ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১:২১ এএম
অনলাইন সংস্করণ

বাদাম চাষে স্বপ্ন দেখছেন দিনাজপুরের কৃষকরা

ক্ষেত থেকে তুলে শুকানো হচ্ছে বাদাম। ছবি : কালবেলা
ক্ষেত থেকে তুলে শুকানো হচ্ছে বাদাম। ছবি : কালবেলা

উৎপাদন খরচ কম হওয়াসহ ফসলের আশানুরূপ লাভ পাওয়ায় চিনা বাদাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষকরা।

বাদাম রোপণের পর অন্য ফসলের মতো পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। নেই রাসায়নিক সারের ব্যবহার। অন্যান্য ফসলের চেয়ে চিনা বাদামের উৎপাদন খরচও কম। তাই আবহাওয়া ও জমির অবস্থা অনুকূলে থাকায় ফুলবাড়ী উপজেলার অনেক কৃষক এবার অন্যান্য জমি ছাড়াও পতিত জমিতেও চিনা বাদাম চাষ করেছেন।

কৃষকরা জানান, মার্চের থেকে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বাদাম রোপণ করা হয়, আর জুন থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বাদাম তোলা হয়। বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। তুলনামূলক কম পরিশ্রমে বেশি লাভ পাওয়ায় উপজেলার কৃষকরা ধানসহ অন্য ফসলের চেয়ে বাদাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ফলে ধানের ক্ষেতে এবার উৎসবমুখর পরিবেশে বাদাম তুলছেন কৃষক।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কৃষকদের বাদাম চাষে আগ্রহী করতে কৃষি বিভাগ থেকে ৬ জন কৃষককের প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে ১ দশমিক ৬ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করানো হয়েছে। এসব প্রদর্শনী প্লটের কৃষককে উন্নত জাতের বাদাম বীজ, জৈব জাতের বালাই নাশকসহ ক্ষেত পরিচর্যার জন্য নগদ দুই হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। কৃষি বিভাগের ৬টি প্রদর্শনী প্লটের বাইরেও ব্যক্তি বিশেষের উদ্যোগে বাদাম চাষ হচ্ছে। তবে উপজেলার পৌরসহ আলাদিপুর, খয়েরবাড়ী, দৌলতপুর ও শিবনগর ইউনিয়নের ছোট যমুনা নদীর দুপাশের বালু মিশ্রিত মাটি, দো আঁশ ও বেলে জাতীয় মাটিতে বাদাম চাষ হচ্ছে।

এদিকে ব্যক্তি উদ্যোগে উপজেলার আলাদিপুর ইউনিনের ছোট ভিমলপুর গ্রামের মৃত আছির উদ্দিনের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক ও তার স্ত্রী গোলাপী বেগম দম্পতি এ বছর ৩৭ শতাংশ জমিতে বাদাম চাষ করেছেন। এরইমধ্যে বাদাম তোলাও প্রায় শেষ পর্যায়ে।

কৃষক দম্পতি আব্দুর রাজ্জাক ও গোলাপী বেগম বলেন, নিত্য নতুন ফসল ফলানোর চেষ্টা থেকেই বাদাম চাষের উদ্যোগ। পরীক্ষামূলকভাবে ৩৭ শতাংশ জমিতে বাদাম রোপণ করা হয়েছিল। আবাদের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বাদামের উৎপাদন এবং লাভ দেখে এলাকার অন্য কৃষকরাও আগ্রহী হচ্ছেন।

সরকারি সহায়তাপ্রাপ্ত বাদাম চাষিরা জানান, প্রত্যেককেই ১৮ শতাংশ জমিতে বারি বিনা বাদাম-৬ জাতের বাদাম চাষ করছেন। নতুন ফসল হিসেবে ফলন ভালো হওয়ায় লাভও ভালো হবে। ক্ষেতের বাদাম তুলতে শুরু করেছেন। বাজারে বাদামের চাহিদা ও দাম দুটোই থাকায় উৎপাদিত বাদাম বিক্রি নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা নেই, বাজারে প্রতিকেজি বাদাম ১১৫ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, উচ্চমূল্যের ফসল বাদাম। এই ফসলের নিবিড়তা এবং তেল জাতীয় ফসলের চাষ বৃদ্ধিকরণের লক্ষ্যে ব্যক্তি বিশেষের চাষাবাদের পাশাপাশি কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ৬ জন কৃষকের মাধ্যমে প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে প্রায় ১ দশমিক ৬ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছে। এতে কৃষকরা আশানুরূপ লাভ পাচ্ছেন। প্রতি হেক্টরে আড়াই থেকে তিন মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও এ বছর তার চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে। চিনা বাদামের বীজে প্রায় ৫০ ভাগ তেল এবং ২২ থেকে ২৯ ভাগ আমিষ রয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পরিবেশ রক্ষায় ৮০ হাজার বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে : টুকু 

ক্ষমতায় এলে ১৮ মাসে এক কোটি কর্মসংস্থান গড়বে বিএনপি : আমিনুল হক

মিসরে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পেলেন ট্রাম্প

নেইমারের জন্য এখনও দরজা খোলা রেখেছেন আনচেলত্তি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষ ও প্রফেশনাল কোর্সের সব পরীক্ষা স্থগিত

ইতিহাস গড়ে ফুটবল বিশ্বকাপের টিকিট পেল কেপ ভার্দে

পলিথিনে মোড়ানো শপিং ব্যাগে মিলল নবজাতকের মরদেহ

রোমে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক

কলাবাগানে ডিপ ফ্রিজ থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার

অবশেষে বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে গাজা শান্তিচুক্তি সই

১০

জয়পুরহাট জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কের পদত্যাগ

১১

শরীয়তপুরে নির্যাতিত শিশুর পাশে তারেক রহমান

১২

‘ড. তোফায়েলের শূন্যতা বহু দশক অনুভূত হবে’

১৩

আওয়ামী লীগ নেত্রী কেকার মরদেহ উদ্ধার

১৪

স্থানীয় সমস্যা সমাধানের আশ্বাস আনোয়ারুজ্জামানের

১৫

পূজা পরিষদ ও মহানগর কমিটির প্রত্যাশা / সংকট সমাধানে এক হয়ে কাজ করার নজির অব্যাহত থাকুক

১৬

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে : পিএনপি

১৭

শেষ ওভারের নাটকীয়তায় প্রোটিয়াদের কাছে বাংলাদেশের হার

১৮

নিষিদ্ধ হওয়া ভিডিও নির্মাতাদের সুখবর দিল ইউটিউব

১৯

জাতিসংঘের ৮০তম বার্ষিকী অনুষ্ঠানে জামায়াতের অংশগ্রহণ

২০
X