রিয়ার অ্যাডমিরাল ড. খন্দকার আক্তার হোসেন, এনইউপি, এনডিসি, পিএসসি, পিএইচডি বুধবার (০৭ মে) বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির পঞ্চম ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
তিনি ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে একজন ক্যাডেট অফিসার হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি একজন চৌকস প্রকৌশলী, নৌ স্থপতি এবং কর্মকর্তা হিসেবে গত ৩৫ বছর যাবৎ দেশ ও বিদেশের সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (BUET) হতে নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিশেষ কৃতিত্বের সঙ্গে বিএসসি এবং এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি একটি প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া হতে ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট ও Advanc0ed Technology-তে PhD ডিগ্রি লাভ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই থেকে জাহাজ নির্মাণ প্রশিক্ষণ তথা ISMC এর ওপর বিশেষ ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি BUET থেকেও নেভাল আর্কিটেকচার ও Heavy Industry-তে দ্বিতীয়বার PhD ডিগ্রি অর্জন করেন। BUET থেকে এ বিষয়ে তিনিই প্রথম ও একমাত্র PhD করতে সক্ষম হয়েছেন।
তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং স্পেশালাইজেশন, পিএসসি, এনডিসিসহ সামরিক বাহিনীর প্রয়োজনীয় সকল কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। তিনি অত্যাধুনিক মিসাইল ফ্রিগেট ও কর্ভেটসহ বিভিন্ন যুদ্ধজাহাজে প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। এ ছাড়াও তিনি নেভাল একাডেমি, মেরিন একাডেমি, এনআইটি, এমআইএসটিতে ইন্সট্রাক্টর/প্রফেসর হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি খুলনা শিপইয়ার্ড, চট্টগ্রাম ড্রাই ডক, নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড, উচাং শিপইয়ার্ড এর মত নামকরা শিপইয়ার্ড সমূহে জেনারেল ম্যানেজার (শিপ বিল্ডিং), জেনারেল ম্যানেজার (প্রডাকশন), জেনারেল ম্যানেজার (প্লানিং, ডিজাইন ও কিউসি) ইত্যাদি পদে কর্মরত ছিলেন।
এ ছাড়াও তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন সুদানে স্টাফ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি অত্যাধুনিক স্বাধীনতা ক্লাস সর্বাধুনিক মিসাইল কর্ডেটের প্রধান প্রকৌশলী, স্থপতি ও নকশাকার হিসেবে নিযুক্ত হয়ে চীন থেকে জাহাজদ্বয় নির্মাণে বিশেষ অবদান রেখেছেন। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে মেম্বার (ইঞ্জিনিয়ার) হিসেবে দায়িত্ব পালন অবস্থায় বে-টার্মিনাল, মাতারবাড়ী বার্ণিজ্যিক বন্দর, ISPS কোড বাস্তবায়ন, লয়েডস রেজিস্ট্রার মোতাবেক সর্বাধিক সংখ্যক কন্টেইনার হেন্ডেলিং এর রেকর্ডসহ উল্লেখযোগ্য বেশকিছু প্রজেক্ট ও কার্যক্রম সম্পাদন করেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লি., খুলনা শিপইয়ার্ড লি., চট্টগ্রাম ড্রাইডক লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োজিত হয়ে প্রতিষ্ঠানসমূহকে লাভজনক শিল্পকারখানায় পরিণত করতে তথা দেশীয় জাহাজ নির্মাণ ও বৃহৎ শিল্পের বিকাশে অবদান রেখেছেন। তিনি MIST-তে বিভাগীয় প্রধান ও ডিন হিসাবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সিএসডি হিসেবে বিএন ডকইয়ার্ডে দায়িত্ব পালনকালে যুদ্ধ জাহাজ সংরক্ষণ, গবেষণা, R&D, CNRD এবং ডকইয়ার্ড টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন।
অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পূর্বে তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদ সহকারী নৌ প্রধান (ম্যাটেরিয়েল) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (IEB), যুক্তরাজ্যের রয়েল ইনস্টিটিউশন অব ন্যাভাল আর্কিটেক্টস (RINA), এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ মেরিন এন্ড শিপিং প্রফেশনালস (IAMSP) একজন সম্মানিত ফেলো। কৃতিত্বপূর্ণ গবেষণা কর্মের ধারাবাহিকতায় তার একশত পঞ্চাশটিরও বেশি গবেষণা প্রবন্ধ স্বনামধন্য আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), ইন্টারনেট অব থিংস (IoT), Block-chain, রোবটিক্স, স্যাটেলাইট যোগাযোগ, ব্লু-ইকোনমি, শিপ রিসাইক্লিং, শিপবিল্ডিং, জ্বালানি সমাধান, কারিগরি শিক্ষা ও কর্মসংস্থান, পোর্ট ম্যানেজমেন্ট এবং উন্নত প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ডা. শরমিন হাসানের সঙ্গে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ। তাদের রয়েছে যমজ কন্যা ও দুই পুত্রসন্তান।
মন্তব্য করুন