বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সোসাইটি দিবস-২০২৫ উপলক্ষে, বাংলাদেশ সরকার টেলিকম ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে অবদানের জন্য ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র (ইউআইইউ) কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর খন্দকার আবদুল্লাহ আল মামুন, পিএইচডি -কে জাতীয় সম্মাননা প্রদান করেছে।
শনিবার (১৭ মে) ঢাকায় আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে এই সম্মাননা প্রদান করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফায়েজ আহমেদ তায়েব, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত), মো. শীষ হায়দার চৌধুরী, এনডিসি, সচিব, আইসিটি বিভাগ এবং মোছা. মাহবুবা ফারজানা, সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
খন্দকার এ. মামুন, পিএইচডি, ইউনাইটে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র (ইউআইইউ) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিষয়ের অধ্যাপক, এইমস ল্যাব, ইউআইইউ ও বাংলাদেশে প্রথম ‘রিসার্চ-টু-কমার্শিয়ালাইজেশন’ প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অফ রিসার্চ, ইনোভেশন, ইনকিউবেশন এন্ড কমার্শিয়ালাইজেশন (আইরিক), ইউআইইউ-এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি গবেষণা, উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা কার্যক্রমের মাধ্যমে গত ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে প্রযুক্তি নির্ভর সমাধানের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন।
সবার জন্য সহজলভ্য, সাশ্রয়ী ও মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ (UHC) অর্জনের লক্ষে, তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সিমেড হেলথ, একটি রিসার্চ-টু-কমার্শিয়ালাইজড এই ফর হেলথকেয়ার উদ্যোগ। এই উদ্যোগ বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে যা অন্যান্য নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে (LMICs) সম্প্রসারণের সক্ষমতা রাখে।
সিমেড ‘ইন্টেলিজেন্ট জেনারেল প্র্যাকটিশনার (iGP) একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক এবং কমিউনিটি হেলথ ওয়ার্কারদের মাধ্যমে পরিচালিত মডেল দ্বারা এ পর্যন্ত ৪০ লক্ষাধিক মানুষকে সেবা প্রদান করেছে। iGP মডেলের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে মানুষের দোরগোঁড়ায়, তৈরি হয়েছে ডিজিটাল স্বাস্থ্য অ্যাকাউন্ট এবং প্রদান করা হয়েছে প্রতিরোধমূলক ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা- যার মাধ্যমে দরিদ্রতা হ্রাস এবং ব্যক্তিগত ব্যয়ে স্বাস্থ্যসে বা গ্রহণের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো সম্ভব হয়েছে। এই মডেল নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর ৭ বিলিয়নেরও বেশি মানুষের স্বাস্থ্যসেবার সহজলভ্যতা ও মানোন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রাতিষ্ঠানিক নেতৃত্বের পাশাপাশি, অধ্যাপক মামুন ব্রেইন-কম্পিউটার ইন্টারফেস, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহায়ক প্রযুক্তি এবং শিক্ষা প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণায় আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাত। তার উদ্ভাবন ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করেছে বহু খাতে। নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে, তিনি বাংলাদেশ সরকারের একজন গুরুত্বর্পূর্ণ পরামর্শক হিসেবে ন্যাশনাল এই স্ট্র্যাটেজি, ডিজিটাল হেলথ স্ট্র্যাটেজি, প্রতিবন্ধীবান্ধব নীতি এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করেছেন। তার নেতৃত্ব ও চিন্তাধারা বাংলাদেশকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রস্তুতিতে সহায়তা করছে।
এই সম্মাননা অধ্যাপক মামুনের প্রযুক্তি নির্ভর উদ্ভাবন, ডিজিটাল স্বাস্থ্য অন্তর্ভুক্তি এবং টেকসই উন্নয়নের প্রতি অটল প্রতিশ্রুতির স্বীকৃতি। এটি বাংলাদেশের সেই অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করে যে-ডিজিটাল রূপান্তরের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক সমতা উন্নয়নের মাধ্যমে একটি আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, সংযুক্ত ও টেকসই সমাজ গড়ার পথেই দেশ এগিয়ে চলছে।
মন্তব্য করুন