজিক উদ্বেগ। এ ধরনের সংকটে উৎপাদন কমতে পারে।
আর দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এ অঞ্চলের অর্ধেকেরও বেশি দুই দশক ধরে এক বা একাধিক জলবায়ুসম্পর্কিত বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও উন্নয়নের ঝুঁকি বাড়ছে, স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানো জরুরি। ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী ২ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। ২০২২ সালে এ হার ছিল ৩ দশমিক ১ শতাংশ। বিশ্বের শীর্ষ কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদহার বাড়ানোয় বিকাশমান বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোতে আর্থিক চাপের ঝুঁকি তীব্র হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। বিকাশমান বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে গত বছর ৪ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও এবার এ হার ২ দশমিক ৯ শতাংশ নির্ধারণ করেছে বিশ্বব্যাংক।
মন্তব্য করুন