সাতক্ষীরার পল্লীতে চিকিৎসার অবহেলার কারণে সদ্যজাত এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২৫ মে) রাতে কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের বন্ধন হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে সোমবার (২৬ মে) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভূক্তভোগী কৃষ্ণনগর গ্রামের মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ ।
এর আগে গত শনিবার (২৪ মে) বিকেলে প্রসব যন্ত্রণায় আক্রান্ত স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করেন মোস্তাকিম বিল্লাহ।
ভুক্তভোগী মোস্তাকিম জানান, ভর্তির সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রসূতির প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও সেবার নিশ্চয়তা দিলেও ভর্তি হওয়ার পর পুরো রাত কোনো চিকিৎসক বা নার্সের উপস্থিতি বা চিকিৎসা সহায়তা পাননি। বারবার অনুরোধ করলেও শুধুমাত্র একজন আয়া কয়েকবার এসে দেখে যান। প্রসব যন্ত্রণায় মনিরা বেগম ছটফট করলেও তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, রাত গভীর হলে স্বাভাবিক প্রসব সম্ভব নয় বুঝতে পেরে সিজারিয়ান অপারেশনের দাবি জানালে কর্তৃপক্ষ জানাই। হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক উপস্থিত নেই। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর রাত ৩টা ৩০ মিনিটে চিকিৎসক আসবেন বলে আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত কেউ আসেননি।
পরে ভোর ৪টার পর স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব করেন মনিরা বেগম। তবে তখন হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী, অক্সিজেন কিংবা চিকিৎসক না থাকায় নবজাতকটি জন্মের পরপরই মারা যায়। শিশুর মৃত্যুর পর অভিযোগ করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে এবং দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগে বাধ্য করে।
মোস্তাকিম বিল্লাহ অভিযোগ করেন, চিকিৎসক, নার্স ও জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম ছাড়া একটি প্রতিষ্ঠান ‘হাসপাতাল’ নামে চালু রেখে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলা হচ্ছে।
এসব বিষয়ে বন্ধন হাসপাতালের পরিচালক আমগীর হোসেন চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করে প্রসূতি স্বাভাবিকভাবে মৃত বাচ্চা প্রসব করেছে বলে জানান। তবে দায়িত্বরত চিকিৎসক কে ছিলেন? এমন প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুজা মণ্ডল বলেন, বন্ধন হাসপাতালের ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা গিয়েছে এমন অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, উপজেলার বিভিন্ন জায়গার নিবন্ধন ছাড়া ক্লিনিক, হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা ব্যবস্থা নিতে সিভিল সার্জনকে চিঠি দিয়েছি।
মন্তব্য করুন