নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়ে সোনালি ধানের ঝিলিক

নাইক্ষ্যংছড়ি পাহাড়ের ঢালু ভূমিতে উৎপাদিত জুম চাষের ধান কাটছেন জুম চাষিরা।
নাইক্ষ্যংছড়ি পাহাড়ের ঢালু ভূমিতে উৎপাদিত জুম চাষের ধান কাটছেন জুম চাষিরা।

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি পাহাড়ের ঢালু ভূমিতে উৎপাদিত জুম চাষের ধান কাটা শুরু হয়েছে। জুমিয়াদের মুখে তাই হাসি ফুটেছে। এ বছর বৃষ্টি দেরিতে হওয়ায় জুমের ধান বপনে সময়ের ব্যবধান বেশি হয়েছে। তাই এখন অনেকে ধান কাটা শুরু করেছেন। কোনো কোনো জুমের ধান এখনো সবুজ আবার কোথাও ধান পাকা শুরু হয়েছে এমন জুমের ধান পাহারা দিতে জুমচাষি সপরিবারে জুমক্ষেতে উঠেছেন।

জুমচাষিরা দল বেঁধে ধান কেটে ঘরে তুলছেন জুমের ফসল। আবার সেসব ধান জুমেই মাড়াই করা হচ্ছে। মাড়াইকৃত ধান থুরংয়ে করে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পাহাড়ে জুমচাষি জুমিয়ারা উৎসবমুখর পরিবেশে ধান কাটা শুরু করেছেন। তাই পাহাড়ে পাহাড়িদের একমাত্র ভরসা হলো জুম চাষ। জুম চাষ তাদের একটি আদি প্রথা। এটি তাদের ঐতিহ্য।

পাহাড়ের ঢালে যুগ যুগ ধরে পাহাড়িরা বসবাস করে পিরামিড পদ্ধতিতে জুম চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। সেটা এখনো ধরে রেখেছেন জুমিয়ারা। আলীক্ষ্যং মৌজার ফতই হেডম্যানপাড়ার জুমচাষি মেনসন মুরুং জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার পাহাড়ে জুমের ফলন ভালো হয়েছে। পরিবেশ ও আবহাওয়া ঠিকঠাক থাকায় এ সাফল্য এসেছে। জুমধান ছাড়াও জুমে হলুদ, মারফা, চিনাল আদা, মরিচ, কচু, মিষ্টিকুমড়া, তিল, ভুট্টা, বরবটিসহ প্রায় ৪০ জাতের সবজির আবাদ হয়েছে।

তিনি আরও জানান, জুমের উৎপাদিত খাদ্যশস্য দিয়ে পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি উৎপাদিত সবজি ও কৃষিপণ্য বিক্রি করে জুমিয়াদের সংসার চলে। জুমের উৎপাদিত ধান দিয়ে ৬-৯ মাস পর্যন্ত খাবারের জোগান পাওয়া যায়।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল আলম কালবেলাকে জানান, আবহাওয়া অনুকূল ও নিয়মিত পরিচর্যার কারণে এবার নাইক্ষ্যংছড়িতে জুমের ফলন ভালো হয়েছে। জুমে জুমে এখন চলছে ধান কাটার উৎসব। ধান ছাড়াও বাহারি সবজির চাষ হয়েছে জুমক্ষেতে।

চাষিদের দাবি জুম চাষের জন্য সার, বীজের পাশাপাশি সরকারিভাবে প্রণোদনা দরকার। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের জুমখোলার জুমচাষি অংক্যজাই জানান, গতবারের তুলনায় এবারও ভালো ফলন হয়েছে জুমে। ভালো মানের উন্নত বীজ তারা পান না। সরকারের সহায়তাও নেই। সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে পারলে ফলন আরও ভালো হতো বলে মনে করেন তিনি।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এনামুল হক কালবেলাকে জানান, এবারে নাইক্ষ্যংছড়িতে ৩শ হেক্টর জুম চাষ করার কথা থাকলেও হয়েছে কম। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের যেসব পাহাড়ে জুম চাষ হতো, অন্য বাগান হচ্ছে সেখানে। জুমিয়ারাও চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মতবিনিময় সভায় যুব নেতারা / জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে 

দুর্গাপূজা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্যে উদ্বেগ ঐক্য পরিষদের 

মিয়ানমারে বৌদ্ধদের উৎসবে জান্তার বিমান হামলায় নিহত ৪০

আ.লীগের কর্মী-সমর্থকদের জন্য কেঁদে কেঁদে দোয়া করলেন হাদি

তারেক রহমানের সাক্ষাৎকারে ভুল উদ্ধৃতি সংশোধনের আহ্বান টিআইবির

‘আবরারের স্মৃতিস্তম্ভ নিয়ে অনেকের গাত্রদাহ দেখেছি’

সৌন্দর্যবর্ধনে সাভার উপজেলা প্রশাসনের নানা উদ্যোগ

ছেলের দায়ের করা মামলায় বাবাসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে কোরআন অবমাননা, সিএমপির জরুরি সতর্কবার্তা

জাতীয়করণ নিয়ে বেসরকারি শিক্ষকদের প্রতি তারেক রহমানের বার্তা

১০

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ

১১

খেলা শেষ হতেই রেফারির ওপর হামলা

১২

জোর করে পদত্যাগ করানো শিক্ষকদের জন্য সুখবর

১৩

আদালতের ‘ন্যায়কুঞ্জে’ খাবার হোটেল, প্রধান বিচারপতির নির্দেশে উচ্ছেদ

১৪

অ্যানথ্রাক্স ছড়াচ্ছে উত্তরাঞ্চলে, রংপুর-গাইবান্ধায় সরেজমিনে তদন্ত শুরু

১৫

চীন থেকে যুদ্ধবিমান কেনা প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা / জানলে যে সব বলে দিতে হবে সেটা তো না

১৬

শেখ হাসিনা ও কামালের নির্বাচনী যোগ্যতা নিয়ে যা জানা গেল

১৭

ছাত্রদলকে সমর্থন জানিয়ে চাকসু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন দুই প্রার্থী

১৮

খুন করে আল্লাহর ভয়ে নামাজ পড়ে ক্ষমা চান হত্যাকারীরা

১৯

ইংলিশদের বিপক্ষে মারুফাদের লড়াই করে হার

২০
X