সাতক্ষীরায় গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করে আত্মগোপনে থাকা এক এনজিও পরিচালককে আটক করেছে পুলশি। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পুরাতন সাতক্ষীরার মায়েরবাড়ী মন্দিরের পাশের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে সদর থানা পুলিশ।
আটককৃতের নাম আরিফা খাতুন। তিনি প্রিমিয়ার ইসলামী সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেডের পরিচালক। একই সঙ্গে তিনি সাতক্ষীরার মাছখোলা সরকারি প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন তার স্বামী কামরুল ইসলাম। তবে স্ত্রীকে পুলিশের আটক করা দেখে তিনি পালিয়ে যান।পুলিশ জানিয়েছে, এনজিওটির কর্মী রীণা পারভীনের করা প্রতারণার মামলায় পরিচালক আরিফাকে আটক করা হয়েছে। মামলার বাদী রীণা দেবহাটা উপজেলার খেজুরবাড়ীয়া পারুলিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমানের মেয়ে।
কালবেলাকে রীণা বলেন, শহরের পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকায় অবস্থিত প্রিমিয়ার ইসলামী সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতিতে ২০১২ সালে মাঠ পর্যায়ের কর্মী হিসেবে যোগদান করেন রীণা। পরে ওই এনজিও পরিচালক আরিফা ও তার স্বামী ম্যানেজার কামরুল তার মাধ্যমে এনজিওর ডিপিএসের জন্য তার দুই বোন পুলিশ সদস্য রত্না খাতুন ও ঝর্ণা খাতুন এবং হেনা খাতুন, রেজওয়ানা খাতুন, ইউসুপ আলী, আমেনা খাতুন, রেশমা খাতুন, ইমরান ও রফিকুল ইসলামের কাছে থেকে মোট ৬৪টি হিসাবের মাধ্যমে ৩৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকা নেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৪ বছর পর ডিপিএসের মেয়াদ পূর্ণ হলেও তাদের ন্যায্য পাওনা টাকা বুঝিয়ে না দিয়ে বিভিন্নভাবে বিগত আওয়ামী লীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিল এ দম্পতি। দিনের পর দিন দিন গ্রাহকরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হতে থাকেন। এ নিয়ে সদর থানায় কয়েক দফায় বৈঠকও হয়। গত ২২ ফেব্রুয়ারি গ্রাহকদের পাওনা টাকা দিতে স্বীকার করেও গ্রাহকের টাকা না দিয়ে তারা আত্মগোপনে চলে যান। বহু হয়রানি ও লাঞ্ছনার শিকার হয়ে বাদী গত মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার এসআই মহাসিন বলেন, প্রায় দুই শতাধিক গ্রাহকের কাছে থেকে সঞ্চয় ও জমা দেওয়া ডিপিএসের টাকা এনজিও পরিচালক আরিফা ও তার স্বামী ম্যানেজার কামরুল আত্মসাৎ করেছেন। এনজিও কর্মী ও ওই এনজিওর গ্রাহক রীণার দেওয়া লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করা হয়।
তিনি বলেন, উভয়পক্ষকে নিয়ে থানাতে বসা হলেও অভিযুক্তরা মামলাটি গ্রহণ না করার অনুরোধ জানিয়ে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেবেন বলে জানান। পরে গ্রাহকের টাকা না দিয়ে বাদী পক্ষকে হুমকি-ধামকি ও লাঞ্ছিত করে আত্মগোপনে চলে যান ওই স্বামী-স্ত্রী। এ ঘটনায় মামলা রেকর্ড হলে অভিযান চালিয়ে দুপুরে একটি বাড়ি থেকে আরিফাকে আটক করা হয়। তবে আরিফার স্বামী কামরুল পালিয়ে গেছেন।
মন্তব্য করুন