দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা পর ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেন।
রোববার সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর মালিবাগ রেললাইনে বাংলাদেশ রেলওয়ের অস্থায়ী শ্রমিকরা অবস্থান নেন। তারা রেললাইন অবরোধ করে স্লোগান দিতে থাকেন। মাসুদ সারওয়ার জানান, দুপুর পৌনে ৩টার পর ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু হয়। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ৭টি ট্রেন আটকা পড়ে। পরে সব ট্রেন একে একে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে কমলাপুর থেকে ছেড়ে গেছে।
তিনি আরও জানান, বাকি ট্রেনগুলো পর্যায়ক্রমে ঢাকা থেকে নিজ নিজ গন্তব্যে ছেড়ে যাবে। তবে এসব ট্রেন নির্ধারিত সময় ছাড়তে না পারার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এর আগে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে সকাল ১০টার দিকে রেলের অস্থায়ী শ্রমিকরা রাজধানীর মালিবাগ রেলগেট অবরোধ করেন। এতে ঢাকার সঙ্গে বেশ কয়েকটি জেলার ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে বেশ কয়েকদিন ধরে কর্মসূচি পালন করছেন তারা। পরে দুপুরের দিকে রেলওয়ের আন্দোলনকারী শ্রমিকদের মালিবাগ রেললাইন থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ।
শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় কমলাপুর স্টেশনে কয়েক হাজার যাত্রী আটকা পড়েন। এ সময় তাদের বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
মাসুদ সারওয়ার বলেন, ট্রেন বিলম্ব হওয়ায় যেসব যাত্রী যাত্রা বাতিল করতে চেয়েছেন তাদের টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে যারা কাউন্টার থেকে টিকিট কেটেছেন, তারা কাউন্টার থেকেই টাকা ফেরত নিতে পেরেছেন। আর যারা অনলাইন থেকে টিকিট কেটেছেন, তারা অনলাইনের মাধ্যমে টাকা রিফান্ড নেওয়ার সুযোগ পাবেন।
আন্দোলনরত শ্রমিক মোহাম্মদ হোসেন কালবেলাকে বলেন, চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য গত ২৪ আগস্ট পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। কিন্তু গত মাসে রেলওয়ের মহাপরিচালক আমাদের বলে দিয়েছেন- চাকরি স্থায়ীকরণের ব্যবস্থা তারা করতে পারবে না। সরকার যদি চায়, তাহলে সরকার নিতে পারবে। কিন্তু আমরা কিছু করতে পারব না।
তিনি বলেন, গত আট আগস্ট রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছিলেন- তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের বিষয়ে কথা বলবেন। পরে ১৬ আগস্ট রেলমন্ত্রীর পঞ্চগড়ের বাড়িতে আমরা গিয়েছিলাম। তখন রেলমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়নি বলে জানান। এরপর ৩০ আগস্টের মধ্যে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করার কথা ছিল। তা না করায় আমরা আবারও আন্দোলনে নেমেছি। তিনি জানান, পুলিশ আমাদের বেশ কয়েকজন সহকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তিনি জানান, আমাদের সহকর্মীদের মুক্তি না দিলে দুই ঘণ্টা পর সারা দেশে একযোগে কর্মবিরতি পালন করা হবে।
উল্লেখ্য, ৪২ জেলায় রেলের অস্থায়ী কর্মচারীর সংখ্যা সাত হাজার।
মন্তব্য করুন