নাটোরের নলডাঙ্গায় ঘোড়ার মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুর ৩টার দিকে উপজেলার মাধনগরের ভট্টপাড়ায় অভিযান চালিয়ে ঘোড়া জবাই ও মাংস বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেন নলডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন।
এ সময় ঘোড়ার মাংস বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং এর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে নিয়মিত নজরদারি চালানোর ঘোষণা দেওয়া হয়।
জানা গেছে, বুধবার (১৯ মার্চ) উপজেলার মাধনগর ভট্টপাড়ার পূর্বপাড়ায় ৩টি ঘোড়ার মধ্যে একটি ঘোড়া জবাই করে বিক্রি করে একই এলাকার ইউসুফের ছেলে ফরমাজুল। এদিকে ঘোড়ার মাংস বিক্রি নিয়ে উপজেলাজুড়ে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
মাধনগরের স্থানীয় এলাকাবাসী, আল আমিন, শহিদুলসহ অনেকেই জানান, বুধবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে ঘোড়ার মাংস বিক্রি। অনেকেই এই ঘোড়ার মাংস কিনছেন। এছাড়া স্থানীয় অনেকে ঘোড়ার মাংস খাওয়া অরুচিকর বলেও মন্তব্য করেছেন।
ঘোরার মাংস বিক্রেতা ফরমাজুল বলেন, এই মাংস খেতেও গরুর মাংসের চেয়ে সুস্বাদু। অনেকে এই মাংস নিয়েছে। তেমন চর্বি নাই। ৩০০ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রি করছি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পবিত্র কুমার গণমাধ্যমকে জানান, ঘোড়া জবাইয়ের বিষয়টি শুধু শুনেছি। কিন্তু ঘোড়া জবাইয়ের কোনো সার্টিফিকেট আমাদের কাছ থেকে নেওয়া হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেদওয়ানুল হালিম জানান, দেশে ঘোড়া জবাই ও মাংস বিক্রি অপ্রচলিত। ঘোড়ার মাংস বিক্রেতা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে সার্টিফিকেট নেননি। নিয়মানুযায়ী পশু জবাইয়ের আগে সুস্থ কি না, এর জন্য ডাক্তারি সার্টিফিকেট নিতে হয়। কিন্তু তিনি ঘোড়া জবাইয়ের কোনো সার্টিফিকেট নেননি। বিক্রেতাকে ঘোড়ার মাংস বিক্রি বন্ধ করতে বলা হয়েছে এবং বিষয়টি নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
এদিকে, গত মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) গাজীপুরের হায়দারবাদ এলাকায় ঘোড়ার মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। অনুমতি ছাড়াই গত কয়েক মাস ধরে ঘোড়া জবাই ও মাংস বিক্রি করায় প্রশাসন বিষয়টি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
গাজীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. এস এম হারুন-অর-রশিদ বলেন, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মৌখিকভাবে ঘোড়া জবাই ও মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ঘোড়ার মাংস খাওয়া হারাম নয়। তবে ঘোড়া আমাদের দেশে বিলুপ্তপ্রায় একটি প্রাণী। এ কারণে বাণিজ্যিকভাবে ঘোড়া জবাই করতে হলে সরকারের অনুমতি এবং নির্দিষ্ট কসাইখানার অনুমোদন প্রয়োজন, যা উদ্যোক্তারা নেননি।
মন্তব্য করুন