হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পরিচয়, এরপর দুজনের সম্পর্ক গড়ালে হয় একে অপরের ছবি বিনিময়। আর সে ছবি অশ্লীলভাবে তৈরি করে ব্যবহার করা হয় টাকা হাতানোর ‘টোপ’ হিসেবে। চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার এলাকা থেকে শাফায়েত উল্লাহ নামের এক কলেজছাত্রকে গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্যের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
শাফায়েত উল্লাহ নগরীর দেওয়ানবাজার এলাকার এশিয়ান ফার্নিচার বিল্ডিংয়ের বাসিন্দা মো. শাহ আলমের ছেলে। আড়াই মাস আগে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ওই কলেজছাত্রীর সাথে তার পরিচয় হয়। পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ও প্রতারণার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় বৃহস্পতিবার (২২ মে) শাফায়েত উল্লাহকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
শুক্রবার (২৩ মে) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুল করিম।
ছবি আদান–প্রদানের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ জানিয়ে নগর পুলিশের উপকমিশনার আলমগীর হোসেন বলেন, আড়াই মাস আগে নগরীর একটি কলেজের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পরিচয় হয় শাফায়েত উল্লাহ নামের এক কলেজছাত্রের।
দুজনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠলে পরস্পরের ছবি বিনিময় করেন। পরে কলেজছাত্রীর ছবি সম্পাদনা করে অশ্লীলভাবে তৈরি করেন ওই ছাত্র। এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আদায় করা হয় ২১ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এরপরও থেমে থাকেননি শাফায়েত। আরও টাকা চাইলে বিষয়টি জানানো হয় পুলিশকে।
নগর–পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) আলমগীর হোসেন বলেন, অশ্লীল ছবি তৈরির পর প্রথমে কলেজছাত্রীর কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন শাফায়েত। তখন টাকা দিতে না পারায় চান স্বর্ণালংকার। বাধ্য হয়ে ওই কলেজছাত্রী মায়ের দুই ভরি ওজনের দুটি সোনার চুড়ি গত ৫ মার্চ নগরের দিদার মার্কেট এলাকায় শাফায়েতের হাতে তুলে দেন। কিছুদিন যেতে না যেতেই আবার টাকা চায়ে শাফায়েত। টাকা না থাকায় দফায় দফায় কানের দুল, নেকলেস, আংটিসহ মোট ২১ ভরি স্বর্ণালংকার শাফায়েতের হাতে তুলে দেন, যার মূল্য সাড়ে ৩১ লাখ টাকা।
তিনি বলেন, এতে ক্ষান্ত হননি শাফায়েত। আবারও ওই কলেজছাত্রীকে দুই লাখ টাকার জন্য চাপ দেয়। গত ১৫ এপ্রিল নগরের চেরাগী মোড় এলাকায় শাফায়েতের হাতে ৩০ হাজার টাকাসহ দফায় দফায় মোট ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা তুলে দেন। এরপর আরও টাকা চাইলে কলেজছাত্রী বাদী হয়ে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ও প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন, গ্রেপ্তার যুবককে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযোগ স্বীকার করেছে। তার কাছ থেকে আমরা ব্ল্যাকমেইলের কাজে ব্যবহার করা মোবাইল ফোনসহ ৫ লাখ টাকা ও ১৬ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন