

গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রথম বছরেই বাংলাদেশের অর্থনীতি তুলে ধরেছে এক চমকপ্রদ সাফল্যের গল্প। সর্বশেষ প্রকাশিত অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে রেকর্ড ১৯.১৩ শতাংশ। এই প্রবৃদ্ধি শুধু দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বার্তাই নয়, বরং বৈশ্বিক মানদণ্ডেও এক বিরল দৃষ্টান্ত, কারণ সাধারণত বড় রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বিনিয়োগ কমে যায়।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশের অর্থনীতি উল্টো পথে গেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়—শ্রীলঙ্কায় (২০২২ সালের পর) এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে (২০১৯ সালের পর) ২৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে (২০২১ সালের পর) ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে (২০১৪ সালের পর) ৬১.২১ শতাংশ, মিসরে (২০১১ সালের পর) ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় (১৯৯৮ সালের পর) কমেছে ১৬১.৪৯ শতাংশ।
এই বৈশ্বিক হ্রাসপ্রবণতার বিপরীতে বাংলাদেশের এফডিআই বৃদ্ধিকে বিশেষজ্ঞরা দেখছেন দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন হিসেবে।
বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) আশিক চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো শত প্রতিকূলতার মধ্যেও বাউন্স ব্যাক করার অসাধারণ ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তারই প্রমাণ। সাধারণত গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টো চিত্র দেখছি। সঠিক অর্থনৈতিক নীতিমালা, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর আন্তরিকতা এবং বেসরকারি খাতের অদম্য স্পৃহাই এই সাফল্যের মূল কারণ।’
তিনি আরও জানান, ‘সব সমস্যার সমাধান আমরা এখনো করতে পারিনি, তবে সদিচ্ছার কোনো অভাব ছিল না। শিগগিরই আমরা আমাদের সারা বছরের একটি আমলনামা বা রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করবো।’
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার মণ্ডল স্বাক্ষরিত এই তথ্যটি প্রকাশ করা হয় আজ সোমবার।
মন্তব্য করুন