রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৪, ১১:৩৯ এএম
অনলাইন সংস্করণ

দুপুরে ঘুম থেকে ডেকে তোলায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা

ঘাতক সহিদার রহমান। ছবি : কালবেলা
ঘাতক সহিদার রহমান। ছবি : কালবেলা

রংপুরের বদরগঞ্জে সাত মাস আগে মারা যাওয়া নিলুফা ইয়াছমিন (৩২) আত্মহত্যা করেননি। গরুকে পানি খাওয়াতে স্বামীকে দুপুরে ঘুম থেকে ডেকে তোলায় ক্ষোভে নীলুফার স্বামী সহিদার রহমান তাকে গলাটিপে হত্যা করে। পরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা বলে প্রচার করা হয়।

সম্প্রতি এ ঘটনার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য সামনে আসে।

এ ঘটনায় শনিবার (১৩ জুলাই) রাতে পুলিশ ঘাতক স্বামী সহিদার রহমানকে গ্রেপ্তারের পর রংপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠালে তিনি হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

রোববার (১৪ জুলাই) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে রংপুর পুলিশ সুপার মো. শাজাহান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেপ্তার সহিদার রহমান উপজেলার ছোট হাজীপুর তেলিপাড়া গ্রামের আব্দুল হাই মেম্বারের ছেলে। ২০০৯ সালে উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ডাকেরহাট এলাকার আব্দুল মমিনের মেয়ে নিলুফা ইয়াসমিনকে বিয়ে করেন তিনি। এ দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে।

পুলিশ জানায়, ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঘটনার রাতে সহিদার রহমান স্থানীয় বাজারে নাইট গার্ডের ডিউটি শেষে তার নিজ বাড়িতে ভোরে ঘুমিয়ে পড়েন। দুপুরে স্ত্রী নীলুফা গরুকে পানি খাওয়ানোর জন্য স্বামীকে ঘুম থেকে ডাক দিলে তিনি রাগান্বিত হয়ে তার গলা চেপে ধরে। এতে নীলুফা নিস্তেজ হয়ে গেলে তাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানার ওপর ফেলে রেখে আলু ক্ষেতে পানি দিতে চলে যায়।

এর আধা ঘণ্টা পর সহিদার ফের ঘরে ঢুকে বাড়ির অন্য লোকদের সহায়তায় নিলুফার গলায় রশি লাগিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করার প্রচারণা চালান। পরে মৃত নিলুফার লাশ চিকিৎসার নামে বিকেলে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

খবর পেয়ে নীলুফার পরিবারের লোকজন বদরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যান এবং মেঝেতে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। একপর্যায়ে স্বামীর বাড়ির লোকজন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিলুফার মরদেহ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে ৯৯৯-এ কল করে পুলিশ ডেকে মরদেহ থানায় নেওয়া হয়।

নিহতের চাচাতো ভাই সাদিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দিতে চাইলেও তা নিতে রাজি হননি বদরগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা। তিনি একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

পুলিশ সুপার মো. শাজাহান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে স্বামী সহিদার রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনাটি সচেতনতার বার্তা দেয়। সমাজে বিভিন্ন সময় আত্মহত্যার খবর পুলিশের কাছে আসে। সন্দেহ হলে পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়। তখন বিভিন্ন লোকজন দিয়ে তদবির করে পুলিশের কাছ থেকে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই নেওয়ার চেষ্টা করে। আইন অনুযায়ী লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় বলেই আজ এমন একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উদ্‌ঘাটিত হলো। তাই এমন ঘটনা ঘটলে সবার উচিত পুলিশকে সহায়তা করা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাতের মধ্যে কখন কোথায় হতে পারে বজ্রবৃষ্টি

ইসরায়েলি হামলায় নিহত মোহাম্মদ কাজেমি কে

ইরান পরমাণু অস্ত্র বানাবে কি না, জানালেন প্রেসিডেন্ট

মঙ্গলবারও কর্মসূচি পালন করবেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা

চিন্ময়কে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

ইরান থেকে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নিচ্ছে ভারত

দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি: আমীর খসরু 

নতুন সামরিক নেতৃত্বে কাদের রাখল ইরান

সারা দেশে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস, কমবে তাপমাত্রা

হাত ও পায়ে ঝিনঝিনে ভাব হলে করণীয়

১০

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে : আইন উপদেষ্টা

১১

আবারও সচিবালয়ে বিক্ষোভ

১২

শিক্ষকের মর্যাদার গল্পে প্রশংসিত জোভান-কেয়া

১৩

ইডেন কলেজের পুকুরে ডুবে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

১৪

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে ককটেল বিস্ফোরণ, গ্রেপ্তার ১

১৫

ইসরায়েলকে যে হুঁশিয়ারি দিল পাকিস্তান

১৬

‘এখনও ফ্যাসিবাদী শক্তির হাত থেকে গণমাধ্যম পুরোপুরি মুক্ত নয়’

১৭

৬ দিনে যমুনা সেতুতে কত টোল আদায় হলো

১৮

মোসাদের গুপ্তচরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল ইরান

১৯

ঢাবিতে ৬ ককটেল উদ্ধার

২০
X