কুমিল্লা ব্যুরো
প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বন্যায় কুমিল্লায় সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত সাড়ে ৮ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি

বন্যায় কুমিল্লায় বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি
বন্যায় কুমিল্লায় বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি

কুমিল্লায় সাম্প্রতিক বন্যায় একেবারে বিধ্বস্ত হয়েছে ৮ হাজার ৬৭৪টি ঘর। এসব ঘর মেরামতেরও অযোগ্য। এ ছাড়া আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ৭৪ হাজার ৮১টি ঘর। এসব ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের বাসিন্দারা নিম্ন আয়ের মানুষ। কুমিল্লায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘর নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে পরিবারগুলো।

এসব তথ্য জানিয়ে জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যালয় বলছে, জেলায় বন্যায় এক হাজার কোটি টাকারও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মানুষের আবাসিক খাতে।

জানা গেছে, বুড়িচং উপজেলায় সাড়ে ১৬ হাজার ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ৪ হাজার ১৪৩টি। মাটির এবং টিনের কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙেছে সবচেয়ে বেশি। গোমতী নদীর বাঁধের ভাঙনে পানির স্রোত যে এলাকা দিয়ে গেছে সে এলাকায় ঘরবাড়িসহ স্থাপনা ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। স্রোতের ধাক্কায় ভেঙে গেছে গ্রামীণ সংযোগ সড়ক, বিলীন হয়েছে কৃষিজমি-হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশুর খামার।

বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের ইন্দ্রবতী গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, অন্তত ১৫টি মাটির ঘর ধসে গেছে বন্যার পানিতে। কোনো কোনোটি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ঘরহারা হয়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়ি ও আশ্রয়কেন্দ্রে থাকছে এসব পরিবারগুলো।

ইন্দ্রবতী গ্রামের বাসিন্দা ধীরেন্দ্র চন্দ্র দাসের ঘরটি মিশে গেছে মাটির সঙ্গে। ছেলের বউ আর দুই নাতি নিয়ে তিনি এখন থাকেন আত্মীয়ের বাড়িতে। ধীরেন্দ্র চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমার ছেলে বিশ্বজিত বিদেশে থাকে, কিন্তু সেখানে সে বেকার। চাইলেও এখন ঘর বানানোর টাকা পাঠাতে পারবে না। কয় দিন আর মানুষের বাড়ি থাকা যায়।’

একই এলাকার কৃষক নিখিল চন্দ্র দাসের ঘরটিও ধসে গেছে বন্যার পানিতে। ঘরে থাকা সবকিছুই টিনের চালার নিচে চাপা পড়েছে। তার ওপর আবার অন্তত এক ফুট পলিমাটির আস্তরণ। নিখিল বলেন, ‘ছেলেমেয়েকে শহরে আত্মীয়ের বাড়িতে দিয়ে আসছি। ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারছি না। চালা ভেঙে সব বের করতে হবে। যে আয়-রোজগার তা দিয়ে নতুন ঘর করা অনেক দিন সময় লাগবে। এতদিন কই থাকব, কীভাবে থাকব।’

নিখিলের স্ত্রী মঞ্জু রানী দাস বলেন, ‘আমাদের কেউ সহযোগিতা না করলে উদ্বাস্তুর মতো জীবন-যাপন করতে হবে। ছেলেমেয়েগুলো পড়ালেখা করছে, তাদের জীবনও শেষ হয়ে যাবে। সরকারের কাছে আকুল আবেদন আগে ঘরটা যেন ঠিক করে দেয়।’

জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আবেদ আলী বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ ফরম ‘ডি’ মোতাবেক আমরা কুমিল্লার ১৪ উপজেলার ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষয়-ক্ষতির বিস্তারিত তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাচ্ছি। সরকারি ও দাতা সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সবাইকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নুরের নিরাপত্তা বিবেচনায় বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে : রাশেদ 

প্রায় ২০০০ কোটি টাকা খরচ করে স্ট্রাইকার কিনছে লিভারপুল

অনার্স চতুর্থ বর্ষের ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষার সূচি পরিবর্তন

বিশ্বের মুসলিমদের উদ্দেশে ইরানের প্রেসিডেন্টের বার্তা

সুসজ্জিত গাড়িতে পুলিশ সদস্যের রাজকীয় বিদায়

বিদ্রোহী সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিহত, ইয়েমেনের পক্ষে ইরানের হুংকার

চোখের পাতা লাফানো কি অশুভ, নাকি কোনো রোগের লক্ষণ

সিডনিতে রুশ কনস্যুলেটের গেটে গাড়ির ধাক্কা, অতঃপর...

চবি ক্যাম্পাসে সুনসান নীরবতা

মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ওসমানীর ১০৭তম জন্মবার্ষিকী আজ

১০

ফাইনালে হারের পর সুয়ারেজের বিতর্কিত কাণ্ড!

১১

হাত-পায়ের ৫ লক্ষণে বুঝে নিন লিভারে সমস্যা ভুগছেন কি না

১২

হাসি, বিনা মূল্যের থেরাপি : তিশা

১৩

হল ছাড়ছেন বাকৃবির শিক্ষার্থীরা, আন্দোলনের ঘোষণা একাংশের

১৪

ভিসা নিয়ে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের কঠোর বার্তা

১৫

গোলের বদলে ডিম! পাখির কারণে মাঠছাড়া ফুটবলাররা

১৬

আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, নিহত বেড়ে ২৫০

১৭

নিজেদের অজান্তেই গাজায় বড় সফলতা পেল ইসরায়েল

১৮

সিইসির সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক দুপুরে

১৯

ইন্দোনেশিয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মারমুখী অবস্থান, আন্দোলনে নতুন মোড়

২০
X