মতলব উত্তর (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৪:০৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ছেলের লাশ খুঁজতে গিয়ে চাকরি হারান বাবা

আন্দোলনে নিহত পারভেজ। ছবি : সংগৃহীত
আন্দোলনে নিহত পারভেজ। ছবি : সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ পারভেজের বাবা এখনো তার সন্তানের কবর খুঁজে পাননি। কবে মারা গেছে সে দিন তারিখও সঠিক বলতে পারেন না। তবে শুনেছেন তার একমাত্র সন্তানকে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ছেলের লাশ খুঁজতে গিয়ে চাকরি হারিয়েছেন তিনি। এখন ছোট টঙ দোকানে চা বিক্রি করে সংসার চালান।

শহীদ পারভেজের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়নের বার হাতিয়া গ্রামে। সরেজমিনে গেলে পারভেজের বাবা মো. সবুজ বেপারি (৫০) আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি জানান, পারভেজ (২৩) দীর্ঘ এক যুগ ধরে ঢাকার বাড্ডা এলাকায় বসবাস করত। সেখানে একটি ফার্নিচারের দোকানে নকশা মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করত। তাদের পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস ছিল পারভেজ।

তিনি বলেন, আমি লঞ্চে সামান্য বেতনে চাকরি করতাম। পারভেজের লাশ খুঁজতে গিয়ে এবং শহীদ হওয়ার পর যাবতীয় কাগজপত্র নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে চাকরিতে সময় দিতে পারিনি। ফলে চাকরি হারিয়ে আমি এখন বেকার। আমার বড় মেয়ে নুপুরকে বিয়ে দিয়েছি। মেঝ মেয়ে ঝুমুর কলেজে পড়াশোনা করে। ছোট মেয়ে খাদিজা ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। আমার সংসারে মা, স্ত্রী, দুই মেয়ে নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছি। আমার চাকরি না থাকায় বাড়ির পাশে একটি ছোট্ট টং দোকানে চা বিক্রি করে কোনো রকমে সংসার চালাই।

তিনি জানান, জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে ৫ লাখ টাকা পেয়েছেন। সেই টাকার মধ্যে বড় মেয়ে নুপুরের বিয়েতে খরচ করেছেন। বেকার থাকায় ধারদেনা ছিল, সেগুলো পরিশোধ করেছেন। এ ছাড়াও ছেলের নিহতের তথ্য দিতে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করতে গিয়ে খরচ হয়েছে।

পারভেজের বাবা বলেন, ১৯ জুলাই খবর পাই আমার ছেলে পারভেজ নিখোঁজ। পরে ছেলের খোঁজ নিতে ঢাকায় যাই। অনেক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে লোক মারফত শুনে ২১ জুলাই আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে যাই। সেখানে গিয়ে শুনি ৮টি লাশ আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম অফিসে যাই। তারা আমাকে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে যাওয়ার কথা বলে। শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে গিয়ে আমি আমার ছেলের ছবি দেখাই।

‘ছবি দেখার পর কবরস্থানের লোকরা বলে, আপনার ছেলের লাশ এখানে দাফন করা হয়েছে। তবে কোনটি আপনার ছেলের কবর তা নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না। সেই থেকে এখনো সন্তানের অপেক্ষায় আছি। আজও পর্যন্ত ছেলের লাশ দেখলাম না। কবর চিহ্নিত করতে পারলাম না। এই কষ্ট নিয়ে দিন কাটাচ্ছি। আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই। সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দাবি করছি।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রেস্তোরাঁয় এসে খাবার খাচ্ছে মাছ

ইসির কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার করার প্রস্তাব বিএনপির

রূপালী ব্যাংকে জাতীয়তাবাদী ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের কমিটি গঠন

দিল্লিতে অজিত দোভালের সঙ্গে খলিলুর রহমানের বৈঠক

দেশের শীর্ষস্থানীয় ১০ শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিইউএফটির সমঝোতা স্বাক্ষর

শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় দ্বীপকে শেষ বিদায় দিলেন বাহুবলবাসী

এবার আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলও খেলবে নেশনস লিগ!

রাতে আলো জ্বালিয়ে ঘুমানো ভালো নাকি ক্ষতিকর? যা বলছে গবেষণা

ঢাকা-৫ আসনে আজহারির প্রার্থিতার খবর গুজব

টিনশেড কলোনিতে ভয়াবহ আগুন, ১০০ ঘর পুড়ে ছাই

১০

জুটি বাঁধলেন খাইরুল বাসার ও সাদনিমা

১১

জোবায়েদ হত্যা / জবানবন্দিতে বর্ষাকে নিয়ে যা বললেন জবি ছাত্র সৈকত

১২

অবৈধ মোবাইল ফোন বন্ধের বিষয় স্পষ্ট করলেন ফয়েজ তৈয়্যব

১৩

‘ধানের শীষকে বিজয়ী করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে’

১৪

প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণা, প্রধান শিক্ষককে কারাদণ্ড

১৫

আমিরে জামায়াতের সঙ্গে ফ্রান্স রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

১৬

ঢাবির ফার্মেসি অনুষদে ডিনস অ্যাওয়ার্ড ও বৃত্তি প্রদান

১৭

গ্লোবাল এন্টারপ্রেনারশিপ উইক ২০২৫-এর জাতীয় পর্বের উদ্বোধন

১৮

মামলা করলেন ‘কেজিএফ’ তারকা যশের মা

১৯

শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে পাশ কাটিয়ে জকসু নির্বাচনে প্রার্থী সাজ্জাদ

২০
X