মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা বিআরডিবির সাবেক চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমানকে ধর্ষণ মামলায় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার মৌলভীবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (৫নং আমলী) একটি ধর্ষণ মামলায় জামিন নিতে গেলে বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলা ও ভুক্তভোগীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের দক্ষিণ হিঙ্গাজিয়া (তামারপাড়া) গ্রামের মৃত. সাজিদ মিয়ার পুত্র কুলাউড়া উপজেলা বিআরডিবির সাবেক চেয়ারম্যান ও ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে একই এলাকার এক কলেজছাত্রীকে (২৬) প্রেম নিবেদন করে উত্ত্যক্ত করতেন। কিন্তু মুহিবুর রহমান ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ও তার স্ত্রী-সন্তান থাকায় ওই ছাত্রী প্রেমের প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করে। পরে মুহিবুর ওই ছাত্রীকে বিয়ে করবেন বলে প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। একপর্যায়ে কলেজছাত্রী তাকে বিয়ের জন্য দীর্ঘদিন থেকে চাপ প্রয়োগ করলে মুহিবুর নানা টালবাহানা শুরু করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে কলেজছাত্রী গত ২৯ মে দুপুরে মুহিবুরকে স্থানীয় বাজারে পেয়ে তার বিয়ের স্বীকৃতি প্রদানের জন্য জোর দাবি জানায়। এ সময় মুহিবুর ও তার পরিবারের লোকজন কলেজছাত্রীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে নির্যাতিতা কলেজছাত্রী মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে চিকিৎসা নেন।
পরে ৩১ মে কুলাউড়া থানায় মুহিবুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন। পরদিন ১ জুন মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
নির্যাতিতা ওই কলেজছাত্রীকে মারধর করার অভিযোগে কুলাউড়া থানা পুলিশ ১২ জুন মুহিবুর রহমানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার ভাতিজা মোকাদিছুর রহমান রানা (২২) নামে একজনকে আটক করে। এদিকে পলাতক থাকা মুহিবুর রহমান ১৩ জুন মৌলভীবাজার আদালতে জামিন নিতে গেলে চিফ জুডিশিয়াল (৫নং আমলী) আদালতের বিজ্ঞ বিচারক দাউদ হাসান তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কুলাউড়া থানার ওসি মো. আব্দুছ ছালেক বলেন, কলেজছাত্রী মুহিবুর রহমানকে অভিযুক্ত করে থানায় ধর্ষণের মামলা করেছেন। এ মামলায় মুহিবুর আদালতে জামিন নিতে গেলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন এবং ভিকটিমকে মারধর করায় মুহিবুরের ভাতিজাকেও আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
মন্তব্য করুন