কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ বন্যায় প্লাবিত হয়ে ভেসে গেছে মৎস্য চাষিদের স্বপ্ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে প্রায় ৩৭৫০টি পুকুর ও দিঘি। এতে এলাকার মৎস্য চাষিদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এমন ভয়াবহ বন্যা মৎস্য চাষিরা আর কোনো দিন চোখে দেখেনি। এলাকার বেশির ভাগ মৎস্য চাষিরা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে এ ব্যবসা করেন। হঠাৎ এমন ভয়াবহ বন্যা নিঃস্ব হয়ে পথে বসছে মাছ চাষিরা।
সামিন মৎস্য খামারের স্বত্বাঅধিকারী জহির রাহয়ান জানান, এ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে আমার প্রায় ৯০ লাখ টাকার মাছ। ব্যাংক লোন করে প্রায় তিন কোটি টাকা মাছ চাষে ব্যয় করেছি। এ বন্যায় কেড়ে নিয়েছে আমাদের সবকিছু। এখন কীভাবে ব্যাংক লোন শোধরাবো কোনো উপায় খুঁজে পাচ্চি না। আমি মাছ চাষের পাশাপাশি মাছের খাদ্য ব্যবসা করেছিলাম। এলাকার অনেক মাছ চাষির পুকুর দিঘি পানিতে ভেসে গেছে। এরা এখন আমার পাওয়া টাকা কি করে শোধ করবে। তাই ব্যাংক লোন ও কোম্পানি টাকা নিয়ে খুব হতাশার মধ্যে আছি। সরকার যদি মৎস্য চাষিদের একটু সহযোগিতা করে তাহলে হয়তো আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
আল্লাহর দান মৎস্য খামারের মালিক মো. আলমগীর হোসেন জানান, ভয়াবহ বন্যায় আমার ৩টা ভেড়ি, ২টা দিঘি, একটা পুকুর ও প্রায় পঞ্চাশ একর জায়গা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে আমার প্রায় দেড় কোটি টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। বন্যায় কেড়ে নিয়েছে আমার পরিবারের স্বপ্ন। মাছ চাষের পেছনে আমার কাছে যতটুকু অর্থ ছিল সব ব্যয় করেছি। ব্যাংক লোন করেছি ৭০ লাখ টাকা। এ বন্যা জীবনটা লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেল। ভবিষ্যতে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবো কি না আল্লাহ ভালো জানেন।
উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. তৌহিদ হাসান জানান, উপজেলা মৎস্য চাষি ও খামারিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তর পরিসংখ্যা মতে ১১টি ইউনিয়নে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে ৩৭৫০টি পুকুর। এসব জলাশয়ের আয়তন ৯৫০ হেক্টর। জলাশয় থেকে ৩৬৫৬ টন মাছ ও ৪০ লাখ পোনা মাছ প্লাবিত হয়েছে। এতে মৎস্য খামারিদের ক্ষতি হয়েছে ৫৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। মৎস্য চাষিদের ক্ষতি নিরষনে মাঠপর্যায়ে নিরলসভাবে মৎস্য অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন