দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

প্রাণভিক্ষা পাওয়া ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা আর নেই

বীর মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চন্দ্র নাহা। ছবি : সংগৃহীত
বীর মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চন্দ্র নাহা। ছবি : সংগৃহীত

ফাঁসির আদেশ কার্যকর করার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে রাষ্ট্রপতির আদেশে প্রাণভিক্ষা পাওয়া কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চন্দ্র নাহা মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।

শনিবার (৯ নভেম্বর) রাত ১টার দিকে নিজ বাড়িতে মারা গেছেন তিনি। রোববার দুপুর ২টার দিকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা শেষে নিজ গ্রামে তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।

রাখাল চন্দ্র নাহার ছেলে সঞ্জয় চন্দ্র নাহা জানান, তার বাবা দীর্ঘ ২৪ বছর ফাঁসির দণ্ড নিয়ে জেলে ছিলেন। গত বছরের ২ জুলাই ফাঁসির দণ্ড থেকে মওকুফ পেয়ে জেল থেকে মুক্তি পান। পরে বাড়িতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। শনিবার রাতে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর রাত ১টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

জানা যায়, ১৯৯৯ সালে একটি হত্যা মামলায় রাখাল চন্দ্র নাহাকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় ২০০৮ সালে তার ফাঁসির আদেশ হয়। কিন্তু তার পরিবার আর্থিক অসচ্ছলতায় মামলা পরিচালনায় ব্যর্থ হয়। ফলে পর্যায়ক্রমে সব আদালতে তার ফাঁসির দণ্ড বহাল থাকে। একই বছর ৭ এপ্রিল রাত ১১টায় রায় কার্যকর করার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে বলে তার বাড়িতে কারা কর্তৃপক্ষ চিঠি পাঠায়।

এই খবরটি ছড়িয়ে পড়লে ওই সময় ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ নামের সংগঠন তৎকালীন জরুরি অবস্থা ভঙ্গ করে এ মুক্তিযোদ্ধার ফাঁসির দণ্ড রহিত করার দাবিতে সারাদেশে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। পরে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ‘মুক্তিযোদ্ধার ফাঁসি কাল’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদের দৃষ্টিগোচর হয়। তিনি রাষ্ট্রপতিকে এই মুক্তিযোদ্ধার ফাঁসির দণ্ড মওকুফ করার অনুরোধ জানান। এর প্রেক্ষিতে ফাঁসির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে তার ফাঁসির দণ্ড মওকুক করা করা হয়।

পরে সাজা কমিয়ে তার দণ্ড যাবজ্জীবন করা হয়। কারাগারে থাকার সময় রাখাল চন্দ্র নাহা ভালো কাজ করায় ৩০ বছর কারাদণ্ড থেকে প্রায় ছয় বছর দণ্ড মওকুফ করে কারা কর্তৃপক্ষ। অবশেষে দীর্ঘ ২৪ বছরের কারাজীবন শেষে ২০২৩ সালের ২ জুলাই তিনি মুক্তি পান। শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে নিজ বাড়িতে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি পরলোকগমন করেন।

তিনি স্ত্রী চার ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

লোকেশন ট্র্যাকিং ও নম্বর ফাঁস! মামুন, বান্নাহ ও চমককে প্রকাশ্যে হুমকি

মেসিকে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম টিকিট দিলেন জয় শাহ

বিশ্ববিদ্যালয় পরিষ্কার রাখতে পাবিপ্রবিতে ‘ক্লিন ক্যাম্পাস’ কর্মসূচি

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগে কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা রাকসু জিএসের

সিঙ্গাপুর পৌঁছেছে ওসমান হাদিকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে মহাসড়কে তল্লাশি জোরদার

১৬ ডিসেম্বর চালু হচ্ছে না অবৈধ মোবাইল ফোন, নতুন তারিখ নির্ধারণ

বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও সিইসি দায়িত্বে থাকতে পারেন না : নাহিদ ইসলাম

কিডনি খারাপ হওয়ার আগে সংকেত দেয় চোখ, যে ৫ লক্ষণে বুঝবেন

১০

সিইসির বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ জামায়াত আমিরের, ব্যাখ্যার দাবি

১১

ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে গড়তে ভিশনারি নেতা লাগবে : ববিপ্রবি ভিসি

১২

খেজুরের রস পানে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু

১৩

ফয়সালের স্ত্রী-শ্যালকসহ তিনজন ৫ দিনের রিমান্ড

১৪

পর্দায় কাউকে চুমু খাবেন না জর্জ ক্লুনি

১৫

আনিস আলমগীর ৫ দিনের রিমান্ডে 

১৬

র‌্যাক সিরামিক নবায়ন করল মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর চুক্তি

১৭

নারীদের একমাত্র কাজ স্বামীর সঙ্গে থেকে সন্তান জন্মদান : প্রার্থীর বিতর্কিত মন্তব্য

১৮

মোবাইল ফোনের দাম নিয়ে সুখবর দিল এনবিআর

১৯

বাংলাদেশ-চীন ইয়ুথ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে শিহাব ও আমিরুল

২০
X