সারা বছর ম্যাংগো ড্রিংক, জুস, ম্যাংগো বারসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী তৈরির লক্ষ্যে চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই আম সংগ্রহ ও পাল্পিং কার্যক্রম শুরু করেছে দেশের সর্ববৃহৎ কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান প্রাণ। সোমবার (১৯ মে) রাজশাহীর গোদাগাড়ি বরেন্দ্র ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে আম সংগ্রহ ও পাল্পিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রাণ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা।
চলতি বছর প্রাণের চুক্তিভিত্তিক আমচাষিদের কাছ থেকে ৬০ হাজার টন আম সংগ্রহ করে পাল্প বানাবে প্রাণ। এজন্য রাজশাহীর পাশাপাশি নাটোরের একডালায় প্রাণ এগ্রো লিমিটেড কারখানাতেও আম সংগ্রহ ও পাল্পিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
উৎকৃষ্টমানের পাল্প সংগ্রহ করতে প্রতি বছরের মতো এবছরও প্রাণ আমের জন্য বিখ্যাত জেলাগুলো থেকে আম সংগ্রহ করছে। নাটোর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, দিনাজপুর, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও সাতক্ষীরা জেলা থেকে আম সংগ্রহ করছে প্রাণ। এসব জেলায় প্রাণ এর ১২ হাজার চুক্তিভিত্তিক আমচাষি রয়েছেন যাদের বাগান থেকে আম সংগ্রহ করে সরাসরি পাল্প তৈরির জন্য কারখানায় নিয়ে আসা হয়।
প্রাণ চুক্তিভিত্তিক কৃষকদের কাছ থেকে পাল্পের জন্য সবচেয়ে ভালো গুটি ও আশ্বিনা জাতের আম সংগ্রহ করে। আম চাষিরা যেন ভালো ফলন পায় সেজন্য প্রাণ সারা বছর তাদের প্রশিক্ষণসহ নানানভাবে সহায়তা দিয়ে থাকে। তাই বাণিজ্যিকভাবে ব্যপক সম্ভাবনাময় হওয়ার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে এসব জেলাতে গুটি ও আশ্বিনা জাতের আমের চাষ বাড়িয়েছেন খামারিরা।
প্রাণ খামারিদের কাছ থেকে আম আনার পর কয়েকটি ধাপে সেগুলো প্রসেসিং করে পাল্প তৈরি করে। প্রথমে আমগুলো পাকা কি-না তা দেখা হয়, পোকা-রোগমুক্ত এবং পচা কি না তা পরীক্ষা করা হয়। এরপর ল্যাবে পাঠানো হয় আমে ক্ষতিকর উপকরণের উপস্থিতি আছে কিনা জানার জন্য। পরে অটোমিটেক মেশিনে পাল্প তৈরি হলে অ্যাসেপটিক ব্যাগে করে কোল্ড স্টোরেজে সারাবছর ধরে জুস তৈরির জন্য সংরক্ষণ করা হয়।
পাল্প সংরক্ষিত স্থান থেকে চাহিদা অনুয়ায়ী ম্যাংগো ফ্রুট ড্রিংক ও জুস তৈরির কারখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কারখানায় স্বয়ংক্রিয় মেশিনে কোনো ধরনের হাতের স্পর্শ ছাড়াই উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয় প্রাণের ম্যাংগো ফ্রুট ড্রিংকস ও জুস, যা দেশের পাশাপাশি বিশ্বের ১৪৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইলিয়াছ মৃধা বলেন, ক্রেতারা যেন উৎকৃষ্ট মানের ফ্রুট ড্রিংক কিংবা জুস খেতে পারে সেজন্য আমরা পণ্যের কাঁচামালকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। এজন্য আমের জন্য বিখ্যাত অঞ্চলে আমাদের কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছি। এতে আম চাষিরা খুব সহজে আমাদের কাছে পণ্য সরবরাহ করতে পারছেন।
আম সংগ্রহের কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, কারখানায় শুরুতে গুটি আম সংগ্রহ ও পাল্পিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গুটি আম শেষ হলে আশ্বিনা আম থেকে পাল্প সংগ্রহ শুরু হবে। এ কার্যক্রম চলবে আমের সরবরাহ থাকা পর্যন্ত।
খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশে ফ্রুট ড্রিংক ও জুসের বাজার প্রায় ১৫০০ কোটি টাকার। এই বাজার আবার প্রতি বছর ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে।
মন্তব্য করুন