রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার নতুন চৌপথি থেকে তারাগঞ্জ হাটে প্রবেশের সড়কটি সামান্য বৃষ্টিতে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। বাজারের ভেতর দিয়ে যান চলাচলের প্রধান এ সড়কটি দীর্ঘদিন থেকেই বেহাল অবস্থা পড়ে আছে। এতে ভোগান্তিতে আছেন ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা। তাদের দাবি, অতি দ্রুত ব্যস্ততম রাস্তাটি পাকা করে দিলে জনভোগান্তি দূর হবে।
জানা গেছে, উপজেলার নতুন চৌপথি থেকে তারাগঞ্জ হাট হয়ে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ অভিমুখী এক কিলোমিটার সড়কটি দীর্ঘ ভোগান্তির পর গত বছর ৪০০ মিটার রাস্তার আরসিসি ঢালাই কাজ সম্পন্ন হলেও বাকি ৬০০ মিটারের কাজ না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই ভোগান্তি বেড়ে যায় মানুষের। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ও বসানো ইট ওঠে যাওয়ায় এ রাস্তায় যানবাহন এবং সাধারণ মানুষের চলাচলের কষ্ট হয়।
উপজেলার সর্বোচ্চ রাজস্ব আয়ের একমাত্র বড় বাজার তারাগঞ্জ হাট। তারাগঞ্জসহ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ ও সৈয়দপুর উপজেলার সিংহভাগ মানুষের ব্যবসায়ীক কর্মস্থল এ তারাগঞ্জ হাট। দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহর ও বন্দরে শাকসবজি, কাঁচামাল, গরু, ছাগল, চাল/ডাল ইত্যাদি আমদানি রপ্তানিজাত বিভিন্ন সামগ্রী পরিবহন ও স্থানান্তর হয় এ হাট দিয়ে। কিন্তু রাস্তা খারাপ হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় সবাইকে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাস্তাটিতে মাটি ও বৃষ্টির পানির সংমিশ্রণে রাস্তাটি কাদামাটিতে ভরে গেছে। গত দশ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে ভোগান্তি। দুই বছর আগে ইট বসালেও ব্যস্ততম সড়ক হওয়ায় পরিবহনের চাপে বেশিরভাগ জায়গায় ভেঙে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। রাস্তা ভাঙা হওয়ায় যান চলাচল থাকে না স্বাভাবিক, সৃষ্টি হয় যানজট, ফলে জরুরি সেবার পরিবহনসহ ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বৃষ্টির দিনে রাস্তাটি ব্যবহারের একেবারে অনুপযোগী হয়ে যায়। এ রাস্তাটি পাকাকরণ এখন সময়ের দাবি।
হাটের ব্যবসায়ীরা বলেন, উপজেলার এতো বড় একটি হাটের রাস্তার এমন নাজেহাল অবস্থা। বিভিন্ন পণ্য আনা নেওয়াতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হয়। দ্রুত রাস্তা পাকাকরণের মাধ্যমে ভোগান্তি থেকে মুক্তি চাই আমরা।
উপজেলার কুর্শা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আফজালুল হক বলেন, রাস্তাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। রাস্তাটি পাকাকরণ নির্মাণ খুবই জরুরি। আমি চাই কর্তৃপক্ষ সুনজর দিয়ে রাস্তাটির পাকার কাজ অতিদ্রুত ব্যবস্থা করলে জনভোগান্তি দূর হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুবেল রানা বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দাপ্তরিকভাবে সব রকম যোগাযোগ চেষ্টা করে যাচ্ছি, যতদ্রুত সম্ভব রাস্তাটির পাকাকরণ কাজের ব্যবস্থা করা যায়।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজেদুর রহমান কালবেলাকে বলেন, গত বছর আমরা এক কিলোমিটারের ওই রাস্তাটির ৪০০ মিটারের আরসিসি ঢালাই কাজ সম্পন্ন করেছি। এবার ১৯০ মিটার কাজ করার বরাদ্দ ব্যবস্থা চলছে। পর্যায়ক্রমে পুরো এক কিলোমিটার রাস্তার কাজ করা হবে।
তিনি বলেন, তবে ৩১০ মিটার করতে পারলে বাজার পর্যন্ত হয়ে যেতো। রাস্তার এই কাজগুলো (আরসিসি ঢালাই) ব্যয় বহুল হওয়ায় এ অঞ্চলের সবগুলো রাস্তার কাজ এক সঙ্গে করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে তারাগঞ্জ হাটের রাস্তাটির কাজ আমাদের কাছে অগ্রাধিকার মূল্যায়ণে আছে।
মন্তব্য করুন