ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিতরণ শেষে অবশিষ্ট মালামাল রাতে গোপনে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় বাসিন্দারা তা আটকে দেন।
বুধবার (২১ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার ভানোর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা ভ্যানগাড়ি থামিয়ে দেয় এবং ডিলারের সহকারী রাজুকে আটক করেন। পরে টিসিবির পণ্যসহ রাজুকে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে রাত ১০টা পর্যন্ত তাকে আটকে রাখা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা নবাব জানান, রাতে ১৫টি প্যাকেজ নিয়ে ভ্যানে করে রাজু বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে আমি দৌড়ে গিয়ে ভ্যানটি থামাই। পরে বাজারে থাকা আরও কয়েকজন লোক এসে সহযোগিতা করে। পণ্যগুলো আত্মসাতের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলেই আমাদের ধারণা।
ঘটনার সময় আটক হওয়া রাজু জানান, সাবডিলার একরামুল হকের নির্দেশে আমি পণ্যগুলো ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলাম। এসব পণ্য পরবর্তী মাসে সমন্বয়ের জন্য রাখা হচ্ছিল।
ভানোর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শওকত আলী বলেন, বিতরণ শেষে অবশিষ্ট ১৫টি প্যাকেজ কাউকে না জানিয়ে রাতে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন ডিলারের সহকারী। স্থানীয়রা আটকে দিয়েছে। আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছি। তিনিও ক্ষুব্ধ হয়েছেন এবং ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিসিবির ডিলার মেসার্স মাহিম এন্টারপ্রাইজের মালিক আব্দুল আওয়াল বলেন, পাঁচ দিন ধরে পণ্য বিতরণ চলছে। দায়িত্বে থাকা সাবডিলার একরামুলের বাবা অসুস্থ, তাই তিনি নিজে আসতে পারেননি। ঘটনা জানার পর আমি একরামুল ও ইউএনও অফিসে যোগাযোগ করেছি।
তবে উপজেলা প্রশাসন বা ইউপি চেয়ারম্যানকে না জানিয়ে কেন রাতে পণ্য সরানো হচ্ছিল, সে বিষয়ে কোনো সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি সাবডিলার একরামুল হক।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কুমার দেবনাথ বলেন, উদ্ধার হওয়া মালপত্র ইউপি চেয়ারম্যানের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিলার জানান, ভানোর ইউনিয়নে টিসিবির স্মার্ট কার্ডধারী সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৭৫৫ জন। এর মধ্যে ৭৪০ জনকে পণ্য বিতরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে এক বছর আগেও গভীর রাতে টিসিবির পণ্য আত্মসাতের চেষ্টার সময় একরামুল হককে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছিল।
এই ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে এবং অনেকেই পুনরায় স্বচ্ছ তদন্ত ও কঠোর ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন