বর্তমান বাজারমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মাসিক ভাতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন বেসরকারি পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকরা। তারা বলেন, বর্তমান মাসিক ভাতা ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে। আগামী ১২ জুনের মধ্যে এ দাবি না মানলে ১৩ জুন থেকে সারা দেশে একযোগে কর্মবিরতিতে যাবেন প্রায় সাড়ে সাত হাজার বেসরকারি পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকরা।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) আবদুল ওহাব মিনার।
তিনি বলেন, আজকে সরকার দেশের মানুষকে ভালো চিকিৎসাসেবা দেওয়ার কথা বলছে। অথচ যে চিকিৎসক সেবাটা দেবেন, তার জীবনই মানবেতর, দুর্বিষহ। তারা আজকে খুবই নাজুক পরিস্থিতিতে দিনাতিপাত করছেন। সরকারের উচিত দাবিটুকু মেনে তাদের চিকিৎসাসেবায় মনোনিবেশ করতে সহযোগিতা করা।
সলিমুল্লাহ মেডিকেলের প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসক বেনজির বেলাল খান বলেন, সারা দেশের প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকদের প্রতি মাসে মাত্র ২০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে আমাদের কোনোভাবেই জীবন ধারণের ব্যয় মেটানো সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, সরকারের আরও বেশি কঠোর নীতিমালা রয়েছে যে এ প্রশিক্ষণকালীন আমরা বাইরে কোনো হাসপাতালে প্র্যাকটিস করতে পারব না।
খুলনা মেডিকেলের প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসক মাসুদুল ইসলাম আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, আমি আজকে খুলনা থেকে ঢাকা এসেছি টাকা ধার করে, কারণ আমার কাছে টাকা নেই। আমার সংসার রয়েছে ছোট একজন সন্তান রয়েছে; সামনে ঈদ আসছে, কীভাবে সংসার চালাব অথচ আমার কাছে কোনো টাকাই নেই। সরকারের কাছে অনুরোধ, আমাদের ভাতার টাকা বাড়িয়ে আমাদের এই দুর্বিষহ জীবন থেকে বাঁচান।
ডাক্তার তুহিন হাসান বলেন, এ মানবেতর জীবনযাপন করে আমরা ভালোভাবে চিকিৎসাসেবায় মনোনিবেশ করতে পারছি না। নিজের পিছুটান থাকলে তো আসলে কোনো কিছুতেই মনোযোগ আসে না।
লিখিত বক্তব্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রশিক্ষণার্থী হাবিবুর রহমান সোহাগ বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে বেসরকারি পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতা বাংলাদেশের চেয়ে অনেকটা বেশি। যা ভারতে দেওয়া হয় ৬৭ হাজার ৬৮৩ টাকা, পাকিস্তানে ৩৮ হাজার টাকা। অথচ চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে ৬৭ শতাংশ টাকা অব্যবহৃত রয়ে গেছে। মন্ত্রণালয়ের এমন চরম ব্যর্থতার কারণে আমরা খুবই কষ্ট পাচ্ছি। অথচ সকল বেসরকারি পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণার্থীর ভাতা ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করলে বাড়তি খরচ হবে মাত্র ৯ কোটি টাকা।
মন্তব্য করুন