বিগত সরকারের আমলে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে (এনবিএফআই) নজিরবিহীন লুটপাট হয়েছে। এতে দেশের সিংহভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠান দুর্বল হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ১৫ আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে লিকুইডেশন বা বিলুপ্তির চিন্তা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কালবেলার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন কালবেলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক শেখ হারুন ও নিজস্ব প্রতিবেদক এ জেড ভূঁইয়া আনাস।
আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, আমরা এ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাচাইবাছাই করেছি। দেখেছি ১৫ থেকে ১৬টি প্রতিষ্ঠান একেবারে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় আছে। এদের ৯৯ শতাংশ ঋণ খেলাপি। আমরা তাদের কাছে জানতে চেয়েছি, তোমাদের লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না। আশা করি এ সপ্তাহের মধ্যে তাদের কাছ থেকে জবাব পাব।
গভর্নর বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে বসে একটা পরিকল্পনা করব, কীভাবে এই ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে সামলানো যায়—হয় তাদের লিকুইডেশন করতে হবে, নয়তো অন্যকোনো ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি আমরা ভাবছি কীভাবে ডিপোজিটরদের ক্ষতি কমানো যায়। আমরা ডিপোজিটরদের স্বার্থ রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। যদিও এখানে সরকার আইনি দায়বদ্ধ নয়, কারণ তারা নিজের ইচ্ছায় এখানে এসেছে এবং সরকারের কোনো গ্যারান্টি নেই। তবুও আমরা মনে করি সরকারের একটা নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। লিকুইডেশন অবশ্যই একটি বিকল্প।
তিনি বলেন, অনেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হতে পারে। তবে এসব প্রতিষ্ঠান মার্জ করে বড় সুবিধা পাওয়া যাবে না। আসলে আমাদের দেশে এত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনও ছিল না। ৩৫টি থাকার দরকার ছিল না, ১৫টি না থাকলেও কোনো ব্যাপার হতো না। বাকি ২৪ কিংবা ২০টি প্রতিষ্ঠান ভালোভাবে চললেই কাজ হবে।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমাদের কাছে এত প্রতিষ্ঠান ম্যানেজ করার যথাযথ দক্ষতা নেই। ভালো ম্যানেজমেন্ট, এমডি, ডিএমডি বা পরিচালক হিসেবে ভালো লোক পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। আজ আমাকে বলা হয়েছে ৮ থেকে ১০টি জায়গায় কোথায় ভালো ডাইরেক্টর দেব, সেটা খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। তাই আমাকে বুঝদার হয়ে কাজ করতে হবে। যদি ভালো টপ ম্যানেজমেন্ট দিতে না পারি, তাহলে একটা ব্যাংক চালানো সম্ভব নয়।
মন্তব্য করুন