রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) নির্বাচন অবৈধভাবে আয়োজন করার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে স্বাধীন নিরপেক্ষ কমিশনের অধীনে নির্বাচন চেয়ে আদালতে রিট করার পর আদালত নির্বাচন স্থগিত করার নির্দেশ দিলেও সেটি মানা হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আদালতে রিটকারী ব্যবসায়ীদের পক্ষে এ অভিযোগ করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আমানউল্লাহ।
আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে পাতানো নির্বাচনের পাঁয়তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে বন্ধ করা না হলে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
আইনজীবী মো. আমানউল্লাহ বলেন, বারভিডার নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের শুরুতে। কিন্তু নিয়মবহির্ভূতভাবে তৎকালীন সরকারের আস্থাভাজন আব্দুল হকের নেতৃত্বাধীন আজ্ঞাবহ কমিটি বহাল রাখা হয়। এই আব্দুল হক আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সহস্রাধিক গাড়ি আমদানি করে ৯০ পার্সেন্ট অবচয়ের সুযোগ নিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। ২০২১ সালে বারভিডার সভাপতি থাকাকালে আব্দুল হকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ উত্থাপিত হলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এ ছাড়া তিনি বলেন, ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন উপসচিব ড. মো. আলম মোস্তফা একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সেই প্রতিবেদনে আব্দুল হক চক্রের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। তারপরও আব্দুল হক গংদের বিরুদ্ধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রহস্যজনকভাবে আইনানুগ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এই আইনজীবী আরও বলেন, এরকম অহরহ অপকর্মের হোতা আব্দুল হকের নেতৃত্বে সম্প্রতি একটি প্যানেল গঠন করে বারভিডার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এর সভাপতি প্রার্থী আব্দুল হক নিজেই। এই প্যানেলে তার সঙ্গে রয়েছেন জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় অভিযুক্ত রিয়াজ রহমান। যার বিরুদ্ধে ছাত্র হত্যার অভিযোগে মামলা রয়েছে। পুলিশের কাছে তিনি পলাতক থাকলেও বাস্তবে চালাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচারণা।
পাশাপাশি তিনি বলেন, এছাড়াও এই প্যানেলের অন্যদের বিরুদ্ধেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান, ছাত্র হত্যাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এই প্যানেল বেআইনিভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য পর্দার আড়ালে থেকে আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন দিয়ে বারভিডার পাতানো নির্বাচন সম্পন্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে। এক প্রশ্নের জবাবে মো. আমানউল্লাহ বলেন, গত ১ নভেম্বর বারভিডার বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে স্বাধীন নিরপেক্ষ কমিশনের অধীনে নির্বাচন চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন সংগঠনটির সদস্য মোহাম্মদ দিনুল ইসলাম। এই আবেদনের শুনানি শেষে গেল ৯ ডিসেম্বর সাত দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আদেশ দেন হাইকোর্ট।
তিনি আরও বলেন, আদালতের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ২৩ ডিসেম্বর অভিযোগের শুনানির দিন ধার্য করে ২১ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে আদালতকে বিষয়টি অবগত করার পর নির্বাচন স্থগিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরও বারভিডায় নির্বাচনের প্রস্তুতি অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন