হত্যাসহ ১০ মামলার আসামি কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াসিম বাহিনীর প্রধান শরাত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা গেছে, গ্রেপ্তার ওয়াসিম চকরিয়া-পেকুয়ার বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং অর্থ ও অবৈধ অস্ত্রের জোগানদাতা হিসেবে পরিচিত। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) তাকে আদালতে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।
পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ইলিয়াছ তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মগনামার সাবেক চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম এক সময় দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার ও যুদ্ধাপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের নেতা মীর কাশেম আলীর দেহরক্ষী ছিলেন। এলাকায় ফিরে বিএনপির রাজনীতিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চেয়ারম্যান র্নিবাচিত হন। এরপরই জড়িয়ে পড়েন ইয়াবা ব্যবসা ও সাগরে ট্রলার ডাকাতির মতো ঘৃণ্য অপরাধে।
এ ছাড়া এলাকায় নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যান। তার হাতে নির্যাতিত হয়েছেন প্রায় অর্ধশত পরিবার। বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ওয়াসিম পেকুয়ায় জাফর আলমের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে থাকেন। তার হেফাজতে একে ৪৭ রাইফেলের মতো অত্যাধুনিক বিদেশি অস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রের মজুত রয়েছে বলে বলেও জানান তারা।
সম্প্রতি অন্ধকার জগত ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আকুতি জানান কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের আফজলিয়াপাড়ার মৃত বদিউর রহমানের ছেলে আবু সৈয়দ। মৃত্যুর আগে আবু সৈয়দ এক ভিডিও বার্তায় বলেন, আমার ৩টি সন্তান রয়েছে। আমি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই। আমি ওয়াসিমের হাত থেকে বাঁচতে চাই। কিন্তু আমাকে ভালো হওয়ার সুযোগ দিচ্ছেনা ওয়াসিম। সে আমাকে জিম্মি করে আমাকে দিয়ে অপরাধ কর্মকাণ্ড চালানোর অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি তার কথা মতো কাজ না করায় এবার আমাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। আমার যদি মৃত্যু হয় এরজন্য দায়ী থাকবে ওয়াসিম। আমি ওয়াসিমের হাত থেকে বাঁচতে চাই।
তার এ বক্তব্য ভাইরাল হওয়ার কয়েকদিন পর গত ১০ অক্টোবর বিকেলে প্রকাশ্যে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর তার ডান পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে উল্লাস করে হামলাকারিরা। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার খুনের নির্দেশদাতা ওয়াসিমের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।
পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, আবু সৈয়দ হত্যার সুনিদ্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে বিজ্ঞ আদালতে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন