আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, গুম, খুন, গণহত্যা, সন্ত্রাসবাদ ও লুটপাটের অভিযোগে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের বিচার, নিষিদ্ধ করা ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান শুরু থেকেই বিভ্রান্তিকর।
শুক্রবার (২১) এবি পার্টি সিলেট মহানগর আয়োজিত শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও পেশাজীবীদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন। দলের মহানগর আহ্বায়ক ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে সিলেটের একটি হোটেলে এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, এর বাইরে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর কিছু নেতার ভূমিকাও বেশ রহস্যজনক। তাদের কেউ কেউ একবার বলছেন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক তারা চান না। আবার বলছেন, আওয়ামী লীগের নামে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না। তাদের কারও কারও কাছে এখনই ‘বারবার ফ্যাসিবাদ শব্দ শুনতে ভালো লাগে না’।
তিনি দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগের হাতে থাকা তকতকে রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি এবং তাদের একজন সাধারণ কর্মীর কণ্ঠেও ভুল স্বীকার বা ক্ষমা চেয়ে অনুতপ্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। ৬/৭ মাস যেতে না যেতে তাদের হাতে সবচেয়ে বেশী নির্যাতিত দলের নেতাদের এরকম দ্বিধান্বিত অবস্থান খুবই হতাশাজনক। বিলম্ব না করে জাতিসংঘ কর্তৃক খুন, সন্ত্রাসবাদ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগের ব্যাপারে একটি ঐক্যমত্যে পৌঁছার জন্য মঞ্জু অন্তর্বর্তী সরকারসহ সবার প্রতি আহ্বান জানান।
মজিবুর রহমান মঞ্জু আরও বলেন, এবারের রমজানে প্রমাণ হয়েছে সরকার যদি প্রশ্রয় না দেয় তাহলে দ্রব্যমূল্য যারা বাড়ায় তারা জনগণের পকেট কাটতে পারে না। সরকার আরও আন্তরিক ও সিরিয়াস হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
দেশের বাইরে থেকে আওয়ামী লীগের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভারত সরকার এসব উসকানিতে অন্যতম সহযোগী হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। গত তিনটি ভুয়া ও ডামি নির্বাচনে ভারত সরকার ছিল আওয়ামী লীগের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তখন তারা আমাদের জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলেনি বরং বলেছে এটা নাকি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখন তারা বলছে বাংলাদেশে এবার তারা একটা ইনক্লুসিভ নির্বাচন চায়। তাদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও বলছেন- আওয়ামী লীগ অংশ না নিলে নাকি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।
মঞ্জু বলেন, আওয়ামী লীগ অবশ্যই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে, তবে তার আগে তারা যাদের নৃশংসভাবে খুন করেছে সেই হাজার হাজার সন্তানহারা মায়েদের কোলে তাদের সন্তানদের ফিরিয়ে দিতে হবে। যাদের পৈশাচিক নির্যাতন করে পঙ্গু করে ফেলা হয়েছে তাদের চোখ, হাত, পা ফেরত দিতে হবে। আমাদের লুট করা লাখ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনতে হবে।
তিনি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অধিকার নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনে গণভোট দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
মন্তব্য করুন