মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৪:২৯ পিএম
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৪:৫৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

প্রকল্প খাল খননের, কচুরিপানা পরিষ্কার করেই টাকা লোপাট

মির্জাগঞ্জে খাল খনন না করেই বরাদ্দের টাকা লোপাট। ছবি : কালবেলা
মির্জাগঞ্জে খাল খনন না করেই বরাদ্দের টাকা লোপাট। ছবি : কালবেলা

মির্জাগঞ্জে খাল খনন না করেই বরাদ্দের টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠছে। খাল খননের নামে হয়েছে কচুরিপানা পরিষ্কার এবং মাছ শিকারের মহোৎসব। দুই এক জায়গায় দিয়ে যা একটু খনন হয়েছে তার জন্য স্থানীয়দের গুনতে হয়েছে টাকা। খালের মাটি খালে রেখে সরকারি টাকা পুরোটাই হয়েছে ভাগবাটোয়ারা। খনন না করলেও প্রায় শতভাগ বিল দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের বেতবুনিয়া ও চাকরখালী খালের প্রায় ১ দশমিক ৩৭৫ কিলোমিটারের খনন (পলি নিষ্কাশন) রেগুলেটার মেরামত ও অফিস মেরামতের জন্য ১৫ লাখ ৯২ হাজার ২২১ টাকা ব্যয়ে কাজটি পায় চৈতা বাজিতা পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি। ৫টি এলসিএস কমিটির মাধ্যমে এই কাজ সম্পন্ন করার কথা। আর কাজটি পরিচালনা করে মির্জাগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি।

নিয়মমতে, খাল খননের বিল উত্তোলন করতে এলসিএস কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে বিল দেওয়ার কথা। কিন্তু নিয়মের তোয়াক্কা না করে এলসিএস কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের স্বাক্ষর জাল করে জাহাঙ্গীর গাজী ও বেলাল মৃধা নামে দুই ব্যক্তি বিল উত্তোলন করে নিয়েছে বলে অভিযোগ এলসিএস কমিটির সভাপতি এবং সম্পাদকদের।

সরেজমিনে প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কোনো রকম খনন বা নিষ্কাশনের চিহ্ন দেখা মিলেনি খালগুলোয়। একহাত পরিমাণ পানি নেই খালে। পাড়ে দাঁড়ালে দেখা যাচ্ছে খালের তলদেশের মাটি।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা মো. হাবিবুর রহমান মৃধা বলেন, খালতো কাটতে দেখি নাই। শুধু মাছ ধরছে আর কচুরিপানা পরিষ্কার করছে।

খাল পাড়ের বাসিন্দা আবু হানিফ জোমাদ্দার বলেন, সরকারিভাবে খালের কোনো স্থানই কাটা হয়নি। স্থানীয়রা যারা টাকা দিয়েছে তাদের বাড়ি সামনে দিয়ে ঘণ্টা হিসাব করে কেটেছে।

স্থানীয় রশিদ জোমাদ্দার বলেন, খাল ঠিকমতো কাটা হয়নি। খালে পানি থাকে না, মাছ থাকে না। যারা কাটতে আসছিলো তারা ঠিকমতো কাজ করেনি। শুধু কচুরিপানা পরিষ্কার করছে।

এলসিএস কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেল খান বলেন, জাহাঙ্গীর আমাদের কাজের পার্টনার ছিল। এসব কাজের বিল যৌথ একাউন্টের মাধ্যমে উত্তোলন করা হয়। এজন্য আমার এবং এই এলসিএস কমিটির সভাপতি শিউলি বেগমের সাথে যৌথ চেক জাহাঙ্গীরের কাছে ছিল। শুনছি কাজের বিল উত্তোলন করে নিয়েছে জাহাঙ্গীর। কিন্তু আমাদের চেকে কোনো স্বাক্ষর নেয়নি তিনি।

খনন কাজ চলাকালীন সময়ের চৈতা বাজিতা পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি মো. বাবুল মাস্টার বলেন, খাল খননের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এলসিএস কমিটির জাহাঙ্গীর গাজী এবং বেলাল মৃধা কাজ করিয়েছে। লোকমুখে শুনেছি ঠিকমতো খাল খনন করা হয়নি। এখন বর্তমানে তারা দুইজন এই সমিতির সভাপতি এবং সম্পাদক।

চৈতা বাজিতা পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী আকন বলেন, খননকাজে কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি থাকতেই পারে। তবে যতটুকু সম্ভব প্রাক্কলন অনুসারেই খননকাজ হয়েছে। সব অনিয়মের অভিযোগ সত্য নয়।

অভিযুক্ত বর্তমান সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর গাজী ও সম্পাদক বেল্লাল মৃধার মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, এই কাজ যে সময় বাস্তবায়ন হয়েছে তখন আমি ছিলাম না। আমার পূর্বে যে কর্মকর্তা ছিল তার সাথে কথা বলেন। তারপরও দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত লোক পাঠিয়ে খতিয়ে দেখা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভারত-বাংলাদেশ নারী সিরিজের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

ঢাবির জসীম উদ্দীন হলের একই রুম থেকে বিসিএস ক্যাডার হলেন ইমতিয়াজ-জাকির 

চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ নিয়ে যা জানা গেল

নাশকতার পরিকল্পনার সময় যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

৩২ নম্বরের সর্বশেষ পরিস্থিতি

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড / এই রায় আমাকে বিশেষভাবে আতঙ্কিত করেছে : শশী থারুর

সাদামাটা জীবনযাপন করা সিরাজগঞ্জের সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম মারা গেছেন

খালে ভাসছিল সবজি বিক্রেতার মরদেহ

মিশনের প্রেস উইংয়ে প্রশাসন ক্যাডার থেকে নিয়োগ, ইনফরমেশন অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবাদ

শীতে গরম পানি পান করছেন, এটি উপকারী না ক্ষতিকর?

১০

অন্তর্বর্তী সরকারের অর্জন নিয়ে প্রেস সচিবের স্ট্যাটাস 

১১

হাজী ও নান্না বিরিয়ানির নামে প্রতারণা

১২

সংগ্রাম থেকে সাফল্যের শিখরে শেহনাজ গিল

১৩

বিএনপির এক নেতাকে সব পদ থেকে বহিষ্কার

১৪

ঠোঁটের চারপাশে কি কালচে ছোপ, ২ সপ্তাহেই মুক্তি পাওয়ার ঘরোয়া উপায়

১৫

পুলিশের নতুন ইউনিফর্ম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

১৬

হাসিনার যেদিন ফাঁসি হবে, সেদিন কলিজা ঠান্ডা হবে : শহীদ সজলের মা

১৭

ছয় গোলের উৎসবে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করল জার্মানি

১৮

চবি ছাত্রদলের এক নেতার পদ স্থগিত

১৯

অভিজ্ঞতা হলো জীবনের সবচেয়ে বড় সঞ্চয়: দীপিকা পাড়ুকোন

২০
X