গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) নগরভবনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুনে ভবনটির নিচতলা থেকে ছয়তলা পর্যন্ত পুড়ে ভষ্মীভূত হয়ে গেছে। ঘটনার তিন দিন পার হয়ে গেলেও মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের দপ্তরের আগুন নেভেনি।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরেও তার দপ্তরে ছাইয়ের ভেতর থেকে আগুনের ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে।
এর আগে সকালে ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই সকালে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা দপ্তরে আসেন। তারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করেন। তখন ৪০৬ নম্বর কক্ষে কয়েকটি ককটেল দেখতে পান পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। এ সময় নগর ভবনে বোমা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে কর্মীরা হুড়মুড় করে নেমে আসেন।
জানা গেছে, ৪০৬ নম্বর কক্ষটি মেয়রের একজন উপদেষ্টার। দুটি কার্টনে এই কক্ষে কয়েকটি ককটেল রাখা ছিল। পরে কয়েকজন কাউন্সিলর ও প্রধান প্রকৌশলী নূর ইসলাম তুষার ওই কক্ষে যান। দুজন কাউন্সিলর ককটেলের কার্টন দুটি নিচতলায় নিয়ে আসেন।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহীর কয়েকজন নেতা নগরভবনে গিয়ে তাদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা করেন। ঝুঁকি নিয়ে তারা কেন ককটেল নিচে নামিয়ে আনলেন সেই প্রশ্ন তোলেন নেতারা। তারা দাবি করেন, সব সরকারি স্থাপনার নিরাপত্তায় এখন ছাত্ররা আছে। তারা ককটেলগুলো বুঝে নিয়ে কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের দূরে সরিয়ে দেন। সেনাবাহিনীকে ডেকে ককটেল নিষ্ক্রিয় করা হবে বলে তারা জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর ইসলাম তুষার বলেন, ‘আমি সিটি করপোরেশনে ৩০ বছর ধরে চাকরি করছি। আমার দরদ আছে। সব পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে। আমার কষ্ট লাগছে। কিন্তু তারা যেভাবে কথা বলল, তাতে কষ্ট পেয়ে সরে এসেছি। সব যখন পুড়িয়ে দেওয়া হলো, তখন তারা কোথায় ছিল? এখান থেকেই তো আমরা শহরকে সাজানোর কাজ করি।’
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট প্রথমে আগুন দেওয়া হয় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে। এরপর সিটি করপোরেশন ভবন ও মেয়র লিটনের বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে দুর্বৃত্তরা নগরভবন ও মেয়র লিটনের বাসভবনে থাকা সবকিছুই লুট করে নিয়ে যায়। শুধু নগর ভবন কিংবা লিটনের বাসভবনই নয়, আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের হেডকোয়ার্টারসহ নগরীর সব থানা। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। লুটপাট এখনো থামেনি। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) রাতে মহানগরীর নওদাপাড়ায় একটি বাসায় ৪টি ও ডাঁশমারী এলাকায় দুটি গরু ডাকাতির ঘটনাও ঘটেছে। এ সময় কয়েকটি মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।