চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড় কাটা বন্ধে প্রশাসন একাধিক অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু এরপরও সমানতালে চলছে পাহাড় কাটা। পাহাড় কেটে মাটি নেওয়া হচ্ছে ইটভাটায়। এ ছাড়া ফসলি জমি ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণসহ বিভিন্ন কাজে পাহাড় কাটা মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পোমরা, কোদালা, সরফভাটা, ইসলামপুর, দক্ষিণ রাজানগরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে পাহাড় কাটা হচ্ছে। কিছু প্রভাবশালী অসাধু মহল পাহাড় কেটে বিভিন্ন এলাকায় মাটি নিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাইনীপাড়া গ্রামে একটি পাহাড় কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। অথচ মসজিদসংলগ্ন পাহাড়টি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়রা কবরস্থান হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন।
এ বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নুরুল হায়দার নামে এক ব্যক্তি। অভিযোগে একই এলাকার মো. ইদ্রিস চৌধুরীর ছেলে রমজান আলীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
পাহাড় কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রমজান আলী বলেন, পাহাড় থেকে ধসে পড়া মাটিগুলো শুধু সরিয়ে নিচ্ছি। আমি পাহাড় কাটছি না।
তবে তার এই বক্তব্যের দ্বিমত পোষণ করেন অভিযোগকারী নুরুল হায়দার। তিনি জানান, পাহাড়টি তাদের মালিকানাধীন হলেও দীর্ঘদিন ধরে কবরস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তারা বেআইনিভাবে মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করছে। এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে তাদের মালিকানাধীন জায়গাসহ কবরস্থানেরও ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া যেভাবে পাহাড়টি কাটা হয়েছে, বর্ষাকালে এটি ধসে পড়ে আশেপাশে বসবাসকারী বাসিন্দা ও পাশের স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে বলে তিনি জানান।
সরেজমিনে দেখা যায়, পোমরা ইউনিয়নের গোচরা সড়ক পথে উত্তর পাশে এক কিলোমিটার গেলেই ছাইনীপাড়া সড়কের পাশেই দূর থেকে পাহাড় কাটার দৃশ্যটি দেখা যাচ্ছে। নির্বিচারে পাহাড়টি কাটা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে অনেকটা প্রকাশ্যে পাহাড়টি কেটে সাবাড় করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান। এটি কেটে একেবারে খাড়া করে ফেলা হয়েছে।
পাহাড়ের অপর প্রান্তে একাধিক কবরস্থান ও নিচে মসজিদ, পূর্বপাশে একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলও রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড়টি কাটায় যে কোনোমুহূর্তে এটি ধসে গিয়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। তাই দ্রুত জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ পাহাড় কাটা বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয় জনসাধারণ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান মেহেবুব বলেন, পাহাড় কাটা বন্ধ ও ফসলি জমি রক্ষায় প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কোন এলাকায় পাহাড় কাটা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন