আমদানি দায় মেটাতে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জুলাই-আগস্টের এক দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারের বিল পরিশোধের পর রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ আইএমএফ স্বীকৃত বিপিএম৬ অনুযায়ী পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার।
১১ দিন আগেও গত ৩০ আগস্ট যা ছিল ২৩ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে গতকাল রোববার দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘নিজস্ব হিসাবে’ গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার, যা ১০ দিন আগে ছিল ২৯ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।
গত জুলাই-আগস্ট মাসের এক দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার আকু দায় পরিশোধ করার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক।
তিনি বলেন, আকুর দায় পরিশোধের পর গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। তবে বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ জানাননি তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত ৩০ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘নিজস্ব হিসাবে’ গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।
গতকাল তা দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে গত ১১ দিনে বাংলাদেশের গ্রস রিজার্ভ কমেছে এক দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার।
গত ৩০ আগস্টে একই তথ্যে থাকা বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ থেকে এক দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে রোববার বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ স্থিতি দাঁড়ায় ২১ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার।
এর আগেরবার আকুর দায় শোধ শেষে গত জুলাই মাসে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ সাত বছর পর ৩০ বিলিয়নের নিচে নেমে হয়েছিল ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার।
আমদানি দায় পরিশোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশের ব্যালেন্স অব পেমেন্টে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। সেই ঘাটতি সামাল দিতে গত জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ সমঝোতায় যায় বাংলাদেশ।
ওই সময়ে সংস্থাটি পূর্বাভাস দিয়ে বিবৃতিতে বলেছিল, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষ নাগাদ ৩০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসবে।
ঋণ সমঝোতার পর আন্তর্জাতিক এ সংস্থার পরামর্শ আসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গণনায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিপিএম৬ (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) পদ্ধতি অনুসরণ করার।
আইএমএফের পদ্ধতিতে হিসাব করলে বৈদেশিক সম্পদ গণনায় সব বৈদেশিক দায় ও ঋণ এবং রিজার্ভের অর্থ অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করলে তা মূল রিজার্ভ থেকে বাদ যাবে।
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ- এই ৯টি দেশ আকুর সদস্য ছিল। তবে রিজার্ভ সংকটে পড়ে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে আকু থেকে বেরিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
আকুর সদস্য দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে, তার বিল ২ মাস পরপর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মেয়াদের বিল পরিশোধ করতে হবে আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে।
মন্তব্য করুন